বিজ্ঞান ডেস্ক: জন্মগতভাবেই শ্রবণপ্রতিবন্ধী অন্তত পাঁচ শিশুকে প্রথমবারের মতো কানে শোনার সুযোগ করে দিয়েছে অত্যাধুনিক জিন থেরাপি। বংশগত ব্যাধিতে আক্রান্তদের জীবন বদলে দেওয়ায় যুগান্তকারী এই চিকিৎসা পদ্ধতিকে ‘চিকিৎসার জাদুর কাঠি’ আখ্যা দেওয়া হয়েছে। বধিরদের জন্য আশার আলো হয়ে দেখা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন এই চিকিৎসা পদ্ধতি।
বিরল জেনেটিক মিউটেশনের ওপর আলোকপাত করে বিশ্বজুড়ে কয়েকটি চিকিৎসকদল এই পদ্ধতি প্রয়োগ করেছে।
জন্মগত বধিরতাসহ বিশ্বের মাত্র দুই কোটি ৬০ লাখ মানুষের ওপর বিরল এই জেনেটিক মিউটেশন প্রভাব ফেলছে। সম্প্রতি আলোচনায় আসা বেশ কয়েকটি সফলতার গল্পকে এরই মধ্যে সন্ধিক্ষণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ফিলাডেলফিয়ার এক শিশু হাসপাতালের রোগী ছিল জন্মগতভাবেই বধির ১১ বছর বয়সী শিশু আইসাম ড্যাম। গত সপ্তাহে সে সত্যিকার অর্থেই তার জীবনের প্রথম শব্দ শুনতে পেয়েছে। আইসামের এখনো মৃদু থেকে মাঝারি শ্রবণপ্রতিবন্ধকতা রয়েছে। তবে সে হয়তো কখনো কথা বলা শিখবে না। কারণ পাঁচ বছর বয়সের আশপাশেই কথা বলা শিখতে ভ‚মিকা রাখা মস্তিষ্কের প্রকোষ্ঠ বন্ধ হয়ে যায়।
চীনে ছয়টি শিশুর ওপর একই পদ্ধতিতে পরীক্ষা করা হয়। ওই পরীক্ষার ফলাফল দ্য ল্যানসেট জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। ২০২২ সাল থেকে শুরু হওয়া পরীক্ষার ফলাফল অনুযায়ী, পাঁচজন শিশু শোনার সক্ষমতা অর্জন করেছে। এটাই মানুষের ওপর করা প্রথম জিন থেরাপি পরীক্ষা।
যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস আই অ্যান্ড ইয়ার হাসপাতালের সঙ্গে যুক্ত ঝেং-ই চেন এএফপিকে বলেছেন, কয়েকটি শিশু এরই মধ্যে কথা বলতেও সক্ষম হয়েছে। তবে শুধু এক বছর বয়সী ছোট্ট একটি শিশু কখনোই মৌখিকভাবে যোগাযোগ করতে সক্ষম হবে না।
চেন আরো বলেন, চিকিৎসার পর একটি শিশুর মা তাকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, ‘আমি কে?’ তখন শিশুটি উত্তর দিয়েছিল, ‘মা।’ মুরগি কিভাবে শব্দ করে জানতে চাইলেও সঠিক জবাব দিয়েছিল শিশুটি। চেন বলেন, ‘সবাই আনন্দে কেঁদে ফেলেছিলেন। এটি সত্যিই দারুণ ব্যাপার।’ তিনি আরো বলেন, শিশুটি স্বাভাবিকভাবেই কথা বলা শিখে বেড়ে উঠবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সূত্র : এএফপি, দ্য গার্ডিয়ান