বিশ্ব জুড়ে বেড়েছে আলঝেইমারস রোগের ভয়াবহতা

বিশ্ব জুড়ে বেড়েছে আলঝেইমারস রোগের ভয়াবহতা

বিজ্ঞান ডেস্ক: ভুলে যাওয়া এক ধরনের রোগ। আর এই ভুলে যাওয়া রোগের নাম ‘আলঝেইমারস’। সহজ করে বলতে গেলে-এক ধরনের ডিমেনশিয়া হচ্ছে এই আলঝেইমারস রোগ। এটি মস্তিষ্কের এক ধরনের রোগ, যার ফলে রোগী কিছু মনে রাখতে পারেন না। বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বেই আলঝেইমারস রোগের ভয়াবহতা বাড়ছে। এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি অনেক কিছু ভুলে যায়। এটি একটি নিউরোডিজেনেরেটিভ রোগ যা ধীরে ধীরে শুরু হয় এবং পরে ভয়াবহ আকার ধারণ করে। ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ কেসেই এটা ডিমেনশিয়ার মূল কারণ হয়ে দাঁড়ায়। সচেতনতা বাড়াতে বিশ্ব আলঝেইমারস দিবস পালন করা হয়। যাতে সাধারণ মানুষ এই রোগের বিষয়ে সচেতন হতে পারে। গত ২১ সেপ্টেম্বর বিশ্ব জুড়ে পালিত হয় আলঝেইমারস দিবস।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যমতে, বাংলাদেশে ৬৫ বছরের বেশি বয়সী ০ দশমিক ১ শতাংশ মানুষ এই রোগে আক্রান্ত। ওয়ার্ল্ড আলঝেইমারস অ্যাসোসিয়েশন বলছে, বিশ্বে ৫০ মিলিয়নের বেশি মানুষ আলঝেইমারস রোগে আক্রান্ত। ২০৫০ সাল নাগাদ এটি ১৫ কোটি ছাড়াবে। এছাড়া প্রতি সেকেন্ডে নতুন করে ৬৮ জন এবং ৬৫ বছরের বেশি বয়সী প্রতি ৯ জনে এক জন করে এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন।
দিবসের ইতিহাস: ১৯০১ সালে প্রথম বার এক জন জার্মান মনোবিদ আলয়েজ আলঝেইমার এই রোগটিকে চিহ্নিত করেন, তখন থেকেই এই রোগটিকে আলঝেইমার্স রোগ নামে ডাকা হয়। ১৯৯৪ সালের ২১ সেপ্টেম্বর ইংল্যান্ডের এডিনবরা একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত হয়, ২১ সেপ্টেম্বর হবে বিশ্ব আলঝেইমার দিবস। সেই থেকে প্রতি বছর বিশ্বের বিভিন্ন দেশে চলছে এই বিশেষ দিবস পালন। অনেকেই রোগটি আমলে নেন না। ফলে ধীরে ধীরে জটিলতা বাড়ে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়া উচিত। লক্ষণ দেখা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ডাক্তারের শরণাপন্ন নেওয়া জরুরি। অনেকেই বাড়ির ঠিকানা ভুলে যান, ফলে ঐ ব্যক্তি হারিয়ে যান। অনেক বৃদ্ধকে অভিযোগ করতে শোনা যায়, ‘তাকে খেতে দেওয়া হয়নি’-আসলে তিনি খাবার বিষয়টির মতো আরো অনেক বিষয় ভুলে যান। এই ভুলে যাওয়া বা স্মৃতিভ্রষ্ট রোগটিকে বলে ডিমেনশিয়া। আর ডিমেনশিয়াই আলঝেইমারের কারণ।
আলঝেইমার সোসাইটি অব বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা এবং সেক্রেটারি জেনারেল মো. আজিজুল হক বলেন, আমাদের দেশে ডিমেনশিয়া সচেতনতা এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। আত্মীয়স্বজন এবং বন্ধুবান্ধব প্রায়ই উপেক্ষা করেন এবং ভুলক্রমে এটাকে বার্ধক্যজনিত অথবা বয়োবৃদ্ধির একটি স্বাভাবিক অংশ হিসেবে উল্লেখ করতে চান। ডিমেনশিয়া আক্রান্তরা পাগল বা মানসিক রোগী নয়। ডিমেনশিয়া বয়োবৃদ্ধির স্বাভাবিক কোনো অংশ নয়, ডিমেনশিয়া মস্তিষ্কের অসুখ।

editor

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *