বৈদেশিক কর্মসংস্থানে বাড়ছে নারীর সংখ্যা

বৈদেশিক কর্মসংস্থানে বাড়ছে নারীর সংখ্যা

নারী ডেস্ক: বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন দেশে পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও কাজ করতে যান। দিন যত বাড়ছে নারীদের যাওয়ার সংখ্যাও তত বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিএমইটি বলছে, ১৯৯১ সাল থেকে নারীরা দেশের বাইরে কাজ করতে যাচ্ছেন। বিএমইটির তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সাল পর্যন্ত গত ৩১ বছরে দেশের বাইরে কাজ করতে গিয়েছেন ১১ লাখ পাঁচ হাজার ৯২২ জন নারী।
এর মধ্যে ২০১৭ সালে সবচেয়ে বেশি নারী কর্মী দেশের বাইরে কাজ করতে গিয়েছেন। ২০১৭ সালে এক লাখ ২১ হাজার ৯২৫ জন নারী কাজ করতে গিয়েছেন।
বিএমইটির তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর জানুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত ৩৬ হাজার ৪৫৫ জন নারী কাজ করতে গিয়েছেন। এদিকে গত বছর এই পাঁচ মাসে গিয়েছিলেন ৫০ হাজার ৩৬৩ জন নারী। গত বছরের চাইতে এ বছর ২৭.৬২ শতাংশ নারী কম গিয়েছেন।

মধ্যপ্রাচ্যেই সবচেয়ে বেশি নারী
বিএমইটির তথ্য বলছে, বৈদেশিক কর্মসংস্থানের জন্য বাংলাদেশ থেকে সবচেয়ে বেশি নারী কর্মী গিয়েছেন মধ্যপ্রাচ্যে। এর মধ্যে সৌদি আরবেই সবচেয়ে বেশি নারী কর্মী গিয়েছেন। চলতি বছর সৌদি আরব গিয়েছেন ২৬ হাজার ১৬৯ জন, যা মূল সংখ্যার ৭১.৭৮ শতাংশ।
এরপর গিয়েছেন ওমানে। ওখানে গিয়েছেন তিন হাজার ২২৭ জন, যা মূল সংখ্যার ৮.৮৫ শতাংশ। ওমানের পর জর্ডানের অবস্থান। জর্ডানে গিয়েছেন তিন হাজার ২০৮ জন, যা মূল সংখ্যার ৮.৮০ শতাংশ। জর্ডানের পরে রয়েছে যুক্তরাজ্য। যুক্তরাজ্যে গিয়েছেন এক হাজার ৭৪ জন নারী, যা মূল সংখ্যার ২.৯৫ শতাংশ।
বিএমইটির তথ্যে দেখা যায়, গত বছর জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এক লাখ পাঁচ হাজার ৪৬৬ জন নারী কর্মী গিয়েছেন। এর মধ্যে সৌদি আরবে ৭০ হাজার ২৭৯ জন, ওমানে ১৬ হাজার ৫৪৪ জন ও জর্ডানে ১১ হাজার ৮৭৯ জন নারী কর্মী গিয়েছেন।

মধ্যপ্রাচ্যে নির্যাতিত নারীরা
মধ্যেপ্রাচ্যে বিভিন্ন সময় নারী নির্যাতনের কথা শোনা যায়। এমনকি আত্মহত্যার কথাও শোনা যায়। গত বছর মধ্যপ্রাচ্য থেকে বাংলাদেশে ৭১৪ জন নারীর লাশ এসেছে। এ ছাড়া গত সাত বছরে ২৭০ জন নারী মধ্যেপ্রাচ্যে আত্মহত্যা করেছেন।
সম্প্রতি সৌদি থেকে ১২ জন নারী নির্যাতনের শিকার হয়ে ফিরে আসেন। আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) সহায়তায় দেশে ফিরে আসেন তাঁরা।
এপিবিএনের ভাষ্য মতে, সৌদি আরব যাওয়ার পরপরই এই নারী কর্মীদের মোবাইল ফোনসেট কেড়ে নেওয়া হয়। পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে দেওয়া হতো না। দিনে দুইবারও ঠিকমতো খাবার দেওয়া হতো না। চাবুক দিয়ে প্রহার করা হতো তাঁদের। গৃহকর্তা স্বামী ও স্ত্রী দুজনে মিলেই মারধর করতেন। বোতল দিয়ে আঘাতও করা হতো।
নারী কর্মীদের তাঁদের মালিকরা সরাসরি কিনে নেওয়ার প্রস্তাব দেন বলে জানান রামরুর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারপারসন তাসনিম সিদ্দিকী। তিনি বলেন, ‘ওই দেশের মালিকরা আমাদের অভিবাসী কর্মীদের দাসী হিসেবে ব্যবহার করে। নারীদের সরাসরি কিনে নেওয়ার প্রস্তাব দেয়। কোনো নারী এতে বাধা দিলে তখনই শুরু হয় নির্যাতন। এ সংকট মোকাবেলা করতে হলে আন্তর্জাতিক ফোরামে আলাপ তুলতে হবে। আন্তর্জাতিক ফোরামের মাধ্যমে এ সমস্যা দূর করতে হবে।’

editor

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *