-ইমাম প্রফেসর ড. কুদরত এ খোদা
বিশেষ সংবাদদাতা: বিজয়ের এই মাসে একদিকে যেমন দেশ বিজয়ের আনন্দ, অপরদিকে আমাদের মোর্শেদ কেব্লাজানের শুভ জন্মদিন। দুই আনন্দ মিলে যেন একাকার। ১৪ই ডিসেম্বর আমার মোর্শেদ কেব্লাজানের শুভ জন্মদিন। সেই শুভ জন্মদিন স্মরণে আজ সকল দরবার শরীফে, খানকাহ্ শরীফে, জাকের মজলিসে অর্থাৎ সকল জায়গায় আশেকে রাসুল ভাই ও বোনেরা আয়োজন করেছেন। সেই সাথে আমিও বাংলাদেশে ছুটে এসেছি মোর্শেদ কেব্লাজানের শুভ জন্মদিন আপনাদের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করে পালন করার জন্য। ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা জানাই আশেকে রাসুল ভাই ও বোনদের, যারা মোর্শেদকে ভালোবেসে আজ জেলায় জেলায়, খানকাহ্তে খানকাহ্তে, বাড়ি বাড়ি অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছেন। যারা আল্লাহর বন্ধু শাহ্ দেওয়ানবাগীর শুভ জন্মদিন স্মরণে নানাবিধ আয়োজন করেছেন। শীতবস্ত্র বিতরণ, মাংস বিতরণ, তাবারুক বিতরণ, গরিব-দুঃখীদের মাঝে খানার ব্যবস্থা করা, পিঠা বিতরণ করা, মিষ্টান্ন বিতরণ করা এবং কাপড় বিতরণ করার মতো বিভিন্ন সামাজিক আয়োজন করেছেন। আমি আমার অন্তরের অন্তস্থল থেকে আপনাদের ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করি।
মোহাম্মদী ইসলামের নেতৃত্ব প্রদানকারী মহামানব ইমাম প্রফেসর ড. কুদরত এ খোদা (মা. আ.) হুজুর গত ১৫ ডিসেম্বর বাবে রহমত দেওয়ানবাগ শরীফে সূফী সম্রাট দেওয়ানবাগী হুজুর কেব্লাজানের ৭৪তম শুভ জন্মদিন স্মরণে আশেকে রাসুল (সা.) সম্মেলনে হাজার হাজার আশেকে রাসুলদের উদ্দেশে এ কথা বলেন।
ইমাম প্রফেসর ড. কুদরত এ খোদা (মা. আ.) হুজুর বলেন, আল্লাহর বন্ধু শাহ্ দেওয়ানবাগী (রহ.) একজন জ্যোতির্মান মহাপুরুষ ছিলেন। যার আলোর জ্যোতি এতো বড়ো এবং এত ব্যাপক ছিল, যা আমি গোলামের পক্ষে ২/৪ বা ৫টি কথায় বিবরণ দেওয়া সম্ভব নয়। ছোটোবেলা থেকেই তিনি ছিলেন এক জ্যোতির্মান মহাপুরুষ। তিনি আলো ছড়িয়েছেন আপনার-আমার মতো হতভাগা মানুষকে আল্লাহ্কে পাওয়ার জন্য। তিনি ইমাম শাহ্ চন্দ্রপুরী (রহ.)-এর দরবার থেকে আসার পরে ১৯৮৫ সনে ঢাকায় মোহাম্মদী ইসলামের কার্যক্রম শুরু করেন। ১৯৮৫ সন থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত তিনি এই আলো ছড়িয়েছেন। এই আলো তিনি যখন ছড়াচ্ছিলেন, এই আলো ছড়ানোর ফলে তিনি ১১টি দরবার, ২ শতাধিক খানকাহ্ শরীফ, ৫ শতাধিক জাকের মজলিস এবং ৩ কোটি মুরিদ সন্তান আমাদের দিয়ে গেছেন। তিনি তাঁর ৩ কোটি মুরিদের কাছে এই আলো ছড়ানোর ব্যবস্থা করেছিলেন। বিশ্বাস করুন, অলী-আল্লাহ্গণ জগতের বুকে আসেন মোমবাতির মতো আলো ছড়ানোর জন্য। মোমবাতি যেমন নিজেকে পুড়ে জগৎকে আলোকিত করে, অলী-আল্লাহ্গণ জগতে আসেন নিজেকে পুড়ে আপনার-আমার সিনাকে আলোকিত করার জন্য। তিনি নিজে পুড়েছেন, নিজে জ্বলেছেন, তাঁর মুরিদের সিনাকে আলোকিত করার জন্য। তিনি যখন আল্লাহর একত্বের কথা বললেন, জগৎ তাঁর বিরুদ্ধে মামলা দিলো; তিনি যখন আল্লাহ্কে পাওয়ার কথা বললেন জগৎ তাঁকে ভন্ড বললো; তিনি যখন হযরত রাসুল (সা.)-কে পাওয়ার কথা বললেন, একের পর এক অপবাদ মানুষ তাকে দিলো। তবুও তিনি পিছপা হননি। এই নুরের আলো ছড়ানোর জন্য তিনি দীপ্তমান পুরুষ দাঁড়িয়ে থেকেছেন এবং এই মোহাম্মদী ইসলামের পতাকাকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছেন। তিনি আমাদের উপহার দিয়েছেন মোহাম্মদী ইসলাম; তিনি আমাদের উপহার দিয়েছেন আশেকে রাসুল। তিনি আমাদের পরামর্শ দিয়েছেন, চরিত্রবান হওয়ার; তিনি আমাদের পরামর্শ দিয়েছেন, আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য তিনি আমাদের পরামর্শ দিয়েছেন মালিককে খুশি করার জন্য। তাঁর পরামর্শে আজ আমরা গোলামেরা পুনরায় আশেকে রাসুল হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছি।
ইমাম প্রফেসর ড. কুদরত এ খোদা (মা. আ.) হুজুর বলেন, আজ মোর্শেদের ওফাতের সময়ের কথা মনে পড়ে। যেদিনটি কখনো চাইনি। যেদিন এত তাড়াতাড়ি দেখবো বলে আশা করিনি, সেইদিন আমাদের দেখতে হয়েছে। তিনি ওফাতের ২/৩ মাস আগে থেকে সব কাজ শেষ করেও রাতের বেলা বলতেন- “এই কদরকে খবর দাও।” তখন বাজে রাত ১০টা। তিনি তো ১০টায় ঘুমাতেন। গেলাম। জ্বী মালিক। তুমি আমার কাছে বসে থাকো। বললাম, এখন তো আপনার ঘুমানোর সময়। বললেন, “ঘুমাতে তো হবেই, বসো আমার সাথে।” এক নজর চোখের আড়াল করতে চাননি। বারংবার আমাকে বলেছেন, “আমার মুরিদকে তুমি দেখে রেখো। তুমি ছাড়া আমার মুরিদের কেউ থাকবে না। তুমি না দেখে রাখলে এই মুরিদ ধ্বংস হয়ে যাবে।” আমি তো গোলাম মানুষ। আমার যোগ্যতা আল্লাহর বন্ধু শাহ্ দেওয়ানবাগীর ইচ্ছা মাত্র। মোর্শেদের ইচ্ছায় আজও চেষ্টা করছি আপনাদের সেই আলো ছড়িয়ে দিতে৷ আল্লাহ্ আমাকে যতদিন হায়াতে জিন্দেগি দেন, আমি চেষ্টা করবো আপনাদের মাঝে এই আলো ছড়ানোর জন্য। আমি চেষ্টা করবো সেইদিনের জন্য আপনাকে প্রস্তুত করতে, যেদিন আর কেউ দাঁড়াবে না আপনার পাশে; আমি চেষ্টা করবো সেইদিনের জন্য আপনাকে প্রস্তুত করতে, যেদিন আপনি অসহায়, নির্বোধ, একক হিসেবে থাকবেন।
ইমাম প্রফেসর ড. কুদরত এ খোদা (মা. আ.) হুজুর বলেন, আমি মহান রাব্বুল আলামিনের কাছে সাহায্য চাই, তিনি যেন আমাদের দয়া করেন, আমাদের তাঁর কদম মোবারকে আশ্রয় ভিক্ষা দেন। আল্লাহর বন্ধু শাহ্ দেওয়ানবাগীর উসিলায় আমাদের মাফ করে দেন এবং আমাদের প্রস্তুত করেন সেইদিনের জন্য, যেদিন আমরা তাঁর কাছে ফিরে যাবো এবং নিজেদের কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করবো৷ আল্লাহর বন্ধু শাহ্ দেওয়ানবাগীর জন্মদিনে আপনারা যারা এসেছেন, দেশে-বিদেশে যে যেখানে যে আয়োজন করেছেন আমি খুশি হয়েছি। আমাদের মোর্শেদ খুশি হয়েছেন। আমি দোয়া করি, আমার মালিক আপনাদের সবাইকে কবুল করে নিন। আমি দোয়া করি, আমার মালিক আপনাদের মাফ করে দিন। আসুন, আমরা সবাই তওবা পড়ে মহান রাব্বুল আলামিনের কাছে ক্ষমা চাই, তিনি যেন দয়া করে আমাদের সবাইকে মাফ করে দেন।
পরিশেষে মোহাম্মদী ইসলামের নেতৃত্বপ্রদানকারী মহামানব ইমাম প্রফেসর ড. কুদরত এ খোদা (মা. আ.) হুজুর তাঁর বাণী মোবারক প্রদান শেষে আখেরি মোনাজাত প্রদান করেন।