বাংলাদেশের মাটিতে রাসায়নিক উপাদানের পরিমাণ কমছে

বাংলাদেশের মাটিতে রাসায়নিক উপাদানের পরিমাণ কমছে

দেওয়ানবাগ ডেস্ক: বাংলাদেশের মাটির স্বাস্থ্য দুর্বল হয়ে পড়ছে। মাটিতে রাসায়নিক উপাদানের পরিমাণ কমে আসছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, মাটির যত্ন না নেওয়ার কারণে এমন পরিস্থিতি দেখা দিচ্ছে। দীর্ঘ মেয়াদে এর বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে খাদ্য উৎপাদনে।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের (এসআরডিআই) কর্মকর্তারা বলছেন, সারা দেশের মাটিতেই প্রয়োজনের তুলনায় নাইট্রোজেন, ফসফরাস, পটাশিয়াম, সালফার, দস্তা ও বোরনের ঘাটতি দেখা যাচ্ছে। এছাড়া অঞ্চলভেদে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম ও ম্যাঙ্গানিজের ঘাটতি আছে। দেশের প্রায় সব উপজেলার মাটি পরীক্ষা করে এসআরডিআই এ তথ্য পেয়েছে।

মৃত্তিকাবিজ্ঞানীরা মাটির তিন ধরনের চরিত্র বা বৈশিষ্ট্যের কথা বলেন। সেগুলো হলো ভৌত, রাসায়নিক ও জৈবিক। মাটির রং, মাটি নরম না শক্ত-এগুলো ভৌত চরিত্রের অংশ। বিভিন্ন ধরনের পদার্থ মাটির রাসায়নিক চরিত্র নির্ধারণ করে। অন্যদিকে মাটিতে থাকে অতি ক্ষুদ্র অণুজীব থেকে ছোট ছোট পোকা ও কেঁচোর মতো প্রাণী। এদের উপস্থিতি মাটির জৈব চরিত্র ঠিক করে দেয়।
মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক মো. কামারুজ্জামান বলেন, ‘সার্বিকভাবে দেশের মাটির স্বাস্থ্য ভালো নেই। মাটির মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার হচ্ছে। মাটির কোনো বিশ্রাম নেই। অতিব্যবহারে মাটির তিনটি চরিত্রই ক্ষতিগ্রস্ত।’
মাটি নিয়ে গবেষণার কমতি নেই। সে তুলনায় মাটি সংরক্ষণ বা মাটির স্বাস্থ্য সুরক্ষায় উদ্যোগ চোখে পড়ে না। এই প্রেক্ষাপটে বিশ্ব মাটি দিবস পালিত হয়েছে। দিবসটির এ বছরের প্রতিপাদ্য ‘মাটি: যেখান থেকে খাদ্যের যাত্রা শুরু’।

সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলার ৯টি ইউনিয়নে ভৌত চরিত্র অনুযায়ী ৯ ধরনের মাটি (মৃত্তিকা দল) আছে। সব ধরনের মাটির রাসায়নিক গুণাবলি পরীক্ষা করেছে মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউট। তাতে দেখা গেছে, মাটিতে প্রয়োজনীয় রাসায়নিকের পরিমাণ কম।
দক্ষিণ সুরমা উপজেলার মতো ৪৬০টি উপজেলার মাটির গুণাগুণ বা রাসায়নিকের তথ্য পরীক্ষা করা হয়েছে। তাতে একই চিত্র পাওয়া গেছে। এ অবস্থায় মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউট প্রতিটি উপজেলার ভূমি ও মাটি ব্যবহার নির্দেশিকা তৈরি করেছে। কোন জমিতে কোন ফসলের জন্য কোন সার কী পরিমাণে ব্যবহার করতে হবে, তার পরামর্শ আছে নির্দেশিকায়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্তিকা, পানি ও পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ এনায়েত হোসেন বলেন, মাটির স্বাস্থ্য দিনে দিনে নষ্ট হচ্ছে। মাটির সুষ্ঠু ব্যবহারের আপাতত কোনো বিকল্প দেখা যাচ্ছে না। তবে উপজেলাভিত্তিক এ নির্দেশিকা অনুসরণ করা যেতে পারে।

editor

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *