বাঙালিদের ওপর বড় অত্যাচার হয়েছিল: ইমরান খান

বাঙালিদের ওপর বড় অত্যাচার হয়েছিল: ইমরান খান

দেওয়ানবাগ ডেস্ক: জামিনে মুক্তির পর জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর কঠোর সমালোচনা করেছেন পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। তিনি বলেছেন, ‘আজ আমাদের বোঝা উচিত যে, পূর্ব পাকিস্তানে বাঙালিদের ওপর বড় অত্যাচার চালানো হয়েছে। ওদের যে পার্টি নির্বাচনে জিতেছিল, যাকে তারা প্রধানমন্ত্রী বানাতে চেয়েছিল, বানানো উচিত ছিল। কিন্তু তার বিরুদ্ধে মিলিটারি অ্যাকশন নিয়ে দেশের বিভাজন উসকে দেওয়া হয়েছে।’ সূত্র: ডন, আলজাজিরা, বিবিসি, রয়টার্স। গত শনিবার লাহোরে তার জামান পার্কের বাসা থেকে জাতির উদ্দেশে ভার্চুয়ালি দেওয়া ভাষণে তিনি এ কথা বলেন। তার ভাষণ ইউটিউবে প্রচারিত হয়। ভাষণে ইমরান খান সামরিক বাহিনীকে উদ্দেশ করে আরও বলেন, ‘আমি আজ আবারও আপনাদের পূর্ব পাকিস্তানের কথা স্মরণ করিয়ে দিতে চাই। আমার জীবদ্দশায় আমি পূর্ব পাকিস্তান দেখেছি। ১৯৭১ সালের মার্চে আমি পূর্ব পাকিস্তানে সেখানকার অনূর্ধ্ব-১৯ দলের বিরুদ্ধে ম্যাচ খেলতে গিয়েছিলাম। আমাদের যে জাহাজটি ফিরে এসেছিল (পশ্চিম পাকিস্তানে) সেটি ছিল শেষ জাহাজ। আমার এখনও মনে আছে- তাদের কী পরিমাণ ঘৃণা ছিল পাকিস্তানের প্রতি। অথচ এখানে আমাদের এসব জানাই ছিল না।’ তিনি বলেন, ‘আজ আমাদের বোঝা উচিত যে, একাত্তরের ঘটনায় আমাদের ৯০ হাজার সৈন্য কয়েদি হয়ে গেল, আত্মসমর্পণ করল। কী পরিমাণ ক্ষতি হলো আপনারা চিন্তাও করতে পারবেন না।’


ইমরান খান ওই সময়ের শাসকদের সমালোচনা করে বলেন, ‘তখন বন্ধ কামরায় বসে সিদ্ধান্ত হয়েছিল। কয়েকজন মিলে বসে পড়েন সিদ্ধান্ত নিতে, যারা জানেনই না বাকি পৃথিবী কীভাবে চলে। এসব সিদ্ধান্তের কারণে ক্ষতি হলো কি না, সেটাও তারা কাউকে জানতে দেন না।’ ইমরান খান তাকে গ্রেফতারের জন্য সেনাবাহিনী দায়ী উল্লেখ করে বলেন, ‘আমি তাদের বলেছিলাম আমাকে ওয়ারেন্ট দেখাতে। আমি তাদের সঙ্গে যেতে প্রস্তুত ছিলাম। আমরা সেখানে শান্তভাবে বসে ছিলাম, কিন্তু তারা জানালার কাচ ভেঙে এমনভাবে আক্রমণ করেছে যেন পাকিস্তানের সবচেয়ে বড় সন্ত্রাসী সেখানে বসে আছে। রেঞ্জাররা সেনাবাহিনীরই অংশ, কাউকে গ্রেফতার করা তো পুলিশের কাজ। রেঞ্জাররা সেখানে কী করছিল?’ সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে তাকে হত্যার অভিযোগ তুলে ইমরান বলেন, ‘আমি জানি আমাকে গত বছর হত্যার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। এ পরিকল্পনায় শীর্ষ থেকে নিচ পর্যন্ত জড়িত সবার নাম আমি জানি। আমি জানি সবুজ বাতি কে দিয়েছে। আবার তাদের সবুজ বাতি কে দিয়েছে তাও আমি জানি। তাদের সঙ্গে যোগসাজশ ছিল দুই বেসামরিক ব্যক্তি শাহবাজ শরিফ (পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী) ও রানা সানাউল্লাহর (পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী)।’ গ্রেফতারের পর গণমাধ্যমে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে দাবি করে ইমরান খান প্রশ্ন করেন, ‘আমাকে গ্রেফতারের পরপরই কেন মিডিয়ার ওপর কড়াকড়ি করা হলো? সোশ্যাল মিডিয়া বন্ধ করে দেওয়া হলো?’ ইমরান খানের মুক্তি দাবিতে রাস্তায় নেমে আসা সমর্থক, বিশেষ করে নারী সমর্থকদের ওপর সেনাবাহিনীর সদস্যরা ‘নির্লজ্জের মতো’ দমন-নিপীড়ন করেছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। পাকিস্তানের ইন্টার সার্ভিসেস পাবলিক রিলেশনসের পরিচালকের নাম নিয়ে ইমরান খান বলেন, ‘আপনার লজ্জা হওয়া উচিত। আপনি রাজনীতিতে ঢুকে পড়েছেন। আপনি কেন নিজের রাজনৈতিক দল গঠন করছেন না? আমি এখন ভীষণ ক্ষুব্ধ, নিজেকে সংযত করার চেষ্টা করছি। কারণ আপনি না জেনে আমার বিষয়ে কথা বলেছেন।’

editor

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *