ওআইসির সম্মেলনে ফিলিস্তিনি নারীদের দুর্দশার চিত্র

ওআইসির সম্মেলনে ফিলিস্তিনি নারীদের দুর্দশার চিত্র


দেওয়ানবাগ ডেস্ক: মুসলিম বিশ্বের সর্ববৃহৎ সংস্থা অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশনের (ওআইসি) আয়োজনে সৌদি আরবের জেদ্দায় তিন দিনব্যাপী (৬-৮ নভেম্বর) আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ‘ইসলামে নারীর মর্যাদা ও ক্ষমতায়ন’ শীর্ষক এই সম্মেলনে ইসরায়েলি হত্যাযজ্ঞের নিন্দা জানিয়ে ফিলিস্তিনি নারী ও শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহবান জানানো হয়। এতে মুসলিম নারীদের সাফল্যের ইতিহাস তুলে ধরার পাশাপাশি নারীর ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠায় ইসলামের শিক্ষার কথা বলা হয়। তাছাড়া সম্মেলনে ‘ইসলামে নারীর মর্যাদা শীর্ষক জেদ্দা দলিল’ প্রকাশ করা হয়।
সম্মেলনে বক্তব্য দিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং জাতিসংঘের উপমহাসচিব আমিনা মোহাম্মদসহ মুসলিম বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা। তাঁরা ফিলিস্তিনি নারীদের দুঃখ-দুর্দশার কথা তুলে ধরেন।
উদ্বোধনী বক্তব্যে ওআইসি মহাসচিব ড. হুসাইন ইবরাহিম তোহা বলেন, ‘সম্মেলনটি এমন সময়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে যখন ফিলিস্তিনিরা ইসরায়েলি আগ্রাসনের মুখোমুখি হচ্ছে, বিশেষত গাজার নারী, শিশু, বয়স্ক ও সাধারণ মানুষ বোমাবর্ষণে নিহত হচ্ছে। ভয়াবহ এই ট্র্যাজেডির সবচেয়ে দুর্বল দিক হলো তাদের উল্লেখযোগ্যসংখ্যককে নীরবে হত্যা করা হচ্ছে।
গাজার চলমান ট্র্যাজেডিতে সবাই সম্মেলনে আলোচনা করতে বাধ্য হচ্ছে। পবিত্র মসজিদুল আকসা, ফিলিস্তিনি জনগণ, বিশেষত নারীদের সুরক্ষায় সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। যেন ইসরায়েলি দখলদারিতে মানুষ নিজ ভূমি থেকে বিচ্ছিন্ন না হয়ে পড়ে।’
এদিকে গাজায় মানবিক বিপর্যয়ের কথা উল্লেখ করে জাতিসংঘের উপমহাসচিব আমিনা মোহাম্মদ বলেন, ‘আমরা এই অঞ্চলে ও পুরো বিশ্বে নিজেদের সামর্থ্য মতো কাজ করে ভয়াবহ সহিংসতা ও যন্ত্রণার অবসান করতে চাই, বিশেষত এই সময়ে সবাইকে নিয়ে শান্তির টেবিলে বসা খুবই জরুরি। মুসলিম বিশ্বাসের দাবি অনুসারে, প্রয়োজনের সময় আমাদের প্রতিবেশীদের যতœ নেওয়া আমাদের দায়িত্ব।’ এ সময় তিনি ইসলামে নারীর ভূমিকার কথা উল্লেখ করে শিক্ষা, অর্থনীতিসহ শান্তি প্রতিষ্ঠায় সবাইকে এগিয়ে আসার আহবান জানান।
গাজায় চলমান ইসরায়েলি হত্যাযজ্ঞের ৩২ দিনে ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছে, যার মধ্যে চার হাজার ১০৪টি শিশু ও দুই হাজার ৬৪১ জন নারী রয়েছে। আহত হয়েছে ২৫ হাজারেরও বেশি লোক। নিহতদের মধ্যে রয়েছে জাতিসংঘের ৮৮ জন কর্মী ও ৩৬ জন সাংবাদিক।
নৃশংস হত্যাযজ্ঞ বন্ধের দাবিতে প্রায় সব দেশ সরব হলেও যুদ্ধবিরতিতে বিশ্বনেতাদের চরম অনীহা দৃশ্যমান। পরিস্থিতি চরম সীমা ছাড়িয়ে যাওয়ায় জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ অনেকে মানবিক যুদ্ধবিরতির আহবান জানানো শুরু করেছে। এদিকে আগামী ১২ নভেম্বর ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে জরুরি সম্মেলন ডেকেছে ওআইসি।

editor

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *