বিশ্ব আশেকে রাসুল (সা.) সম্মেলন অনুষ্ঠিত ত্রিশালে লাখো মানুষের ঢল

বিশ্ব আশেকে রাসুল (সা.) সম্মেলন অনুষ্ঠিত ত্রিশালে লাখো মানুষের ঢল

বিশেষ প্রতিনিধি: বিশ্বের ৪০টি দেশের লক্ষাধিক আশেকে রাসুলের উপস্থিতিতে বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনা ও ধর্মীয় ভাবগম্ভীর পরিবেশের মধ্য দিয়ে ময়মনসিংহের ত্রিশালে অবস্থিত বাবে বরকত দেওয়ানবাগ শরীফে অনুষ্ঠিত হলো বিশ্ব আশেকে রাসুল (সা.) সম্মেলন। একবিংশ শতাব্দীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ দার্শনিক ও সমাজ সংস্কারক, মোহাম্মদী ইসলামের পুনর্জীবনদানকারী, বীর মুক্তিযোদ্ধা হযরত সৈয়দ মাহ্বুব-এ-খোদা দেওয়ানবাগী (রহ.) হুজুরের ৭৪তম শুভ জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে গক ২৩শে ফেব্রæয়ারি, শুμবার এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

মোহাম্মদী ইসলামের নেতৃত্ব প্রদানকারী মহামানব ইমাম প্রফেসর ড. কুদরত এ খোদা (মাদ্দাজিল্লুহুল আলী) হুজুরের আহŸানে বাংলাদেশের ৬৪ জেলার পাশাপাশি সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইরাক, লেবানন, কুয়েত, হাঙ্গেরি, জার্মানি, স্পেন, সাইপ্রাস, ফিনল্যান্ড, দক্ষিণ কোরিয়া, ফ্রান্স, হংকং, রোমানিয়া, ক্রোয়েশিয়া, ফিলিপাইন, ইটালি, পর্তুগাল, সুইডেন, জাপান, আয়ারল্যান্ড, ডেনমার্ক, ওমান, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, বাহারাইন, মালদ্বীপ, কাতার, দক্ষিণ আফ্রিকা, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়াসহ পৃথিবীর ৪০টি দেশ থেকে আশেকে রাসুল প্রতিনিধিগণ এই সম্মেলনে যোগদান করেন।
বাদ জুমা উপস্থিত আশেকে রাসুলদের উদ্দেশে বাণী মোবারক প্রদান করেন প্রফেসর ড. কুদরত এ খোদা হুজুর। সমাজে শান্তি ফিরিয়ে আনতে এবং আল্লাহ ও হযরত রাসুল (সা.)-এর সন্তুষ্টি অর্জনের মাধ্যমে পরকালীন মুক্তি লাভের জন্য তিনি সবাইকে সৎ-চরিত্রবান হওয়ার নির্দেশ দেন।

ড. কুদরত এ খোদা হুজুর বলেন, “জগতের মানুষ যাতে সৎ-চরিত্রবান হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন ও হযরত রাসুল (সা.)-এর সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারে, আমার মোর্শেদ হযরত সৈয়দ মাহবুব-এ-খোদা দেওয়ানবাগী (রহ.) তাঁর সারাটি জীবন সেই চেষ্টা করে গেছেন। এই কাজ করতে গিয়ে তিনি সারাজীবন অসহনীয় অত্যাচার, নির্যাতন, মিথ্যাচার ও নিন্দাচার হাসিমুখে সহ্য করেছেন। আল্লাহর মহান বন্ধু শাহ দেওয়ানবাগীর কার্যμমের ধারাবাহিকতায় আমি বর্তমানে আল্লাহ ও হযরত রাসুল (সা.)-এর নির্দেশনার আলোকে মানুষকে হেদায়াতের রাস্তায় পরিচালিত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।”
আলোচনা শেষে বিশ্ববাসীর শান্তি, মুক্তি ও ক্ষমা কামনায় আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করেন ইমাম প্রফেসর ড. কুদরত এ খোদা (মা. আ.) হুজুর। এসময় উপস্থিত আশেকে রাসুলগণ প্রভুর দরবারে কান্নায় ভেঙে পড়লে পুরো সম্মেলন চত্বরে আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়।

সম্মেলনের কার্যক্রম শুরু হয় রাত ৩টা থেকে এবং শেষ হয় বিকেল ৩.৩০ মিনিটে। রাত ৩টায় শুরু হয় রহমতের ফায়েজের মোরাকাবা, মোহাম্মদী ইসলামের মিলাদ শরীফ, ফজরের নামাজ, ফাতেহা শরীফ, মুনাজাত, কুয়াতে এলাহিয়ার ফায়েজের মোরাকাবা ও খতম শরীফ পাঠ করা হয়। উল্লেখ্য লক্ষ লক্ষ আশেকে রাসুলের অংশগ্রহণে রহমতের ফায়েজের মোরাকাবার সময় গোটা সম্মেলন চত্বর অবারিত রহমতে পরিপূর্ণ হয়ে উঠে। এরপর দেড় ঘণ্টা বিরতি দিয়ে পবিত্র কুরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে সকাল ৭টায় আলোচনা পর্ব শুরু হয়। পবিত্র কুরআন থেকে তেলাওয়াত করেন হযরত তরিকুল ইসলাম তারিফ। মোহাম্মদী ইসলামের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন হযরত বোরহান উদ্দীন জেহাদী, হযরত হাফেজ মঈনুল ইসলাম, হযরত ইউসুফ আনসারী, হযরত ডা. মুফতি রফিকুল ইসলাম, হযরত নেছার আহমদ সিদ্দিকী, হযরত রুহুল আমিন, হযরত গিয়াস উদ্দিন জালালী, হযরত ফখরুদ্দিন রাজী, হযরত আমিরুল ইসলাম, হযরত মাহবুবুর রহমান আজাদী, হযরত আব্দুল হাকিম জেহাদী, বীর মুক্তিযোদ্ধা খোরশেদ আলম, ড. সৈয়দ মেহেদী হাসান, হযরত লুৎফুর রহমান ফরিদপুরী, হযরত রুহুল আমিন কুদ্দুসী, ড. মুহাম্মদ নাছির উদ্দীন সোহেল, হযরত তরিকুল ইসলাম তারিফ, সাবেক যুগ্ম সচিব নুরুল ইসলাম, সাবেক অতিরিক্ত সচিব, ড. পিয়ার মোহাম্মদ, হযরত মরহুম লোকমান হোসেন ভৈরবী, হযরত সাব্বির আহমদ ওসমানী ও অ্যাডভোকেট খসরুজ্জামান। এছাড়া বিদেশী অতিথিদের মধ্য থেকে আলোচনা করেন ওমানের প্রতিনিধি কাজী আবু আবদুল্লাহ, আয়ারল্যান্ডের প্রতিনিধি রফিক উদ্দীন, সৌদি আরবের প্রতিনিধি শাহ জালাল বেপারী, যুক্তরাজ্যের প্রতিনিধি জারিফ উদ্দীন, সুইডেনের প্রতিনিধি মাহ্বুব জুবেরী সুজা ও মালয়োশিয়ার প্রতিনিধি আজলিজাম বিন কামসেরি। দেওয়ানবাগী দল শিল্প গোষ্ঠীর পক্ষ থেকে নাতে রাসুল পরিবেশন করেন মাসুদ রানা, শানে মোর্শেদ পরিবেশন করেন ফেরদৌস আলম আদনান, শানে কুদরত এ খোদা পরিবেশন করেন ওয়ালী উল্লাহ্ মাস্টার। সম্মেলনে মিলাদ শরীফ পাঠ করেন যথাক্রমে হযরত তরিকুল ইসলাম তারিফ ও হযরত এমরান হোসেন মাজহারী, যিনি মোরাকাবা ও জুমার নামাজ পরিচালনা করেন।

editor

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *