বিকাশে রেমিট্যান্স এসেছে ৪ হাজার কোটি টাকা

বিকাশে রেমিট্যান্স এসেছে ৪ হাজার কোটি টাকা

বাণিজ্য ডেস্ক: বিকাশ এখন শুধু দেশেই সীমাবদ্ধ নয়, বিদেশে বসেও বিকাশ অ্যাপ ব্যবহার করে হিসাব খোলা যাচ্ছে। রেমিট্যান্স পাঠানো সহজ করতেই এই উদ্যোগ নিয়েছে মোবাইল আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানটি। ৯০টি দেশ থেকে ৮০টির বেশি মানি ট্রান্সফার প্রতিষ্ঠান হয়ে দেশের ১৭টি বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে নিষ্পত্তি হয় এই রেমিট্যান্স। ২০২২ সালে প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকার সমপরিমাণ রেমিট্যান্স আসে বিকাশে। ২০২৩-এর প্রথম ছয় মাসেই এই রেমিট্যান্স আসার পরিমাণ ছাড়িয়েছে তিন হাজার কোটি টাকা।


মোবাইল ফোনের মাধ্যমে আর্থিকসেবা পৌঁছে দিতে ২০১১ সালের ২১ জুলাই বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদিত এমএফএস হিসেবে বিকাশ যাত্রা শুরু করে। এর প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কামাল কাদীর। নিরাপদে ও কম সময়ে নতুন নতুন ডিজিটাল আর্থিকসেবা দিয়ে এক যুগে মানুষের দৈনন্দিন লেনদেনে স্বাধীনতা ও সক্ষমতা এনে দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।


এক যুগ আগে কাউকে টাকা পাঠানো বা পরিষেবার বিল পরিশোধের জন্য লাইনে দাঁড়ানোর বিকল্প ছিল না। তখন কি কেউ ভেবেছিল, ঘরে বসে সুবিধাজনক সময়ে এসব আর্থিকসেবা পাওয়া যাবে! আবার ব্যাংকে টাকা জমানো বা ব্যাংক থেকে তাৎক্ষণিক ছোট অঙ্কের ঋণ মিলবে মোবাইল ফোনেই। এখন লাইনের পরিবর্তে নিজের সুবিধাজনক সময়ে ঘরে বসেই মিলছে সব ধরনের ডিজিটাল আর্থিকসেবা। এক যুগ আগে চালু হওয়া মোবাইল আর্থিক সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান (এমএফএস) বিকাশ হয়ে উঠেছে এসব সেবা গ্রহণের প্রধান মাধ্যম। ফলে ছোট আর্থিক লেনদেন ও সেবা নিতে ভোগান্তি এখন ইতিহাস।


বিকাশ এখন শুধু টাকা স্থানান্তর বা বিল পরিশোধের মাধ্যম নয়। কেনাকাটা, সঞ্চয়, বিদেশ থেকে প্রবাস আয় পাঠানোসহ আরো অসংখ্য সেবা যুক্ত হয়ে পূর্ণাঙ্গ আর্থিকসেবার মাধ্যম হয়ে উঠেছে বিকাশ। বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে মোবাইল আর্থিকসেবা সহজলভ্য করতে এক যুগ ধরে ৩ লাখ ৩০ হাজার এজেন্ট নিয়ে বিকাশ তৈরি করেছে সবচেয়ে শক্তিশালী এজেন্ট নেটওয়ার্ক। এমএফএস সেবা দিয়ে দেশজুড়ে ছড়িয়ে থাকা এই এজেন্টরা তাঁদের এলাকার নির্ভরযোগ্য মানুষ হয়ে উঠেছেন।


বিকাশের এক যুগের এই পথচলা নিয়ে এর প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কামাল কাদীর বলেন, ‘১২ বছরের পথচলায় ৭ কোটি ভেরিফায়েড কাস্টমারের যে বিশাল পরিবার সৃষ্টি হয়েছে, এরাই নির্ভরযোগ্য সহযোগী হিসেবে বিকাশের ওপরে তাদের আস্থা রেখে সেবাটি ব্যবহার করছেন। এই অর্জনের পেছনে রয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিগত সহায়তা ও সরকারের দিকনির্দেশনা, যার পরিপ্রেক্ষিতে এই অন্তর্ভুক্তিমূলক কাজটা সম্পন্ন হয়েছে। সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের একটা যথার্থ সহযোগী হিসেবে বিকাশ কাজটা করতে পেরে পুরো দেশের প্রতি কৃতজ্ঞ। এই সাফল্য আজকে শুধু বিকাশের নয়, এটা পুরো বাংলাদেশের, প্রত্যেক বাংলাদেশি এই অর্জনের পেছনে ভূমিকা রেখেছেন।’


অবসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষক মোজাম্মেল হোসেন ২০১৪ সাল থেকে বিকাশের সেবা ব্যবহার করছেন। তিনি বলেন, ‘আগে ছেলেকে টাকা পাঠানোর জন্য ব্যাংকে বা ডাক অফিসে গিয়ে লাইন দিতে হতো। পানি, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের বিল দিতেও আলাদা আলাদা লাইন দেওয়া লাগত। অ্যাপ দিয়েই ব্যাংক থেকে বিকাশে টাকা নিয়ে আসি। ঘরে বসেই সব বিল দিয়ে দিই। বিকাশ দিয়ে নিজের ও স্ত্রীর মোবাইল রিচার্জ করি। শেষ বয়সে এসে জীবনটা সহজ করে দিয়েছে বিকাশ।’


বিকাশের গ্রাহকদের মধ্যে ৪০ শতাংশের বেশি নারী। বিকাশের নেটওয়ার্কে যুক্ত হয়েছে ৪৪টি বাণিজ্যিক ব্যাংক। ফলে বিকাশ থেকে ব্যাংক বা ব্যাংক থেকে বিকাশ লেনদেন এখন গ্রাহকের ব্যাংকিং অভিজ্ঞতা আমূল বদলে দিয়েছে। প্রায় এক কোটি উপকারভোগীর কাছে ভাতা ও প্রণোদনা পৌঁছে দিয়েছে বিকাশ।

editor

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *