সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠায় করণীয়

সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠায় করণীয়

তালহা হাসান
সব জাতি ও গোষ্ঠীর মধ্যে সহযোগিতাপূর্ণ সম্পর্কের ভিত্তিতে শান্তিপূর্ণ সমাজ গঠন করা যায়। পবিত্র কোরআনে মানব পরিচিতি সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। এর মাধ্যমে মানবজাতির মধ্যে সংঘাত বিলোপ করা এবং শান্তি প্রতিষ্ঠা করাই প্রধান উদ্দেশ্য। ইরশাদ হয়েছে, ‘হে মুমিনরা, তোমরা পরিপূর্ণভাবে ইসলামে প্রবেশ করো এবং শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ কোরো না, নিশ্চয় সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু।
’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ২০৮)
সহযোগিতাপূর্ণ সম্পর্ক জোরদার : ইসলামী বিশ্বাস অনুসারে পূর্ববর্তী ধর্ম ও বিশ্বাস আল্লাহর কাছে অগ্রহণযোগ্য। ইসলামের আগমনের মাধ্যমে পূর্ববর্তী শরিয়তের অবসান ঘটেছে। তবে কাউকে জোরপূর্বক ইসলাম গ্রহণ করতে বলা হয়নি, বরং সবার সঙ্গে সহযোগিতাপূর্ণ আচরণ করার নির্দেশনা রয়েছে। যেমন—হিজরতের সময় মহানবী মুহাম্মদ (সা.) পথনির্দেশক হিসেবে আবদুল্লাহ বিন উরাইকিতের সহযোগিতা নিয়েছেন।
আর তখন তিনি মুশরিক ছিলেন। তা ছাড়া ইরশাদ হয়েছে, ‘আমি আপনার ওপর সত্যসহ কিতাব অবতীর্ণ করেছি, যা আগের কিতাবের সমর্থক ও সংরক্ষকস্বরূপ। সুতরাং আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন সে অনুসারে আপনি তাদের বিচার নিষ্পত্তি করুন এবং যে সত্য আপনার কাছে এসেছে তা ছেড়ে তাদের খেয়ালখুশির অনুসরণ করবেন না…।’ (সুরা : মায়িদা, আয়াত : ৪৮)
পূর্বপুরুষের অহমিকা বিলোপ : শান্তিপূর্ণ সমাজ গড়তে মানুষের মধ্যে বড়ত্ব ও অহমিকা প্রতিরোধ করা জরুরি।
ইরশাদ হয়েছে, ‘আপনি বলুন, হে কিতাবিরা, তোমরা এমন কথায় আসো, যা আমাদের ও তোমাদের মধ্যে একই, যেন আমরা আল্লাহ ছাড়া কারো ইবাদত না করি, কোনো কিছুকে শরিক না করি এবং আমাদের মধ্যে কেউ যেন অন্য কাউকে রব হিসেবে গ্রহণ না করে, যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয় তাহলে তোমরা সাক্ষী থাকো অবশ্যই আমরা মুসলিম।’ (সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ৬৪)
সব ক্ষেত্রে ন্যায়নীতি অনুসরণ : শান্তিপূর্ণ সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য সাক্ষ্য-প্রমাণের ক্ষেত্রে ন্যায়নিষ্ঠাপূর্ণ হওয়া জরুরি। তাই ইরশাদ হয়েছে, ‘হে মুমিনরা, তোমরা ন্যায়বিচারে দৃঢ়প্রতিষ্ঠিত থাকবে আল্লাহর সাক্ষী হিসেবে, যদিও তা তোমাদের নিজেদের বা বাবা-মা বা আত্মীয়-স্বজনের বিরুদ্ধে হয়, সে বিত্তবান হোক বা বিত্তহীন হোক, আল্লাহ উভয়েরই ঘনিষ্ঠতর, অতএব, তোমরা ন্যায়বিচার না করতে প্রবৃত্তির অনুসরণ কোরো না…।’
(সুরা : নিসা, আয়াত : ১৩৫)
কল্যাণভিত্তিক সমাজ গঠন : ভালো কাজের মাধ্যমে যে কেউ শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করতে পারবে। এর প্রতিদান ও শ্রেষ্ঠত্ব নির্দিষ্ট ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর জন্য সীমিত নয়, বরং তা সবার জন্য প্রযোজ্য।
কারণ সব মানুষের মূল উৎস এক ও অভিন্ন। আর সবার মধ্যে ভালো বা মন্দ কাজ করার যোগ্যতা রয়েছে। তাই ইরশাদ হয়েছে, ‘আহলে কিতাবের মধ্যে এমন মানুষ আছে, যার কাছে আপনি বিপুল সম্পদ আমানত রাখলেও সে ফেরত দেবে, আবার এমন লোকও আছে, যার কাছে একটি দিনারও আমানত রাখলে সে ফেরত দেবে না, তা এই কারণে যে তারা বলে নিরক্ষরদের প্রতি আমাদের কোনো বাধ্যবাধকতা নেই এবং তারা জেনেশুনে আল্লাহ সম্পর্কে মিথ্যা বলে।’ (সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ৭৫)

editor

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *