মহান বিজয় দিবস: বাঙালির গৌরবদীপ্ত দিন

মহান বিজয় দিবস: বাঙালির গৌরবদীপ্ত দিন

জাতি মহান মুক্তিযুদ্ধের গৌরবদীপ্ত বিজয়ের ৫২তম বার্ষিকী পালন করছে। বাঙালি জাতির ইতিহাসে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের বিজয় সবচেয়ে গৌরবদীপ্ত ঘটনা। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের কালোরাতে পাকিস্তানি গণহত্যার মুখে ২৬ মার্চের সূচনালগ্নে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। শুরু হয় দেশ মুক্তির সশস্ত্র সংগ্রাম। নয় মাস পর ১৬ ডিসেম্বর মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় মিত্রবাহিনীর যৌথ কমান্ডের কাছে পাকিস্তানি দখলদারদের আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে অর্জিত হয় মুক্তিযুদ্ধের মহান বিজয়।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা স্বকীয়তায় মূর্তমান হয়। হাজার হাজার বছর আগেও গাঙ্গেয় বদ্বীপের অধিবাসীদের বীর জাতি হিসেবে সমীহ করা হতো। মহাবীর আলেকজান্ডারের সঙ্গীরা এই ভূখণ্ডের অধিবাসীদের শৌর্যবীর্যের প্রশংসা করেছেন। রোমান কবি ভার্জিলের কবিতায় বাঙালির বীরবন্দনা প্রকাশ পেয়েছে ২ হাজার বছরেরও আগে। তারপরও বলা যায়, ধন ধান্যে পুষ্পে ভরা এই ভূখণ্ডের মানুষের ইতিহাস খুব একটা সুখকর নয়। এ দেশের সম্পদ লুণ্ঠনে বিদেশি হানাদাররা বারবার আঘাত হেনেছে। বৈদেশিক আধিপত্যে একপর্যায়ে বাঙালি তার স্বাধীনতা হারিয়ে ফেলে। বাঙালি মুসলমানদের অগ্রণী ভূমিকায় ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ শাসনের অবসান ঘটিয়ে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠিত হলেও শুরুতেই বিশ্বাসঘাতকতার শিকার হয় এ দেশের মানুষ। নতুন রাষ্ট্রের কর্তৃত্ব চলে যায় সংখ্যালঘিষ্ঠ পশ্চিম পাকিস্তানিদের হাতে। তাদের শোষণ ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান বাঙালির সাহসী নেতা বঙ্গবন্ধু। ১৯৭০ সালে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ নির্বাচনে জয়ী হলে পাকিস্তানিরা ক্ষমতা হস্তান্তরের বদলে একাত্তরের ২৫ মার্চ রাতের আঁধারে নিরস্ত্র বাঙালির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। এ প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন ও মুক্তিযুদ্ধের ডাক দেন বঙ্গবন্ধু। একটি সুখী, সমৃদ্ধ গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা ছিল মুক্তিযুদ্ধের প্রত্যাশা। কাঙিক্ষত সেই লক্ষ্য পূরণে জাতিকে আরও অনেক দূর যেতে হবে। রক্ত দিয়ে কেনা বিজয়কে অর্থবহ করতে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রেও নিজেদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

editor

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *