বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি কমেছে ১৬ শতাংশ

বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি কমেছে ১৬ শতাংশ

বাণিজ্য ডেস্ক: গত তিন প্রান্তিকে চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি কমেছে ১৬ শতাংশ। চীন বাংলাদেশের বৈদেশিক বিনিয়োগ (এফডিআই) এর অন্যতম উৎস। বর্তমানে বাংলাদেশে চীনের বিনিয়োগ ৩১৭ কোটি ডলার। বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত ‘চায়না-বাংলাদেশ বিজনেস এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড-২০২৩’ অনুষ্ঠানে এ তথ্য তুলে ধরেন ঢাকায় নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন।

বাংলাদেশ-চায়না চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (বিসিসিসিআই) ও চাইনিজ এন্টারপ্রাইজেস অ্যাসোসিযেশন অব বাংলাদেশ (সিইএবি) যৌথভাবে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)-এর নির্বাহী চেয়ারম্যান লোকমান হোসেন মিয়া। গেস্ট অব অনার হিসেবে বক্তব্য রাখেন চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন।
চীনা রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, দুই দেশ একসঙ্গে সফলভাবে মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে চীনের সহায়তাপুষ্ট প্রকল্প বড় ভূমিকা রাখছে। চীন বাংলাদেশের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য বন্ধু ও বিশ্বস্ত উন্নয়ন অংশীদার। চীনা কোম্পানিগুলোও বাংলাদেশের স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সমন্বিতভাবে এদেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে। গত ১৩ বছর ধরে চীন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদার। তিনি আরও বলেন, জোহানেসবার্গে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মধ্যকার মিটিং দুই দেশের রাজনৈতিক সম্পর্ককে উচ্চতর পর্যায়ে উন্নীত করেছে। এই দ্বিপাক্ষিক শক্তিশালী রাজনৈতিক সম্পর্ক ভবিষ্যতে দ্বিপাক্ষিক উন্নয়নের পথনির্দেশক হিসাবে কাজ করবে।

অনুষ্ঠানে বিসিসিসিআইর সাধারণ সম্পাদক আল মামুন মৃধা বলেন, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির মাধ্যমে বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক জোরদারে শক্তিশালী ভূমিকা রাখছে। অর্থনৈতিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে পারস্পরিক আস্থা ও বিশ্বাসের ভিত্তিতেই বাংলাদেশ-চীন বাণিজ্যের পরিমাণ উচ্চস্তরে উন্নীত হয়েছে। চাইনিজ কাস্টমসের তথ্য অনুযায়ী ২০২২-২৩ অর্থবছরে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ ২৮ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়াতে বিসিসিসিআই নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধিত এটি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যিক চেম্বার। ৭০০ এরও বেশি এন্টারপ্রাইজ এই চেম্বারের সদস্য, যার মধ্যে ৫০০-এর বেশি চীনা এন্টারপ্রাইজ রয়েছে।

সিইএবি’র প্রেসিডেন্ট কে চিয়াংলিয়াং বলেন, বাংলাদেশের সবচেয়ে বিশ্বস্ত উন্নয়ন অংশীদার হতে পেরে চীনা বিনিয়োগকারীরা গর্বিত। আমাদের সদস্য কোম্পানিগুলো বাংলাদেশে প্রত্যক্ষভাবে ৫ লাখেরও বেশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে। বাংলাদেশের প্রত্যেকটি অঞ্চলে ব্যবসার পাশাপাশি সামাজিক দায়বদ্ধতার ক্ষেত্রেও চীনা কোম্পানিগুলো সমানভাবে গুরুত্ব দিচ্ছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ-চীনের বিকাশমান অর্থনৈতিক সম্পর্ক পারস্পরিক স্বার্থ ও সমৃদ্ধির শক্তিশালী ভিত তৈরি করেছে।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত, সড়ক ও সেতু, রেলওয়ে ও সিভিল এভিয়েশন, মেরিন অ্যান্ড হারবার, আইসিটি, টেক্সটাইল অ্যান্ড গার্মেন্ট সেক্টর, ট্রেড অ্যান্ড সার্ভিস সেক্টর, নারী উদ্যোক্তা, এসএমই, করপোরেট সোশ্যাল রেসপনসিবিলিটি এবং দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে তাৎপর্যপূর্ণ অবদান ক্যাটাগরিতে এ বছর মোট ২৭টি অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ১৫টি বাংলাদেশি কোম্পানি ও ১২টি চাইনিজ কোম্পানি অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে।

অনুষ্ঠানে দ্বিপাক্ষিক ব্যবসা সম্প্রসারণে অবদান রাখায় মৃধা বিজনেস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বিসিসিসিআইর সাধারণ সম্পাদক আল মামুন মৃধা এবং চীনা কোম্পানি নিউ এরা ফ্যাশনস এমএফআরএস (বিডি) লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাং উয়েনসেং পুরস্কার পেয়েছেন।

editor

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *