মানবতার উন্নয়নে জালালুদ্দিন রুমির চেতনা

মানবতার উন্নয়নে জালালুদ্দিন রুমির চেতনা

ড. মো. শফিউল্লাহ: আধ্যাত্মবাদের জগতে মাওলানা রুমি এক অনন্য প্রতিভা। রুমির কবিতার সিংহভাগ জুড়ে রয়েছে মানবতার উন্নয়নের চেতনা সম্বলিত বক্তব্য। বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়তার মূলে রয়েছে তাঁর অমূল্য রত্নভাণ্ডার ‘মসনভি’ ও ‘দিওয়ানে শামস্ তাবরিজি’ কাব্যগ্রন্থ। আধ্যাত্মিক সাধনার রীতি-নীতি ও সুফিবাদি দর্শন তাঁর কবিতার প্রধান উপজীব্য। এগুলো বিভিন্ন উপমা-উৎপ্রেক্ষা, কাহিনী, উপকথা ও রূপকথায় বিধৃত হয়েছে। সহজ ও সাবলীল ভাষায় তা প্রাণময় হয়ে উঠেছে। মানুষ হিসেবে নিজেদের অধিকার ও মর্যাদা নিয়ে বেঁচে থাকা ও বিকাশ সাধনের প্রক্রিয়াই মানবাধিকার। মানুষকে ভালোবাসা, মানুষের কল্যাণ সাধন এবং সম্মান-মর্যাদার আসনে সমাসীন করার অনুভূতি অনুরণিত হয় রুমির কবিতার পাতায় পাতায়। মানুষে মানুষে প্রেম-প্রীতি, স্নেহ-ভালোবাসা, সহযোগিতা-সহানুভূতি, সৌহার্দ-সম্প্রীতি তৈরির মাধ্যমেই উন্নত সমাজ গড়ে ওঠে। মানবতাবোধ পরিপূর্ণতা লাভ করে থাকে। আর তা যখন জীবনের প্রতিটি মুহূর্তের চিন্তা-চেতনায়, আচার-আচরণে, প্রেরণা ও কর্মে সুষ্ঠুভাবে কার্যকর হয়, তখনই মানবতাবোধ উৎসারিত হয় হৃদয়জুড়ে। এ পৃথিবীতে যখন মানুষ কেবল মানুষকে দাবিয়ে রাখতে চায়, কোণঠাসা করতে চায় ও নির্যাতন করতে চায়- সবল দুর্বলকে, ক্ষমতাবান ক্ষমতাহীনকে. ধনী দরিদ্রকে, প্রভাবশালী সাধারণ মানুষকে, রাজা প্রজাকে তখন ক্রমান্বয়ে জ্বলে ওঠে বিশ্বজুড়ে অশান্তির দাবানল। আর এ অশান্তির দাবানলে যখন সারা বিশ্ব অস্থির ও দিশেহারা হয়ে পড়ে, মানবতা তখন ভূলুন্ঠিত হয়, একমাত্র মানবতাবোধ ও আধ্যাত্মিক চেতনাই দিতে পারে বিশ্বমানবতাকে শান্তি ও মুক্তির দিশা। তাই মাওলানা রুমি ফারসি কবিতার মাধ্যমে মানবতা উন্নয়নে ঐশীচেতনা জাগ্রত করেছেন। সত্য ও সুন্দরের দিকে আহ্বান জানিয়েছেন। মানবিক মূল্যবোধে উদ্বুদ্ধ হতে উৎসাহিত করেছেন। সত্য ও সুন্দরের দিকে আহ্বান জানিয়েছেন। মানবিক মূল্যবোধে উদ্বুদ্ধ হতে উৎসাহিত করেছেন। প্রকৃতপক্ষে বিশ্বমানবতার উৎকর্ষে যুগান্তকারী ভূমিকায় অবতীর্ণ মাওলানা জালালুদ্দিন রুমি।

editor

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *