দেওয়ানবাগ ডেস্ক: দেশে অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়া বা দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে প্রধান লক্ষ্যবস্তু করছে মানব পাচারকারীরা। পাচারের শিকার ব্যক্তিদের অর্ধেকের বেশি জীবিকার প্রয়োজনে পাচারকারীদের ফাঁদে পা দেন।
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার বাসিন্দারাও পাচারের শিকার হচ্ছেন। মাদক নিয়ন্ত্রণ ও অপরাধ প্রতিরোধে কাজ করা জাতিসংঘের সংস্থা ইউএনওডিসি, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও বাংলাদেশ সরকারের যৌথ উদ্যোগে পরিচালিত প্রথম জাতীয় মানব পাচারবিষয়ক গবেষণায় এ কথা বলা হয়েছে। গতকাল রাজধানীর কারওয়ান বাজারের একটি হোটেলে এই গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
বাংলাদেশ সরকারের সহযোগিতায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের গ্লোবাল অ্যাকশন অ্যাগেইনস্ট ট্রাফিকিং ইন পার্সন অ্যান্ড স্মাগলিং অব মাইগ্র্যান্টস প্রজেক্ট এবং ইউএনওডিসির ট্রেন্ড অ্যানালাইসিস শাখার সহায়তায় গবেষণাটি পরিচালিত হয়।
গবেষণায় বলা হয়েছে, মানব পাচারকারীদের ফাঁদে পা দেওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে সবচেয়ে বেশিসংখ্যক মানুষ জীবিকার তাগিদে এই পথে যান। তুলনামূলক দারিদ্র্যের হার বেশি এমন জেলার লোকেরাই বেশি পাচারের শিকার হয়েছে।
এরমধ্যে রংপুর অঞ্চলের পাঁচ জেলা, বান্দরবান, কিশোরগঞ্জ, মাগুরা ও জামালপুর জেলার বাসিন্দাদের লক্ষ্যবস্তু বানিয়ে বিদেশে পাচার করছে। বৈধভাবে শ্রমিক হিসেবে বিদেশে যেতে অনেক বেশি অর্থ খরচ করতে হয়। দরিদ্র মানুষ অর্থ না থাকায় তারা দালালের খপ্পরে পড়ে পাচারের শিকার হচ্ছেন।
গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। তিনি বলেন, বর্তমানে মানব পাচার বড় সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে। মানব পাচারে সক্রিয় দালাল চক্র অনলাইন ও অফলাইনে সক্রিয় রয়েছে। তারা নানা ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহার করে মানুষকে ফাঁদে ফেলে পাচার করছে। অনেক ক্ষেত্রে নারী ও শিশুদের পাচারের পর যৌনকর্মে বাধ্য করা হচ্ছে তাদের। ভুক্তভোগীদের আইনি সুরক্ষা দেওয়ার বিষয়ে সরকার চেষ্টা করছে। এ গবেষণায় দেশের মানব পাচার পরিস্থিতি নিয়ে যেসব তথ্য রয়েছে, যেসব সমস্যা চিহ্নিত করা হয়েছে, সেগুলো সমাধানে ভবিষ্যতে কর্মপরিকল্পনা করা হবে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমেদ, প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি উপস্থিত ছিলেন।