সংকট পেরিয়ে প্রবৃদ্ধিতে শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি

সংকট পেরিয়ে প্রবৃদ্ধিতে শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি

বাণিজ্য ডেস্ক: দুই বছর আগে শুরু হওয়া ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকট ক্রমেই কাটিয়ে উঠছে দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কা। টানা ৯ প্রান্তিকে সংকোচনের পর গত সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে প্রথম প্রবৃদ্ধিতে ফিরল দেশটির অর্থনীতি। গতকাল শনিবার দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানায়, সেপ্টেম্বরে শেষ হওয়া প্রান্তিকে জিডিপি প্রবৃদ্ধি এসেছে ১.৬ শতাংশ। যেখানে এক বছর আগের এ সময়ে ১১.৫ শতাংশ সংকুচিত হয়েছিল।

বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে ঘাটতির কারণে গত বছর ঋণখেলাপি হয় শ্রীলঙ্কা। এর আগে থেকেই অর্থনীতি ছিল সংকোচনে। এক বিবৃতিতে ব্যাংক আরো জানায়, এই সাফল্যের পেছনে বড় ভ‚মিকা রেখেছে পরিবহন, সেবা এবং কৃষি খাতের অগ্রগতি। তবে এ মাসে ইতিবাচক ডাটা দেখা গেলেও এ বছরের ৯ মাসের হিসাবে এখনো অর্থনীতি ৪.৯ শতাংশ সংকোচনে।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) বলেছে, ২০২৩ সালের পুরো বছরের হিসাবে শ্রীলঙ্কার জিডিপি প্রবৃদ্ধি হবে নেতিবাচক ৩.৬ শতাংশ। গত মঙ্গলবার আইএমএফ শ্রীলঙ্কাকে দেওয়া ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি ৩৩৭ মিলিয়ন ডলার ছাড় করেছে। দেশটিকে চার বছরে মোট ২.৯ বিলিয়ন ডলার দেবে ঋণদাতা সংস্থাটি। আইএমএফের মতে, শ্রীলঙ্কার অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা ফিরছে তবে দেশটি এখনো শঙ্কামুক্ত নয়।

২০২১ সালের তৃতীয় প্রান্তিকের পর থেকে টানা ৯ প্রান্তিকে সংকুচিত হয় শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি। গত বছরের এপ্রিলে দুই কোটি ২০ লাখ জনসংখ্যার এ দ্বীপদেশটি ৪৬ বিলিয়ন ডলারের বৈদেশিক ঋণের কিস্তি পরিশোধে ব্যর্থ হয়। এমনকি প্রয়োজনীয় ওষুধ, খাদ্যপণ্য ও জ্বালানি আমদানি করার জন্য প্রয়োজনীয় রিজার্ভ তাদের হাতে ছিল না। ২০২২ সালের মে মাসে নিজেদের ঋণখেলাপি ঘোষণা করে দেশটির সরকার। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের ঘাটতি আর দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে শ্রীলঙ্কায় মাসের পর মাস ধরে মানুষ বিক্ষোভ করে। তাদের প্রতিবাদ ছিল দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে। এই সংকটের কারণে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়ান।

বর্তমানে দেশটির মূল্যস্ফীতি যেমন কমে এসেছে, তেমনি বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও বাড়ছে। বৈদেশিক ঋণ পরিশোধও শুরু করেছে শ্রীলঙ্কা। বাংলাদেশের কাছে তার যে ঋণ ছিল তা-ও পরিশোধ করেছে।

editor

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *