সচেতনতায় ডায়াবেটিস বহুলাংশ প্রতিরোধযোগ্য

সচেতনতায় ডায়াবেটিস বহুলাংশ প্রতিরোধযোগ্য

বিজ্ঞান ডেস্ক: বিশ্বে টাইপ-২ ডায়াবেটিস মহামারি আকার ধারণ করেছে। আক্রান্তদের অর্ধেকই জানেন না যে, তারা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। অথচ জীবনযাপনের পরিবর্তনের মাধ্যমে নীরব ঘাতক এই ডায়াবেটিস বহুলাংশে অর্থাৎ ৭০ শতাংশ প্রতিরোধ করা সম্ভব।
গত সোমবার দুপুরে রাজধানীর শাহবাগ ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতালের অডিটরিয়ামে আয়োজিত বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবসের সংবাদ সম্মেলনে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা এসব তথ্য জানান। বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতি এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।
সংবাদ সম্মেলনে সমিতির সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক এ কে আজাদ খান বলেন, বর্তমানে বিশ্বব্যাপী ডায়াবেটিসে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ৫৪ কোটি। ডায়াবেটিস যেহেতু বহুলাংশে অর্থাৎ ৭০ শতাংশ প্রতিরোধ যোগ্য। ফলে এখনোই যদি এ রোগ প্রতিরোধ করা না হয়, তাহলে এই সংখ্যা ২০৪৫ সাল নাগাদ প্রায় ৭৮ কোটিতে পৌঁছানোর আশঙ্কা রয়েছে।
আইডিএফ ডায়াবেটিস এটলাস-ডায়াবেটিসের বৈশ্বিক প্রভাব সম্পর্কে সর্বশেষ যে পরিসংখ্যান দিয়েছে, তাতে দেখা গেছে ২০২১ সালে ৫৩.৭ কোটি মানুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ছিলেন। বাংলাদেশে বর্তমানে ১ কোটি ৩০ লাখেরও বেশি মানুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত বলে ধারণা করা হয়। যাদের প্রায় অর্ধেক নারী। তাছাড়া ডায়াবেটিস আছে, এমন অর্ধেকের বেশি মানুষ জানেই না যে তাদের ডায়াবেটিস আছে। এছাড়া বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে ১০০ জনের মধ্যে ২৬ জন নারীই গর্ভকালীন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হন, যাদের ৬৫ শতাংশই পরবর্তীতে টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হন।
ফাস্টফুড ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে উল্লেখ করে এ কে আজাদ খান বলেন, ফাস্টফুডের লোভনীয় বিজ্ঞাপন দেওয়া উচিত না। উন্নত দেশে স্কুল-কলেজের আশপাশে বা বিজ্ঞাপনে ফাস্টফুডের বিজ্ঞাপন দেওয়া নিষেধ। সেখানে বাংলাদেশে স্কুল-কলেজ থেকে শুরু করে সব জায়গায় ফাস্টফুড থাকে। এছাড়া প্রত্যেকটি খাবারের গায়ে উপাদান সম্পর্কে লেখা থাকতে হবে। এতে মানুষ সচেতন থাকবে, তার জন্য কোনটা ক্ষতিকর। তিনি বলেন, গ্রামের চেয়ে শহরে ডায়াবেটিস বেশি। কিন্তু প্রি-ডায়াবেটিস গ্রামে বেশি। তাদের যদি শহরে আনা হয়, আর আরামে থাকে তাহলেই তাদের ডায়াবেটিস হবে। ৪০ বছর বয়স থেকে ডায়াবেটিস চেকআপ করা উচিত। আর যাদের ঝুঁকি বেশি তাদের ৩০ বছর থেকে চেকআপ করা প্রয়োজন।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন সমিতির মহাসচিব মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন, অধ্যাপক ডা. এম এ রশীদ, অধ্যাপক ডা. অরুপ রতন চৌধুরী, অধ্যাপক ডা. ফারুক পাঠান।
১৪ নভেম্বর ‘বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস’। প্রতি বছর বাংলাদেশসহ প্রায় ১৭০টি দেশে এ দিবসটি পালিত হয়। বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে ডায়াবেটিস সম্পর্কে গণসচেতনতা সৃষ্টিই এই দিবসের মূল লক্ষ্য। এ বছর দিবসের প্রতিপাদ্য নির্ধারিত হয়েছে-ডায়াবেটিস নো ইউর রিক্স, নো ইউর রেসপন্স। বাংলায় করা হয়েছে-‘ডায়াবেটিসের ঝুঁকি জানুন, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিন’। ‘বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস’ উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতি নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। সমিতির অন্যান্য অঙ্গপ্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন জেলায় অবস্থিত অধিভুক্ত সমিতিগুলোও এ উপলক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়েছে।

editor

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *