রেমিট্যান্স আয় কমছে

রেমিট্যান্স আয় কমছে

বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছরই কর্মী যাচ্ছে বিদেশে। বিশেষত, সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে। তারপরও রেমিট্যান্স বাড়ার বদলে ক্রমান্বয়ে কমছে। বিদেশে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শ্রমবাজার সৌদি আরব। প্রতি বছর যত মানুষ কাজ নিয়ে বিদেশে যায়, তার অর্ধেকই যায় মধ্যপ্রাচ্যের ওই দেশটিতে। গত দেড় বছরে ৮ লাখ ৩৮ হাজারের বেশি কর্মী সৌদি আরব গেছেন কাজ নিয়ে। কর্মীর সংখ্যা বাড়লেও একই সময়ে সৌদি আরব থেকে রেমিট্যান্সের পরিমাণ ১৭ শতাংশ কমেছে। ২০২১-২২ অর্থবছরে দেশটি থেকে ৪৫৪ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে। আর ২০২২-২৩ অর্থবছরে এসেছে ৩৭৬ কোটি ডলার। এমনকি চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে প্রবাসী আয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে নেমে এসেছে সৌদি আরব। শুধু সৌদি আরব নয়, অন্যান্য দেশ থেকেও রেমিট্যান্সের পরিমাণ কমেছে। রেমিট্যান্স কমার প্রধান কারণ হুন্ডি ও টাকা পাচার। হুন্ডির কারণে বৈদেশিক কর্মসংস্থানের সঙ্গে প্রবাসী আয়ের মিল নেই। গেল দেড় বছরে যেসব দেশে সবচেয়ে বেশি কর্মী গেছে, সেসব দেশ থেকে রেমিট্যান্সের পরিমাণ কমেছে গড়ে ১০ শতাংশ। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোয় হুন্ডির মাধ্যমে অর্থ লেনদেন সহজ আর লাভজনক হওয়ায় ব্যাংকিং চ্যানেলে পাঠানো প্রবাসী আয় কমছে। অভিযোগ রয়েছে, সরকারবিরোধীদের অপপ্রচার এবং হুন্ডি ব্যবসায়ীদের কারসাজিতে রেমিট্যান্স আয় বাড়ার বদলে কমছে। হুন্ডি সিন্ডিকেটের কাছ থেকে বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ে তা সরবরাহ করা হচ্ছে সোনা চোরাকারবারিদের কাছে। বাংলাদেশ সোনা চোরাচালানের অন্যতম প্রধান ট্রানজিট পয়েন্ট হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। কাস্টমসহ বিমানবন্দরের দায়িত্বে থাকা বিভিন্ন সংস্থার অসৎ কর্মীদের যোগসাজশে মধ্যপ্রাচ্যের অন্য দেশগুলো থেকে আসছে বিপুল পরিমাণ সোনা এবং তা প্রতিবেশী দেশে চলে যাচ্ছে। কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার অভাবে দেশের অর্থনীতি হুন্ডিবাজদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়ছে। হুন্ডি বন্ধের সবচেয়ে সহজ পদ্ধতি হলো- যারা বিদেশে কাজ নিয়ে গেছেন তাদের ওপর নির্ভরশীল পরিবারগুলোর ওপর নজরদারি রাখা। এটি সম্ভব হলে হুন্ডিবাজদের দৌরাত্ম্য অন্তত ৯০ শতাংশ বন্ধ করা সম্ভব হবে।

editor

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *