রেলের ইতিহাসে প্রথম নারী অ্যাটেনডেন্ট

রেলের ইতিহাসে প্রথম নারী অ্যাটেনডেন্ট

চট্টগ্রাম সংবাদদাতা: বিমানে ওঠার সময় বিমানবালাদের সম্ভাষণ সবাইকে মুগ্ধ করে। তাদের আতিথেয়তায় বিমোহিত হন যাত্রীরা। ফলে বিমান সার্ভিসে সেবা প্রদানে বিমানবালারা (এয়ার হোস্টেস) বেশ সমাদৃত। বিমানবালা বিমানের অন্যতম প্রয়োজনীয় কর্মী বাহিনী। কিন্তু দীর্ঘ সময় ধরে চলা ট্রেন সার্ভিসে এ পদ্ধতিটি দেশে নেই। তবে দেশের যোগাযোগব্যবস্থায় উন্নয়ন-সমৃদ্ধি ও উৎকর্ষতার হাত ধরে ট্রেন সার্ভিসেও যোগ হয়েছে নারী অ্যাটেনডেন্ট। যোগাযোগে ইতিহাস সৃষ্টি করা ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেল পথে প্রথমবারের মতো বিমানবালার আদলে দেওয়া হয়েছে নারী অ্যাটেনডেন্ট। গত ১লা ডিসেম্বর থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার চালু হওয়া রেল পথে নারী অ্যাটেনডেন্টরা যাত্রীদের ফুল দিয়ে বরণ করেন। নতুন এ আয়োজনে উচ্ছ¡সিত যাত্রীরাও।

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল সূত্রে জানা যায়, এদিন প্রথমবারের মতো ২০টি কোচ নিয়ে কক্সবাজার থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেয় কক্সবাজার এক্সপ্রেস। প্রথম দিনে যাত্রী ছিল ১ হাজার ২০ জন। যাত্রীদের প্রয়োজনীয় সেবায় নিয়োজিত ছিলেন ২৪ জন অ্যাটেনডেন্ট (ট্রেন হোস্টেস)। এর মধ্যে রেলের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো দায়িত্ব পালন করছেন নয়জন নারী অ্যাটেনডেন্ট। ইতোমধ্যে আউটসোর্সিং পদ্ধতিতে ২৬ জন নারী অ্যাটেনডেন্ট নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া, আগামী ১ জানুয়ারি থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথে চালু হতে যাওয়া নতুন সুবর্ণ এক্সপ্রেসেও আসা-যাওয়া মিলে ২০ জন নারী অ্যাটেনডেন্ট নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আউটসোর্সিং পদ্ধতিতে অস্থায়ী ভিত্তিতে তাদের নিয়োগ দেওয়া হয়।

বাংলাদেশ রেলওয়ে ক্যাটারিং-অনবোর্ড সার্ভিস প্রোভাইডার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. শাহ্ আলম বলেন, প্রথমবারের মতো কক্সবাজার থেকে ঢাকা রেল চলাচল করে দেশে একটি ইতিহাস তৈরি হয়েছে। এই ইতিহাসে আরেকটি সংযোজন হলো প্রথমবারের মতো বিমানবালার আদলে ৯ নারী অ্যাটেনডেন্ট দায়িত্ব পালন করা। পরীক্ষামূলক এ দুটি সার্ভিসে নতুন করে নারী অ্যাটেনডেন্ট কাজ করবেন। সাধারণ যাত্রীরা এতে সন্তুষ্ট হলে আগামীতে এ সার্ভিস আরও সমৃদ্ধ করা হবে। এর মাধ্যমে দেশে নারীদের নতুন করে একটি কর্মসংস্থানও তৈরি হবে।

পূর্বাঞ্চলের ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজার (ডিআরএম) সাইফুল ইসলাম বলেন, ভারত, চীন ও জাপানসহ বিভিন্ন দেশের ট্রেনের অধিকাংশ অ্যাটেনডেন্টই নারী। দেশে এখন সব ক্ষেত্রেই পরিবর্তনের ছোঁয়া লেগেছে। এরই ধারাবাহিকতায় ট্রেনে নারী অ্যাটেনডেন্ট রাখা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে এসি কোচগুলোতেই তারা দায়িত্ব পালন করবেন। পর্যায়ক্রমে এটি আরও বিস্তৃত করা হবে।

প্রায় ১৮ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয় দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন। গত ১১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দোহাজারী-কক্সবাজার পর্যন্ত রেললাইন উদ্বোধন করেন। পয়লা ডিসেম্বর থেকে প্রথম বাণিজ্যিকভাবে কক্সবাজার থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেল চলাচল শুরু হয়। প্রথমবারের মতো এই ট্রেনেই নারী অ্যাটেনডেন্ট দায়িত্ব পালন করেন। এই রুটে প্রথম রেল চলাচল করে ইতিহাস সৃষ্টি করল। একই সঙ্গে প্রথমবারের মতো ঢাকা-কক্সবাজার রেলে নারী অ্যাটেনডেন্ট দায়িত্ব পালন করে ইতিহাস সৃষ্টি করল।

editor

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *