‘কর্তৃত্ববাদী দেশগুলো ক্ষমতাধর হয়ে উঠছে’

‘কর্তৃত্ববাদী দেশগুলো ক্ষমতাধর হয়ে উঠছে’

দেওয়ানবাগ ডেস্ক: বিভিন্ন ক্ষেত্রে শক্তি ও ক্ষমতা যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে রাশিয়া ও চীনের মতো ‘কর্তৃত্ববাদী দেশে’ যাচ্ছে। গতকাল বৃহস্পতিবার এক বক্তৃতা অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন জাপানের টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও আইনের অধ্যাপক তাকাহারা আকিয়ো। তিনি ‘অবাধ ও উন্মুক্ত ইন্দো প্যাসিফিক এবং বঙ্গোপসাগরে এর লক্ষ্য, গুরুত্ব ও চর্চা’ শীর্ষক বক্তব্য দেন। ঢাকায় জাপান দূতাবাস ও নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাউথ এশিয়ান ইনস্টিটিউট অব পলিসি অ্যান্ড গভর্ন্যান্স (এসআইপিজি) যৌথভাবে ওই অনুষ্ঠান আয়োজন করে।

অধ্যাপক আকিয়ো বলেন, সামনে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যবর্তী নির্বাচন। যুক্তরাষ্ট্র নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার যথেষ্ট কারণ আছে। তিনি বলেন, গণতন্ত্র ব্যর্থ হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র, ইইউ থেকে ক্ষমতা এখন চীন, রাশিয়ার মতো কর্তৃত্ববাদী দেশগুলোর দিকে যাচ্ছে। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে এখন চীন, রাশিয়াবিরোধী মনোভাব প্রকট। গত ডিসেম্বরে যুক্তরাষ্ট্র আয়োজিত গণতন্ত্র সম্মেলনে চীন, রাশিয়াকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। অধ্যাপক আকিয়ো বলেন, ‘আমরা বিশ্বকে দুই ভাগে বিভক্ত দেখতে চাই না। দুই মেরুর বিশ্বের বাইরে আরেকটি বিশ্ব আছে। তা হলো তৃতীয় বিশ্ব। আমার মতে, যেসব দেশ কোনো পক্ষে বা বলয়ে যেতে চায় না তারা হলো নতুন তৃতীয় বিশ্ব। আমরা চাই না, কোনো অবস্থাতেই এক দেশ অন্য দেশে আক্রমণ করুক। ’ তিনি বলেন, ‘আমরা পশ্চিমাদের, সাবেক উপনিবেশ সৃষ্টিকারী দেশগুলোর কাছ থেকে আর কোনো ছবক শুনতে চাই না। আমরা চাই না, তারা বলুক, গণতন্ত্রে এগিয়ে গেছে কিন্তু মানবাধিকার কোথায়? হয়তো তারা ঠিক। এর পরও তাদের কাছ থেকে ছবক শুনতে চাই না। ’

জাপানের দৃষ্টিভঙ্গি প্রসঙ্গে অধ্যাপক আকিয়ো বলেন, ‘আমাদের প্রথমে মানব নিরাপত্তা প্রয়োজন। মানুষের জীবন, জীবিকা ও সম্মান রক্ষা করতে হবে। যেমন ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণে মানুষের নিরাপত্তা ব্যাপকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।’

চীনের ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই)’ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বিআরআই শুনতে খুব ভালো শোনায়। কূটনৈতিক ও রাজনৈতিকভাবে চমৎকার একটি ভাবনা। কিন্তু চীনের অর্থ নিয়ে মন্ত্রমুগ্ধ হওয়ার কারণ নেই। প্রকল্প ভালো হলে গ্রহণ করা উচিত। ভালো না হলে করা উচিত নয়। ’ তাঁর মতে, বিআরআই চীনের ও চীনা প্রেসিডেন্ট শি চিনপিংয়ের ক্ষমতার প্রতীক। বিআরআইয়ের আওতায় নেওয়া প্রকল্পগুলো উন্মুক্ত হওয়া উচিত। চীনের বিআরআই পশ্চিমাদের ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলের প্রতিযোগী নয়। কিন্তু সমস্যা হলো চীনারা মুখে যা বলে আর বাস্তবে যা করে তা পুরোপুরি ভিন্ন।

অধ্যাপক আকিয়ো বলেন, চীন প্রতিবেশীদের সঙ্গে তার কূটনীতিকে বলে ‘পেরিফেরাল ডিপ্লোমেসি’। অর্থাৎ চীনই সব কিছুর কেন্দ্র। অন্য দেশগুলো তাকে ঘিরে চলছে। তিনি বলেন, অনেক দেশ মনে করে যে জাপান ও চীন সব সময় ঝগড়া করছে। এটি সত্য নয়। দুই দেশ অনেক ক্ষেত্রেই পরস্পরকে সহযোগিতা করে। তবে না চাইলেও চীনের সঙ্গে বিরোধ হচ্ছে জাপানের।

তিনি আরো বলেন, ‘অবশ্যই চীনের ভারত মহাসাগরে শান্তিপূর্ণ যোগাযোগের অধিকার আছে। কিন্তু এখানে বড় নৌবহর পাঠিয়ে শক্তি দেখানো ঠিক নয়।

editor

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *