বিকল্প জ্বালানিতে না গেলে ডলার সংকট আরও বাড়বে

বিকল্প জ্বালানিতে না গেলে ডলার সংকট আরও বাড়বে

দেওয়ানবাগ ডেস্ক: বিকল্প জ্বালানিতে যেতে না পারলে ডলারের ক্ষয় কমিয়ে আনা কঠিন। আর এতে দেশে ডলার সংকট বাড়তে থাকবে বলে মন্তব্য করেছেন বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম। গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর ধানমন্ডিতে সিপিডি কার্যালয়ে ‘কারেন্ট চেইঞ্জ-কোয়ার্টারলি ব্রিফ অব দ্য পাওয়ার অ্যান্ড এনার্জি সেক্টর’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন তিনি। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির সহযোগী গবেষক হেলেন মাশিয়াত প্রিয়তী।
খন্দকার গোলাম মেয়াজ্জেম বলেন, ডলার সংকট সহজে সমাধান হবে না। এটা দীর্ঘমেয়াদি চ্যালেঞ্জ। এ চ্যালেঞ্জের বড় উৎস জ্বালানি খাত। এ খাতে যদি ডলার অপচয় বন্ধ করতে বা বিকল্প জ্বালানি খুঁজতে না পারি, তাহলে ডলার ক্ষয় কমিয়ে আনা কঠিন। ঋণ করে কয়েক মাসের সংস্থান করতে পারব; কিন্তু সংকট দীর্ঘমেয়াদি হবে।
ক্যাপাসিটি চার্জকে বড় রকমের অপচয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, গত ১২ বছরে ১ লাখ ৪ হাজার কোটি টাকা ক্যাপাসিটি চার্জ দিয়েছে সরকার। ২০০৯ সালে বিদ্যুতের ঘাটতি ছিল। সে সময়ে ক্যাপাসিটি চার্জ দিয়ে বেসরকারি খাতকে আকৃষ্ট করার যুক্তি ছিল; কিন্তু এখন আর ক্যাপাসিটি চার্জ দেওয়ার যৌক্তিকতা নেই। এখন এর থেকে বেরিয়ে আসা দরকার। এটি একটি বড় অপচয়। এ অপচয় নেওয়ার মতো সামর্থ্য আমাদের অর্থনীতিতে নেই। সরকার জ্বালানি রূপান্তরে উল্টো পথে যাত্রা শুরু করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে কয়লা নির্ভরশীলতা কমানোর কথা বলা হচ্ছে; কিন্তু সেখানে কয়লাজনিত ব্যয় দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। সঞ্চালন ও বিতরণ ব্যবস্থায় ত্রুটির কারণে লোডশেডিং বাড়ছে। জ্বালানি খাতে প্রচুর বিল বকেয়া রয়েছে। জ্বালানি আমদানির অসমর্থ্যতাও দেখতে পাচ্ছি। অভ্যন্তরীণ গ্যাস উৎপাদন বৃদ্ধির সুযোগ থাকলেও সেটা করা হচ্ছে না। এলএনজি আমদানির জন্য ঋণ নেওয়া হচ্ছে। আর নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদনে সরকারের আগ্রহ দেখা গেলেও এর সঙ্গে জড়িত প্রতিষ্ঠানগুলোর দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।
জ্বালানি খাতের বিভিন্ন দিক উল্লেখ করে সিপিডির গবেষণা সহযোগী হেলেন মাশিয়াত প্রিয়তি বলেন, ব্যয়বহুল গ্যাসের ওপর নির্ভরতা কমাতে ৪৬টি গ্যাস কূপ খনন ত্বরান্বিত করা জরুরি। এর জন্য সরকারের আরও অর্থ বরাদ্দ করা উচিত। উচ্চ মূল্যের পেট্রোলিয়াম তেল এবং এলএনজির কারণে আমদানি ব্যয় বাড়ছে। এ ক্ষেত্রে সরকারের পদক্ষেপ প্রয়োজন। রিনিউবেল জ্বালানিভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে অগ্রগতি প্রত্যাশার চেয়ে কম।
প্রতিবেদনে সিপিডি বলছে, বাংলাদেশে গ্যাস ও কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন থেকে কার্বন নিঃসরণ বেড়েছে। গত ১১ বছরে এ বৃদ্ধির হার ৬৮ শতাংশ। পাশাপাশি বায়ুদূষণের কারণে গড় আয়ু হারাচ্ছে মানুষ বলেও মনে করে বেসরকারি এ গবেষণা সংস্থা।

editor

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *