পায়রায় যুক্তরাষ্ট্র ব্লু ইকোনমিতে বিশ্বব্যাংক

পায়রায় যুক্তরাষ্ট্র ব্লু ইকোনমিতে বিশ্বব্যাংক

দেওয়ানবাগ ডেস্ক: বাংলাদেশের সমুদ্রবন্দরগুলোর অবকাঠামো উন্নয়নে যুক্ত হতে যখন আগ্রহ দেখাচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, তখন একই সঙ্গে (সুনীল অর্থনীতি) ব্লু ইকোনমিতে বিনিয়োগের আগ্রহ দেখাচ্ছে বিশ্বব্যাংক। সচিবালয়ে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের বৈঠকের পরদিনই ব্লু ইকোনমিতে বিনিয়োগের লক্ষ্যে ওই মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোস্তফা কামালের সঙ্গে বৈঠক করেন বিশ্বব্যাংকের কর্মকর্তারা।
বৈঠকের বিষয়টি নিশ্চিত করে নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব জানান, ব্লু ইকোনমিতে কী ধরনের বিনিয়োগ হতে পারে- সেই সম্পর্কে আমাদের কাছে জানতে চেয়েছে বিশ্বব্যাংক।


এর আগে গত মঙ্গলবার সচিবালয়ে নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরীর সঙ্গে বৈঠক করেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। বৈঠক শেষে প্রতিমন্ত্রী বলেন, মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর, চট্টগ্রাম বন্দর, মোংলা বন্দর ও পায়রা বন্দরে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।


নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, দেশে বর্তমানে চট্টগ্রাম, মোংলা, পায়রা ও মাতারবাড়ি এই চারটি সমুদ্রবন্দর রয়েছে। এসব বন্দরের অবকাঠামো উন্নয়ন কার্যক্রম একটি চলমান প্রক্রিয়া। এর মধ্যে চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে কিছু প্রকল্প প্রস্তাব রয়েছে, যেগুলোতে বিদেশি অনেক সংস্থাই আগ্রহ প্রকাশ করেছে। কিছু প্রকল্প প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে। মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দরের সঙ্গে যুক্ত আছে জাপান। পায়রা বন্দরের বিষয়ে চীন, ভারতসহ বেশ কিছু উন্নয়ন সহযোগীর প্রস্তাব রয়েছে। এখন যুক্তরাষ্ট্র এই বন্দরের অবকাঠামো উন্নয়নে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব দিলে সরকার তা ইতিবাচকভাবে পর্যালোচনা করবে। সূত্র জানায়, এর আগেও বন্দর অবকাঠামো উন্নয়নে সহায়তার বিষয়ে আগ্রহ দেখিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ২০২০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত জো-অ্যান ওয়াগনারের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল চট্টগ্রাম বন্দর পরিদর্শনে গিয়ে জানান, বন্দরের জট কমানো ও কার্যক্ষমতা বাড়ানোসহ বিশেষ জ্ঞান, দক্ষতা ও ব্যবস্থা দিতে যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলো প্রস্তুত। পরে, দেশটির কৃষি বিভাগ ইউএসডিএ (ইউনাইটেড স্টেটস ডিপার্টমেন্ট অব এগ্রিকালচার)’র একটি প্রতিনিধি দল ২০২১ সালের ডিসেম্বরে বাংলাদেশ সফরে এসে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর পরিদর্শনে যান। তারা সেখানে আমদানি-রপ্তানি সংক্রান্ত সুযোগ-সুবিধাগুলো সম্পর্কে খোঁজখবর নেন। পরে বন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠকে তারা একটি প্রকল্পের আওতায় আমদানি-রপ্তানি পণ্য সংরক্ষণের জন্য কোল্ড স্টোরেজ নির্মাণের প্রস্তাব দেন। এরই ধারাবাহিকতায় দেশটির বাণিজ্য দফতরের আমন্ত্রণে নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল যুক্তরাষ্ট্র সফর করেন।


বিষয়টি তুলে ধরে নৌ প্রতিমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, এর আগে ইউএস ট্রেডের আমন্ত্রণে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউিটিএ) একটি দল ১৪ দিন আমেরিকা সফর করেছিলাম। তখন অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন ও মেরিটাইম নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় আমরা কথা বলেছি। আমেরিকার বাণিজ্য ও উন্নয়ন সংস্থা (ইউএসটিডিএ), এক্সিম ব্যাংক, তারা এখানে কাজ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। খালিদ মাহমুদ চৌধুরী আরও বলেন, পায়রা বন্দর নিয়ে তাদের (যুক্তরাষ্ট্র) বলেছি যে, এটি নতুন একটি বন্দর, এখানে অনেক ধরনের সুযোগ আছে। যুক্তরাষ্ট্র বিনিয়োগ করতে চাইলে সেটা তারা করতে পারবে। এ নিয়ে পায়রা বন্দরকে বলব। পায়রা বন্দরের চেয়ারম্যানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হবে, কী কী ধরনের সুযোগ আছে, তা তারা জানতে চাইবে। এ বিষয়ে জানতে পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল গোলাম সাদেক, এনজিপি, এনডিসি, এনসিসি, পিএসসি, বিএন-এর অফিশিয়াল নম্বরে যোগাযোগ করেও সংযোগ পাওয়া যায়নি। পায়রা বন্দরের প্রকল্প পরিচালক ক্যাপ্টেন এম মনিরুজ্জামান (ই), বিএন জানান, এই বন্দরের অবকাঠামো উন্নয়নে বেশ কিছু দেশের বিনিয়োগ প্রস্তাব আছে। সরকার তা পর্যালোচনা করছে। বর্তমানে সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে উন্নয়ন কার্যক্রম চলছে।

editor

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *