আসুন আমরা সবাই নিজেকে আলোকিত করি ইমাম প্রফেসর ড. কুদরত এ খোদা

আসুন আমরা সবাই নিজেকে আলোকিত করি ইমাম প্রফেসর ড. কুদরত এ খোদা

বিশেষ সংবাদদাতা: অলী-আল্লাহ্দের জন্ম এবং মৃত্যু রহমতের এটা যেমন সত্য, অপরদিকে মুরিদের কাছে মোর্শেদের বিয়োজন বড়ই বেদনাদায়ক, এটিও সত্য। আমি আমার জীবনে ২ জন মহামানবের ওফাত দেখেছি। একজন আমার মা কুতুবুল আকতাব, দুররে মাখনুন, খাতুনে জান্নাত হযরত সৈয়দা হামিদা বেগম (রহ.)। দয়াল মায়ের ওফাতও আমার হাতের উপরে হয়েছে। দ্বিতীয় মহামানব আমার পিতা, আল্লাহ্র বন্ধু শাহ্ দেওয়ানবাগী (রহ.)। তাঁর ওফাতও আমি হতভাগা হাতের উপরেই হয়েছে। যেটি আসলেই একজন মুরিদ সন্তান হিসেবে, একজন সন্তান হিসেবে বড় কষ্টের একটি বিষয়। জন্ম যেহেতু হয়েছে মৃত্যু হবেই। প্রত্যেক প্রাণীকে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে। এটিই স্বাভাবিক, এটিই আল্লাহর বিধান।


গত ২৯শে ডিসেম্বর সূফী সম্রাট দেওয়ানবাগী (রহ.)-এর ওফাত দিবস স্মরণে বাবে রহমত দেওয়ানবাগ শরীফে সাপ্তাহিক আশেকে রাসুল (সা.) মাহফিল এবং জিয়ারতের অনুষ্ঠানে মোহাম্মদী ইসলামের নেতৃত্বপ্রদানকারী মহামানব ইমাম প্রফেসর ড. কুদরত এ খোদা (মা. আ.) হুজুর এ কথা বলেন।


ইমাম প্রফেসর ড. কুদরত এ খোদা (মা. আ.) হুজুর বলেন, বাবা আদম (আ.) থেকে শুরু করে নবি মোহাম্মদ (সা.) পর্যন্ত এবং পরবর্তীতে বেলায়েতের যুগে যত অলী-আল্লাহ্ এসেছেন জন্ম নিয়েছেন এবং তারা একসময় আল্লাহর সাথে পুণর্মিলন হয়েছেন। উদাহরণস্বরূপ আমি যখন লন্ডনে থাকি লন্ডনের আশেকে রাসুল ভাইয়েরা খুব প্রাণবন্ত থাকে, আনন্দিত থাকে। যখন আমি লন্ডন থেকে বাংলাদেশে আসি, জাকেররা সবাই মনমরা হয়ে যায়, বাচ্চারা সবাই মনমরা হয়ে যায়, “বাবা চলে যাচ্ছে।” যখন প্লেন থেকে এখানে নামি, এখানে সবার আনন্দ, হাসি, উল্লাস, উদ্দীপনা। আর একই সময়ে লন্ডনের আশেকে রাসুলদের ক্রন্দন বা আমার সন্তানের কান্না। যার কাছে যখন যেই আসবেন তার কাছে তখন সেটি আনন্দের। আবার যখন তার কাছ থেকে বিয়োজন হবে, সেটি আবার দুঃখের। এটি আমার বেলায় নয়, আপনার বেলায়ও। আপনার ভাই-বোন, বাবা-মা যদি বিদেশে থাকে বা দেশে থাকে, আপনার কাছে যখন মিলন হয় আনন্দের লাগে। আবার যখন বিদায় নিয়ে বাড়ি চলে যায়, সেটি তার কাছে কষ্টের কারণ। কিন্তু বাড়িতে যারা থাকে তাদের কাছে তো আনন্দের, আজ সে ফিরে এসেছে। ঠিক তেমনিভাবে মালিকের কাছে যখন অলী-আল্লাহগণ থাকে তখন মালিকের জন্য সেটি আনন্দের কারণ তাঁর বন্ধু তাঁর সাথে রয়েছে। যখন তিনি দুনিয়াতে আসেন, দুনিয়ার মানুষ যখন তার সাথে প্রেমে আবদ্ধ হয়, তাকে দিল ও জানসে ভালোবাসা শুরু করে, আশেক যখন মাশুকের প্রেমে হাবুডুবু খায়, ঠিক তখনই আবার মালিকের ডাক চলে আসে, তিনি মালিকের ডাকে সাড়া দিয়ে মালিকের কাছে মধুর মিলনে চলে যান। সেই মিলন মধুর হচ্ছে মালিকের জন্য, কিন্তু আশেকের জন্যে কি সেটি মধুর হয়? সেটি তো কষ্টের হয়, সেটি তো বিয়োজনের হয়।


ইমাম প্রফেসর ড. কুদরত এ খোদা (মা. আ.) হুজুর বলেন, আল্লাহর বন্ধু শাহ্ দেওয়ানবাগী (রহ.)-এর মতো এতো বড় মহামানব এই জগতে পাওয়া বড় দায়। যাকে নিয়ে সারা জীবন কথা বলেছি, তার বিয়োজনে কি কথা বলতে পারি? যার গিয়েছে, সে জানে কি গিয়েছে। যার হারিয়েছে, সে জানে কি হারিয়েছে। যাই হোক শাহ্ দেওয়ানবাগী (রহ.)-এর ওফাত খুব অল্প সময়ের মধ্যে সংগঠিত হয়। আপনারা জানেন, আমরা মোর্শেদ কেবলাজানের শুভ জন্মদিন উদযাপন করেছিলাম। অনলাইনে যখন মোর্শেদ কেবলাজান আপনাদের জন্মদিন উদযাপনের আনন্দ দেখেছিলেন, তিনি অনেক খুশি হয়েছিলেন। আমি ওনাকে ৬৫ ইঞ্চি একটি টেলিভিশন কিনে দিয়েছিলাম। টেলিভিশনের মধ্যে তিনি প্রত্যেক জাকেরকে বড় বড় করে দেখছিলেন। প্রত্যেকটি খানকাহ্, মজলিস, দরবার, বাড়ি বাড়ি বোনেরা কি আয়োজন করছিলেন, তিনি সকাল থেকে আমাদের সাথে ঐ টেলিভিশনের পর্দায় বসে দেখেছিলেন। উনি এতো আনন্দিত হয়েছিলেন, অনুষ্ঠান শেষ করার পরেই দুপুরবেলা খাবার টেবিলে (আমি ওনার সাথে একসাথে খাই) উনি আমাকে বলেছিলেন, “এটি আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ জন্মদিন। আমার মুরিদ আমাকে এতো ভালোবাসে, আমার জানা ছিল না।”


ইমাম প্রফেসর ড. কুদরত এ খোদা (মা. আ.) হুজুর বলেন, ঘটনাচক্রে তার পরপরই আমি অসুস্থ হয়ে যাই। হসপিটালে ভর্তি হই। আমি তখন বেশ অসুস্থ। বাবাজান আমাকে ২৬শে ডিসেম্বর সকালে ফোন করেন যে, কদর! আমি একটি স্বপ্ন দেখেছি। আমি বললাম, কি স্বপ্ন? তিনি আমাকে স্বপ্নের কথা বললেন। স্বপ্নের কথা শুনার সাথে সাথে বুঝতে পারি মোর্শেদ কেবলাজান আমাদের মাঝে আর থাকবেন না। আমি বললাম, আপনি কি মানত করেছিলেন? তিনি কথার জবাব দিলেন না, এড়িয়ে গেলেন। আমার পুরোপুরি মনে নেই খুব অল্প পরিমাণ একটি মানতের সংখ্যা সম্ভবত আমাকে বলেছিলেন। (আমি বললাম,) এই মানতে তো কাজ হবে না। (আমাকে উনি প্রত্যুত্তরে বললেন) কোনো মানতেই কাজ হবে না। আমি নিজে অসুস্থ, হাঁটতে পারি না। ফোন রাখার পরে ডাক্তারকে কল করলাম। ডাক্তার আসলো। (আমি বললাম) আমাকে রিলিজ দাও। ডাক্তার বললো, এই মুহূর্তে আপনার রিলিজ নেওয়া ঠিক হবে না। আমি বললাম, ঠিক-বেঠিক বুঝি না, তুমি রিলিজ দাও। ডাক্তার বললেন, আমি এভাবে রিলিজ দিতে পারবো না। আপনি যদি নিজে লিখে বন্ড দিয়ে যান তাহলে আমি আপনাকে রিলিজ দিতে পারবো। আমি বললাম, ঠিক আছে আমি নিজে বন্ড দিবো। তুমি রিলিজ দাও। হসপিটাল থেকে বন্ড দিয়ে রিলিজ নিলাম। প্রেসক্রিপশন পেতে পেতে রাত হয়ে গেল। রাত সাড়ে ৯টায় নিজেই অসুস্থ, স্ত্রী-সন্তানসহ হসপিটাল থেকে বাসায় আসলাম। সিঁড়ি দিয়ে উঠতে পারি না, ২জন ধরে ধরে সিঁড়ি দিয়ে নিয়ে গেল। মোর্শেদ কেবলাজান দেখলাম, খাট মোবারকে শোয়া ছিলেন। মোর্শেদকে সারপ্রাইজ দিবো বলে বলিনি যে, আসি। আসলে বলবো। দরজা খুলে ঢুকলাম। আমাকে দেখে একটি চওড়া হাসি দিলেন। হাসি দিয়ে বললেন, তুমি এসেছো? তুমি কিভাবে আসলে? তুমি না হসপিটালে? আমি বললাম, আপনার অসুস্থতার খবর পেয়ে কি আমি থাকতে পারি? বললেন, আমাকে ধরে বসাও। বসলেন। বললেন, মিষ্টি আনো। সবাইকে মিষ্টি খাওয়াও। কদর এসেছে। তারপরে ওনার সামনে কিছুক্ষণ থাকার পরে তিনি আমাকে পুনরায় ওনার স্বপ্ন বললেন, দ্বিতীয়বার। আমি জিজ্ঞেস করলাম, আপনি কি মানত করেছেন? তখন আমাকে ১ লাখ টাকার কথা বললেন। আমি বললাম, আপনি ১ লাখ টাকা মানত করলে তো অনেক কম হয়েছে। তাহলে কি মানত করবো? আমি মনে হয় খামারের ৫টি উট মানত করার কথা পরামর্শ দিলাম। মানে উনি মানতে আগ্রহী না। তারপরও যেহেতু আমি জোরাজোরি করতে থাকলাম, ঐ আমার কথায় উনি ৫টি উট মনে হয় মানত করলেন তখন। পরে অনেকক্ষণ, (ঘন্টা ২/১ মনে হয়) মালিকের সামনে ছিলাম। তারপরে বললেন, ওকে একটু খেতে দাও! খাওয়া-দাওয়া করলাম। রাতে বিশ্রামে গেলাম। পরদিন সকাল থেকে আবার ওনার শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে।


ইমাম প্রফেসর ড. কুদরত এ খোদা (মা. আ.) হুজুর বলেন, অবনতি হলে আমাদের ডাক্তার সালাম ভাই (কার্ডিওলজিস্ট), তারেক ইমতিয়াজ জয় ভাই, ডাক্তার মোস্তফা ভাই ছিল। জয়ের পরে সালাম ভাইকে খবর দিলাম যে, বাবাজানের শরীর মোবারক খারাপ, আপনারা একটু আসুন। ওনারা বাবাজানের ব্যক্তিগত চিকিৎসক, লম্বা সময় বাবাজানকে দেখেছেন। ওনারা আসলেন। সালাম ভাই বললেন, একটি ইসিজি করতে পারলে ভালো হতো। ইসিজি মেশিনে এনে আমরা চেষ্টা করলাম ইসিজি করার। রিপোর্ট দেখে সালাম ভাই বললেন, ওনাকে ইমিডিয়েট হসপিটালে ভর্তি করা দরকার। বাবাজানের কাছে আমি অ্যাপ্রোচ করলাম। বললাম যে, “মালিক আমি আপনাকে হসপিটালে ভর্তি করতে চাই।” উনি রাজি হলেন না। উনি বললেন, কোনো লাভ নেই, শুধু শুধু টানা-হেঁচড়ার দরকার নেই। দেখুন, যদি শুধু পিতা হতো, আমি জোর করতে পারতাম। কিন্তু মোর্শেদ তো, আমি তো জোর করতে পারছি না। দুই নৌকার মাঝখানে পড়েছি আমি। ডাক্তার বলছিলেন নিয়ে যান, মোর্শেদ বলছিলেন যাবো না। বিশ্বাস করুন, আমি যে সেই মুহূর্তে কত অসহায় হলাম! কি করবো? চোখের সামনে মোর্শেদ কেবলাজানের কষ্ট দেখেছি। ডাক্তার বলছিলেন, ইমিডিয়েট নিয়ে যান। মোর্শেদ বলছিলেন, না আমাকে নিও না, টানা-হেঁচড়া দরকার নেই। উপায় খুঁজে না পেয়ে ভাই-বোনদের ডাকলাম। বোনদের ফোন করে জানালাম, তোমরা আসো! ভাইদের বললাম, তোমরা আসো। সবাইকে বললাম, বাবাজান হসপিটালে যেতে রাজি না। চলো, আমরা সবাই মিলে গিয়ে বলি। তো বোনেরা আসতে একটু দেরি করেছে। ভাইয়েরা যেহেতু দরবারে থাকে, তারা সবাই তাড়াতাড়ি চলে এসেছে। সবাইকে নিয়ে গেলাম বাবাজানের কাছে। আমার একার কথা শুনছেন না, দেখি সবাইকে নিয়ে পারি কি-না? সবাই দাঁড়ালাম, একে একে সবাই বললো যে, বাবা আমরা আপনাকে হাসপাতালে নিতে চাই। আপনার একটু সুচিকিৎসা করতে চাই। কর্ণপাত করলেন না বরং ৪ ভাইকে একসাথে পেয়ে তিনি বললেন, আমার কথা আছে।


ইমাম প্রফেসর ড. কুদরত এ খোদা (মা. আ.) হুজুর বলেন, আজ যে অছিয়ত আত্মার বাণীতে দেখেন, এই অছিয়তের কথা তিনি বললেন। কথা বলতে ওনার খুব কষ্ট হচ্ছিল। ওনাকে অক্সিজেন মাস্ক দেওয়া ছিল। আমি তখন মোর্শেদ কেবলাজানকে জোর হাত করে অনুরোধ করেছিলাম যে, আপনি এখন এই কথা বলবেন না। উনি আমাকে ইশারা দিয়ে থামিয়ে বললেন, আমাকে বলতে দাও, আমি আর সময় পাবো না। একে একে অছিয়তের সবগুলো কথা তিনি বললেন। সর্বশেষ সবাইকে বললেন, তোমরা আমাকে কথা দাও, কেউ কদরের বিপক্ষে দাঁড়াবে না? একে একে সবাই মোর্শেদের সাথে অঙ্গীকার করলো যে, আমরা কদরের বিপক্ষে যাবো না। আমার মনে আছে সেই অছিয়তের সময়ে আম্মা বাবাজানের ভাত নিয়ে এসেছিলেন বাবাজানকে খাওয়ানোর জন্য। বাবাজান ধমক দিয়ে বলেছেন, আমাকে কথা শেষ করতে দাও, ডিস্টার্ব করো না। মোর্শেদ কেবলাজানের এই লম্বা কথা, এই শেষ। আর এরপরে তিনি হ্যাঁ বা না বা ২/১ টি কথা বলেছেন কিন্তু আর কথা বলতে পারেননি। রাতের বেলা সময় যত ঘনাচ্ছে, মোর্শেদ কেবলাজানের শারীরিক অবস্থার আরো অবনতি হতে থাকে। তখন ভাই-বোনেরা সবাই আমার উপরে চাপ প্রয়োগ করলেন যে, জোরপূর্বক বাবাজানকে হসপিটালে নিয়ে যাই। আমাকে বললেন, বাবাজানকে জোর করে নিয়ে যাও। (আমি থামালাম) না, উনি শুধু পিতা হলে জোর করা যায়, কিন্তু উনি মোর্শেদ, ওনার সাথে জোর করা যায় না। সবাই কাঁদছিল, কারণ সবার তো পিতা, মোর্শেদও। ওনার কষ্ট তো কেউ সহ্য করতে পারছে না, এটিই তো সত্য। আর আমার অবস্থা এমন যারা ঐ সময় বাবাজানের সামনে ছিলেন তারা বলতে পারবেন, বাবাজান আমাকে চোখের আড়াল করতে চাননি। আমি পাশের রুমে গেলে, এই কদর কোথায় গিয়েছে? ডাক দাও! (সামনে আসলেই) এই আমার সামনে বসে থাক। বাকি যারা যাচ্ছেন, বলছিলেন, ঠিক আছে আমাকে দেখা হয়েছে তোমরা বাসায় চলে যাও। কিন্তু উনি আমাকে ছাড়ছেন না। আমার সামনে বসে থাক। কিভাবে বসে থাকি, আর কিভাবে এই যন্ত্রণা দেখি? তখন মোর্শেদ কেবলাজানকে শেষবারের মতো অনুরোধ করা হলো যে, আমাদের জাকেররা একটি হসপিটালের মালিকানাধীন আছে, আপনি যদি ঐ হসপিটালে যান, আমরা আপনার পাশে থাকতে পারবো। বাসায় তো চিকিৎসা করা সম্ভব না। এটি আইসিইউ-এর চিকিৎসা। স্কয়ারের কথা উঠালাম, সাফ নিষেধ করে দিলেন, স্কয়ারে যাবেন না। ইউনাইটেডে যাবেন না। কারণ আইসিইউ-তে নেওয়ার পরে তো আর আমাদের কাউকে থাকতে দিবে না। আইসিইউ-তে নেওয়ার সাথে সাথে ডাক্তারদের হাতে চলে যাবেন। আইসিইউ-তে নিয়ে যাওয়ার পরে তো আমরা কেউ সামনে থাকতে পারবো না। উনি চেয়েছিলেন ওনার শেষ সময়ে যাতে আমরা পাশে থাকি। বিশেষ করে আমি পাশে থাকি। আমি কি করবো? উত্তরার আর্ক হসপিটাল….। সালাম ভাইয়ের সাথে আমরা কথা বললাম, যেহেতু উনি আমাদের সবার সিনিয়র। উনি তখন বললেন, বাবাজানের চিকিৎসা সারাবিশ্বে এক। এখন ওনাকে আইসিইউ নেওয়া লাগবে। স্কয়ারে নিলেও যেই চিকিৎসা, সরকারি হাসপাতালে নিলেও একই চিকিৎসা, ইউনাইটেডে নিলেও একই চিকিৎসা। এখন ওনাকে লাইফ সাপোর্টে দিতে হবে। এর চিকিৎসা বিদেশে, বাংলাদেশে কোনো হসপিটালে ভিন্ন চিকিৎসা নেই। একই চিকিৎসা। আর ডা. সালাম ভাইয়ের এই কথাটি আমার এখনও মনে আছে। তিনি বলেছিলেন, ফার্স্ট ক্লাস হসপিটালে সেকেন্ড ক্লাস চিকিৎসা পাওয়া, আর সেকেন্ড ক্লাস হসপিটালে ফার্স্ট ক্লাস চিকিৎসা পাওয়া এটি আপনাদের উপরে। যদি নিজস্ব হসপিটাল হয় তাইলে সেকেন্ড ক্লাস হসপিটাল হলেও ফার্স্ট ক্লাস চিকিৎসা পাওয়া যাবে। কারণ ডাক্তার, নার্স সব কম্পিত থাকবে কি করতে হয়? তখন আমি আমাদের মোবারক আর্ক হসপিটালে ফোন করি যে, মোর্শেদ কেবলাজানের অবস্থা এইরকম। ওনার আইসিইউ সাপোর্ট দরকার। তোমরা ব্যবস্থা করতে পারবে কি-না? বললো, আমরা পারবো। সালাম ভাইয়ের সাথে আবার কথা বলিয়ে দিলাম, যেহেতু উনি সিনিয়র ডাক্তার। সালাম ভাই জিজ্ঞেস করলো, আপনাদের এই ফ্যাসিলিটিস আছে কি-না? (ওরা বললো) আছে। তখন বাবাজানকে গিয়ে বললাম যে, আমাদের জাকের ভাইদের একটি হসপিটাল আছে, সেখানে আপনাকে যদি নিয়ে যাই আমরা সবাই আপনার সাথে থাকতে পারবো। আপনি দয়া করে এইবার রাজি হন। আমরা তো আপনাকে এইভাবে দেখতে পারছি না। আমার মনে আছে তিনি শুধু একটি শব্দ উচ্চারণ করেছিলেন, হ্যাঁ। এইটুকু শব্দ শুনে আমরা দৌঁড় দেই। আমি নিজে ওনার গাড়ি চালিয়েছি। আমার আজও মনে পড়ে বড় সাহেবজাদা হুজুর, ছোট হুজুর, আম্মা, মেজো আপা আমরা এই কয়েকজন হসপিটালে রওনা করি। সেজো হুজুর অর্থাৎ জামান আমাকে তখন বললো যে, দরবার খালি হয়ে যায়, একজন দরবারে থাকি। আমি বললাম- তুমি থাকো। যেহেতু রাত্রিবেলা যাচ্ছি হসপিটালে দৌড়াদৌড়ি। বাচ্চার কারণে ছোট আপা আর আমার স্ত্রী গেল না। আর দরবার খালি থাকে একজন পুরুষ মানুষ রেখে যেতে হয় বলে সেজো হুজুর দরবারে থাকলেন। আমরা বাকিরা সবাই বাবাজানকে নিয়ে হসপিটালে যাই এবং সেখানেই আল্লাহর বন্ধু শাহ্ দেওয়ানবাগীর ওফাত হয়।


ইমাম প্রফেসর ড. কুদরত এ খোদা (মা. আ.) হুজুর বলেন, ওফাতের পূর্বে আইসিইউ-র যিনি ডাক্তার ছিলেন, উনি আমাকে বললেন যে, উনি আর বেশিক্ষণ আমাদের মাঝে থাকবেন না। আপনারা উনার সাথে যা কথা বলতে চান, বলে নেন। আমি তখন মোর্শেদ কেবলাজানের কাছে গেলাম। ওনার কপাল মোবারকে এক হাত রাখলাম, আর এক হাত বুক মোবারকে রাখলাম। তারপরে বললাম “দয়া করে আপনি আমাদের ক্ষমা করে দিন। আমরা সব চেষ্টা করলাম কিন্তু আমরা আপনাকে রাখতে পারলাম না। আমরা আপনার গোলামি করতে গিয়ে যত ভুল বেয়াদবি করেছি, আপনি দয়া করে আমাদের মাফ করে দিন।” মোর্শেদ কেবলাজান কিন্তু তখনও অচেতন, মানে কোনো জ্ঞান নেই। কিন্তু আমরা কথা বলার পরেও ওনার দুই চোখ বেয়ে অশ্রু বিসর্জিত হতে থাকে। আমি আমার হাতে ওনার অশ্রু মুছলাম এবং সেই চোখের পানি আমার মাথায় মুছলাম। তার কিছুক্ষণ পরেই তিনি ওফাত লাভ করলেন। ওফাত পরবর্তীতে তো আপনারা সব জানেন। দরবারে নিয়ে আসলাম, রওজাস্থ করলাম। বুক খালি হয়ে গেল। চতুর্দিকে যেন এক শূন্যতা। নীরবতা। দরবার আছে কিন্তু জীবন নেই। মানুষ আছে কিন্তু হাসি নেই। এই মোটামুটি কম-বেশি শাহ্ দেওয়ানবাগীর ওফাতের ইতিহাস।


ইমাম প্রফেসর ড. কুদরত এ খোদা (মা. আ.) হুজুর বলেন, সূফী সম্রাট দয়াল বাজানের অছিয়ত সত্য। তিনি অছিয়ত যা করেছেন, তা চিরসত্য। কেউ স্বীকার করুক বা না করুক। কেউ মানুক অথবা না মানুক। এই অছিয়তের প্রত্যেক কথা সত্য, আমি জানি। কে কি বলবে সেটি তার মতো কিন্তু সত্য চিরজীবন সত্য। অছিয়ত দেখুন, যদি অছিয়তকে পর্যালোচনা করেন দেখবেন, এখানে কোথাও বলা নেই, কদর তোমাকে দায়িত্ব দিলাম। এই পুরো কথা আপনাদের জন্য। আপনারা যাতে আমাকে মানেন। কারণ, ১ বছর আগে আমাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, সেইদিন নয়। আমি অছিয়ত মূলে মোহাম্মদী ইসলামের নেতৃত্ব প্রদানকারী নই। শাহ্ দেওয়ানবাগীর পক্ষ থেকে দায়িত্ব হস্তান্তর হয়েছে তারপরে আমি মোহাম্মদী ইসলামের নেতৃত্ব প্রদানকারী। অছিয়ত এই কারণে করেছেন, যাতে তরিকতে ফেতনা না লাগে। কেউ যাতে আমার বিপক্ষে না যায়। সবাই যাতে আমার কথায় তরিকাকে এগিয়ে নিয়ে যায়। মোর্শেদই ভালো জানেন। তিনি জানতেন আজকের এই ঘটনা হবে, সেই জন্যই করেছেন। তারপরও ঘটনা ঘটেছে। অনেক কিছু হয়েছে। তারপরও মালিকের কাছে শুকরিয়া করি যে, আমার আশেকে রাসুলেরা নিরাপদে আছে এবং ঝগড়া বিদ্রোহ থেকে নিজেকে দূরে রেখেছে, নিজেকে আলোকিত করার চেষ্টা করছে।
ইমাম প্রফেসর ড. কুদরত এ খোদা (মা. আ.) হুজুর বলেন, শাহ্ দেওয়ানবাগী সারা জীবন স্বপ্ন দেখেছেন, আপনাকে আমাকে আলোকিত করার। তিনি সারা বিশ্বে এই তরিকাকে ছড়ানোর স্বপ্ন দেখেছেন। তিনি অসংখ্য বার বলেছেন, আমি সারা বিশ্বে তরিকার আলো ছড়িয়ে দিবো। একদিন দুইদিন নয় বিশ্বাস করুন, হাজার বার বলেছেন। সারা বিশ্বে আলো ছড়িয়ে দিবো। আমি তাঁর কাছ থেকে অর্পিত দায়িত্ব পেলাম, আর সেটি যদি পালন না করি, তাহলে কি হবে বলুন? যিনি ব্যাংকের ম্যানেজার, আপনার যে দায়িত্ব আছে আপনি যদি তা পালন না করেন, কাজ হবে? চাকরি থাকবে বলুন? যিনি ফিজিওথেরাফিষ্ট আপনি যদি রোগীর সেবা না করেন, ব্যায়াম করতে আসলো, আপনি যদি ব্যায়াম না করতেন, তাইলে কি আপনার চাকরি থাকবে বলুন? যিনি ডাক্তার, তিনি যদি ডাক্তার হয়ে রোগীর সেবা না করেন, রোগী আসলে অন্যদিকে বসে থাকেন তাহলে কি তার চাকরি থাকবে, বলুন? যিনি শিক্ষক, তিনি যদি না পড়ান তার চাকরি থাকবে, বলুন? আমাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে আপনার শিক্ষকরূপে। আর আমি যদি আপনাকে শিক্ষা না দেই, তাহলে কি আমার চাকরি থাকবে বলুন? আর এই দায়িত্ব কি শুধু মোর্শেদের কাছ থেকে পেয়েছি? আমি আল্লাহর তরফ থেকে মনোনীত হয়ে দায়িত্ব পেয়েছি। আমি রাসুল (সা.)-এর মনোনীত হয়ে দায়িত্ব পেয়েছি, অতঃপর শাহ্ দেওয়ানবাগীর মনোনীত হয়েছি। আমি তো কাউকে মানতে বলিনি, যার ভালো লাগে এই দরজা খোলা আছে, আসুন, এই দরজায় এসে নিজের মুক্তির ব্যবস্থা করুন। যার ভালো লাগে না, আসবেন না, কোনো বাধা নেই।


ইমাম প্রফেসর ড. কুদরত এ খোদা (মা. আ.) হুজুর বলেন, আমি মানুষকে প্রেমের শিক্ষা দিয়েছি হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালার মতো, প্রেমের একটি সুর বাজাই, যে সুরে মানুষের অন্তরের মধ্যে একটি প্রেম জাগ্রত হয়। ঐ প্রেম যখন জাগ্রত হয়, সে তখন পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা পরিণত পাগল হয়। সে তখন আল্লাহ্কে পেতে চায়, সে রাসূল (সা.)-কে পেতে চায়, সে মোর্শেদকে পেতে চায়, সে আমাকে পেতে চায়, আমাকে খুশি করতে চায়। আমি তখন বলি, তুমি যদি আমাকে খুশি করতে চাও, তাহলে আমার ঐ পথ অনুসরণ কর, যে পথ আমি তোমাকে দিয়েছি। সে তখন আল্লাহর খুশি অর্জনের জন্য ঐ রাস্তায হাঁটে, পাগলের মতো। তখন তার মনে থাকে না, দুনিয়া কোথায় আছে; তখন তার মনে থাকে না, কে গালি দিলো; তখন তার মনে থাকে না, কে মন্দ বললো; তখন তার মনে থাকে না, বউ-বাচ্চা কোথায় আছে? তখন শুধু বলে, হে আল্লাহ্! আমি তোমাকে চাই! তোমাকে চাই! আমি তোমাকে চাই। যুগে যুগে এই প্রেমে মানুষ আল্লাহ্কে পেয়েছে, যুগে যুগে এই প্রেমে মানুষ হযরত রাসুল (সা.)-কে পেয়েছে, যুগে যুগে এই প্রেমে মানুষ আল্লাহর সন্তষ্টি অর্জন করছে। এটি নতুন বিদ্যা নয়। হযরত রাসুল (সা.)-এর জামানায় বর্বর আরবজাতি, যারা তাঁকে হত্যা করতে এসেছিল, তারা রাসুল (সা.)-এর প্রেমে পাগল হয়ে ঐ রাসুল (সা.)-কে নিজের জীবনের চেয়ে বেশি ভালোবেসেছে এবং উহুদের প্রান্তরে যখন হযরত রাসুল (সা.)-কে তির নিক্ষেপ করে হত্যা করতে চেয়েছে, সীনা খুলে দিয়ে বলেছে, আমার দেহে এক ফোঁটা রক্তবিন্দু থাকা পর্যন্ত আমি আমার মোহাম্মদ-এর গায়ে তীর বিদ্ধ হতে দিবো না। একে একে তীর নিজের বুকে নিয়েছে। হযরত রাসুল (সা.)-এর গায়ে তীর বিদ্ধ হতে দেয়নি। যারা হত্যাকারী ছিল তারা রাসুল (সা.)-কে রক্ষাকারীতে পরিণতি হয়েছিল, কারণ প্রেম, কারণ এই ভালোবাসা। যুগে যুগে নবী-রাসূলগণ এই শিক্ষা দিয়েছেন, অলী-আল্লাহগণ এই শিক্ষা দিয়েছেন, শাহ দেওয়ানবাগী এই শিক্ষা দিয়েছেন। আজ আমি এই শিক্ষা দিচ্ছি। ঐ একই রাস্তায়, ঐ একই পথে, একই কথা বলে, একই শিক্ষা দিচ্ছি। আমরা আল্লাহ্কে পেতে চাই, আমরা রাসূল-(সা.)-কে পেতে চাই, আমরা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করতে চাই। আমরা নিজের মুক্তির ব্যবস্থা করতে চাই। তাই তো আজ আশেকে রাসূলগণ আমার প্রেমে মগ্ন। আমার সাথে প্রেমে মগ্ন হয়ে একসাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে মোহাম্মদী ইসলামকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।


ইমাম প্রফেসর ড. কুদরত এ খোদা (মা. আ.) হুজুর বলেন, একদিন আসবে সেদিন, যেদিন দেখবেন, এতো প্রেম জাগ্রত হয়েছে যে, লক্ষ লক্ষ আশেকে রাসুলেরা মুসলমান নয়, মুমিনে পরিণত হবে। যারা নিজের ভিতর আল্লাহ্কে দেখতে পাবে, যারা মরার আগে মালিককে দেখবে এবং যখন প্রশ্ন করবে, মার রব্বুকা? বলবে, “আমার ভিতরের যে আল্লাহ্, তুই সেই আল্লাহ্ আমি তোকে দেখেছি।” ওয়া মা দিনুকা? বলবে, “তোর ধর্ম পালন করেছি, এটিই আমার দ্বীন।” ওয়ামান নাবিয়্যুকা? যেই নবীকে ভালোবেসে ছিলাম, যাকে দেখেছি এই তো আমার নবী মোহাম্মদ (সা.)। এই তরিকা আপনাকে আল্লাহ্কে পাওয়ার বিদ্যা শিক্ষা দিবে, এই তরিকা আপনাকে চরিত্রবান হওয়ার শিক্ষা দিবে। আমাদের এই তরিকা চলবে, এগিয়ে যাবে। এই তরিকার মোর্শেদ থাকবে বাবা দেওয়ানবাগী। আর বর্তমানে মোহাম্মদী ইসলামের নৌকার মাঝির নাম কুদরত এ খোদা। কেউ মানুক অথবা না মানুক। এই মোহাম্মদী ইসলামের পথে যদি আল্লাহ্কে পেতে হয়, আমার নৌকায়-ই উঠতে হবে। উঠলে এবং নিয়ম পালন করলে পরিত্রাণ পাবে। আর যদি না ওঠে অসুবিধা নেই, আমি দোয়া করি আল্লাহ্ ওনাদের হেদায়েত করুক। আমি আপনাদের কাছে অধিকার নিয়ে আবদার করছি, আসুন আমরা সবাই নিজেকে আলোকিত করি। আমার মোর্শেদ বলতেন, “গোসল করবে! হাঁটু পানিতে গোসল করো না, ঐটা গোসল হয় না। গলা পানিতে নেমে গোসল করো তাহলে গোসল হবে।” তরিকা করবেন, আর নাম করতে তরিকা করবেন, নামাজ পড়বেন না, রোজা রাখবেন না, মিথ্যা কথা বলবেন, অন্যায় করবেন, জুলুম করবেন, আর বলবেন, আমি তরিকা করি? এই তরিকা তরিকা নয়, নিজের চরিত্র পরিবর্তন করার নাম তরিকা। আমাকে কথা দিন, আপনারা চরিত্র পরিবর্তনের চেষ্টা করবেন। কথা দিন করবেন? সকলে হাত তুললেন। হাত নামান। মনে রাখবেন, চেষ্টা করবেন। পারি আর না পারি চেষ্টা তো করতে পারবো। পারবো কি না?


ইমাম প্রফেসর ড. কুদরত এ খোদা (মা. আ.) হুজুর বলেন, মৃত্যুর পরে আমি মালিকের কাছে যখন বলবো যে, মালিক সে তো চেষ্টা করেছিল মাফ করে দাও। চেষ্টা না করলে তো এটুকু বলতে পারি না। একটু চেষ্টা করতে পারবেন? পারবেন কি না বলুন? সৎ পথে চলবেন, অন্যায় থেকে দূরীভূত থাকবেন, জুলুম করবেন না, মিথ্যা বলবেন না। আল্লাহর হুকুম আহকামগুলো মানবেন, নামাজ আদায় করবেন, মোরাকাবা করবেন, রোজা রাখবেন। যতটুকু পারেন, যতটুকু শরীরে কুলায় করবেন। চেষ্টা করবো সততার পথে থাকতে। মোর্শেদ বলতেন, “ব্যক্তি শুদ্ধ তো সমাজ শুদ্ধ।” আপনি শুদ্ধ হন সমাজ অটোমেটিক শুদ্ধ হয়ে যাবে। একে যদি প্রতিষ্ঠিত করতে পারি, আল্লাহর কসম এই মোহাম্মদী ইসলাম সারা দুনিয়ায় ছড়িয়ে পড়বে। আর যদি কুরসির মায়া করি, সম্পদের মায়া করি, অর্থের মায়া করি এই মোহাম্মদী ইসলাম আবার ধ্বংস হয়ে যাবে। দয়া করে নিজেকে পরিবর্তন করুন। অনুরোধ করি, দয়া করে নিজেকে পরিবর্তন করুন। আমাকে একটু সুযোগ দিন। আমি গোলামকে একটু সুযোগ দিন আপনাকে আলোকিত করার। আপনার সিনায় ঐ আলো ঢুকানোর একটু সুযোগ দিন। মহান মালিক আমাদের সকলের সহায় হন।


পরিশেষে মোহাম্মদী ইসলামের নেতৃত্ব প্রদানকারী মহামানব ইমাম প্রফেসর ড. কুদরত এ খোদা (মা. আ.) হুজুর তাঁর বাণী মোবারক প্রদান শেষে আখেরি মোনাজাত প্রদান করেন।

editor

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *