মোর্শেদ কেবলাজান নিজেকে আলোকিত করে জগতকে আলোকিত করেছেন, এবার আমি চেষ্টা করছি আপনাদের আলোকিত করতে – ইমাম প্রফেসর ড. কুদরত এ খোদা
বিশেষ সংবাদদাতা: আজ বিশ্ব আশেকে রাসুল (সা.) সম্মেলন। আজ থেকে দীর্ঘ ৪/৫ মাস পূর্বে এই দরবার শরীফে বসে বলেছিলাম, আমি আশেকে রাসুলদের মিলন মেলা করব এবং পরবর্তীতে আমরা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি এই মিলন মেলার নাম হবে-বিশ্ব আশেকে রাসুল (সা.) সম্মেলন। আমি আমার মোর্শেদ সূফী সম্রাট হযরত শাহ্ দেওয়ানবাগী (রহ.)-এর শুভ জন্মদিনে বিশ্ব আশেকে রাসুল (সা.) সম্মেলন ডাক দিয়েছি। আমার আহবানে আজ বাংলাদেশের ৬৪ জেলা থেকে আগত আশেকে রাসুল ভাইয়েরা এবং প্রায় ৩০টির বেশি দেশ থেকে আগত বিদেশি প্রবাসী প্রতিনিধিগণ, আপনাদের সবাইকে পেয়ে এই সম্মেলন আজ আশেকে রাসুলদের মিলন মেলায় পরিণত হয়েছে।
গত ২৩ ডিসেম্বর, শুক্রবার বাবে বরকত দেওয়ানবাগ শরীফে অনুষ্ঠিত বিশ্ব আশেকে রাসুল (সা.) সম্মেলনে মোহাম্মদী ইসলামের নেতৃত্ব প্রদানকারী মহামানব ইমাম প্রফেসর ড. কুদরত এ খোদা (মা. আ.) হুজুর বক্তব্য রাখতে গিয়ে এ কথা বলেন।
ইমাম প্রফেসর ড. কুদরত এ খোদা (মা. আ.) হুজুর বলেন-আজ আমরা আশেকে রাসুলেরা একত্রিত হয়েছি, আমাদের মোর্শেদ আল্লাহর বন্ধু শাহ্ দেওয়ানবাগী (রহ.)-এর শুভ জন্মদিন স্মরণে। আমার মোর্শেদ কেবলাজান তার জীবনের ৭১টি বছর আমাদের দিয়েছিলেন, আমরা কিভাবে আল্লাহ্কে পেতে পারি; আমরা কিভাবে রাসুলকে পেতে পারি; কিভাবে নিজে চরিত্রবান হতে পারি, এই লক্ষ্যে। মোমবাতি যেমন নিজেকে পুঁড়ে জগতকে আলোকিত করে, অলী-আল্লাহ্গণ যুগে যুগে আসেন নিজেকে পুঁড়ে আপনাকে আলোকিত করার জন্যে। আজ শাহ্ দেওয়ানবাগীর এই মোহাম্মদী ইসলামের ফসল, আশেকে রাসুলের বাগান। আল্লাহর বন্ধু শাহ্ দেওয়ানবাগী নিজে পুঁড়েছেন, আপনাকে-আমাকে আলোকিত করেছিলেন। শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত তিনি হাল ছাড়েননি। তিনি চেষ্টা করেছিলেন, কিভাবে মানুষ আল্লাহ্কে পাবে; এই বিদ্যা শিক্ষা দেওয়ার জন্যে। তার রাস্তা সহজ ছিল না; কঠিন এক বক্র রাস্তায় হেঁটেছিলেন। সারা দুনিয়ার মানুষ অপমান-অপদস্থ, লাঞ্ছনা-বঞ্চনা দিয়েছিল, যাতে দেওয়ানবাগীর আশেকে রাসুলদের থামিয়ে দিতে পারে। ফেসবুক, ইউটিউব, অনলাইন, মিডিয়ায় একের পরে এক দেওয়ানবাগীর নামে মিথ্যা অপবাদ দিয়েছিল যাতে আশেকে রাসুলদের ইমানের জোর ভেঙে যায়। শকুনের দোয়ায় গরু মরে না। এই শকুন/মুনাফিকদের দোয়ায় আশেকে রাসুলদের ইমান নষ্ট হয় না।
ইমাম প্রফেসর ড. কুদরত এ খোদা (মা. আ.) হুজুর বলেন-আল্লাহর বন্ধু শাহ্ দেওয়ানবাগী (রহ.) এসেছিলেন আপনাকে-আমাকে আলোকিত করার জন্যে। তিনি আলোকিত মানুষ গড়ার কারিগর ছিলেন। ইমাম শাহ্ চন্দ্রপুরী (রহ.)-এর দরবারে গোলামি করে এবং দীর্ঘ ১ যুগ সাধনা করে ঐ নুরে মোহাম্মদীর আলো নিজের মাঝে নিয়েছিলেন, নেওয়ার পরে আপনার অন্তর, আমার অন্তর আলোকিত করার সেই বিদ্যা শিক্ষা দিলেন। ওনার শিক্ষা গ্রহণ করে শত-সহস্র মানুষ দুনিয়ায় বসে আল্লাহর দিদার পেয়েছে, রাসুলের দিদার পেয়েছে। তার শিক্ষা গ্রহণ করে বিপদ-আপদ, বালা-মুসিবতে আল্লাহর সাহায্য পাওয়া যায়। এত বড় মহামানবকে আমরা আজ থেকে ২ বছর আগে হারিয়েছি। যেটা সন্তান হিসেবে নয়, আমার মোর্শেদ হিসেবে আমার জীবনের সবচেয়ে বড় আঘাতের দিন, সবচেয়ে বড় কষ্টের দিন। আমিই শেষ ব্যক্তি, যিনি মোর্শেদের সাথে কথা বলেছি; আমিই শেষ ব্যক্তি, যিনি ওনাকে রওজাস্থ করেছি। মনে বড় আশা ছিল, এই মোর্শেদকে যদি ধরে রাখতে পারতাম! যদি তার জীবদ্দশায় এই আয়োজন করে তাকে এই কুরসিতে বসাতে পারতাম, ওনার ঐ নুর মাখা হাসি যদি দেখতে পারতাম, বোঝাতে পারতাম আমি তাকে কতটুকু ভালোবাসি। দেখাতে পারতাম, আমরা তাকে কতটুকু ভালোবাসি। এর চেয়ে বড় কষ্টের দিন আর নেই। তবুও আমরা গোলামেরা মোর্শেদকে ভালোবেসে আজ একত্রিত হয়েছি। আমরা আজ দুই হাত তুলে বলি, বাবা আমরা তোমাকে ভালোবাসি; বাবা! আমরা তোমাকে ভালোবাসি।
ইমাম প্রফেসর ড. কুদরত এ খোদা (মা. আ.) হুজুর বলেন-এই মোহাম্মদী ইসলামের ধারা চলবে। নুরে মোহাম্মদী কখনো কবরে নিয়ে যাওয়া যায় না। এই আলো বাবা আদম (আ.)-এর যুগ থেকে শুরু হয়েছে। আদম (আ.) যখন গন্ধম ফল খেয়েছেন সেই অপরাধে বেহেশত থেকে নামিয়ে দেওয়া হলো। নামিয়ে দেওয়ার পরে বলা হলো, তোমাকে ক্ষমা করা হবে না কারণ তুমি আমি আল্লাহর নির্দেশ অমান্য করেছ। ঐ আদম (আ.) যখন নুরে মোহাম্মদীর ধারক ও বাহক নবী মোহাম্মদ মোস্তফা আহাম্মদ মোজতবা (স.)-এর অসিলা ধরে ক্ষমা চাইলেন যে আল্লাহ্ অসন্তুষ্ট ছিলেন ঐ আল্লাহ্ই আদম (আ.)-কে ক্ষমা করে দিলেন। তখন তিনি শুধু ক্ষমা করেননি, পুরস্কার দিলেন। তুমি আমার সন্তুষ্টি অর্জন করেছ, তাই তোমাকে আমার বন্ধুত্বের মর্যাদা দিলাম। আমি তো আহম্মদ রূপী মোহাম্মদকে ভালোবাসি, মোহাম্মদ-এর ঐ নুর তোমার ভিতরে দিলাম; আজ থেকে তুমি আর আদম নও, আজ থেকে তুমি আদম নবি অর্থাৎ নবুয়ত অর্জন করলে। তখন থেকে তিনি আদম (আ.) হলেন। একইভাবে মূসা যখন আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করলেন তখন তিনি মূসা থাকলেন না, আল্লাহ্ তাকে পুরস্কার দিলেন। ঐ নুরে মোহাম্মদীই ছিল মূসার জন্য পুরস্কার। মোহাম্মদী নুর মূসার মধ্যে ঢুকে গেলো তখন ঐ মানুষটি মূসা নয়, মূসা (আ.) হয়েছিলেন। ইব্রাহিম যখন ঐ নুর ধারণ করলেন ইব্রাহিম থেকে ইব্রাহিম (আ.) হলেন। একইভাবে ইসমাইল ইসমাইল (আ.) হলেন। নবি মোহাম্মদের ঐ নুর নিজের মাঝে ছিল, আল্লাহ্ পুরস্কার স্বরূপ সুপ্ত মোহাম্মদকে প্রকাশ করলেন ৪০ বছর বয়সে। প্রকাশ করে বললেন, (বন্ধুত্বের নুর) তোমার নামের নুর এতো বছর বিলিয়েছি; এবার এই নুর তোমার মাঝে দিলাম, তুমি এই নুর বাকিজীবন বিলাও। মোহাম্মদ নিজের জবানে কথা বলেছেন, ঐদিন থেকে ঐ জবান আর মোহাম্মদের থাকেনি আল্লাহর বাণী কোরআনে পরিণত হয়েছে। আল্লাহ্ কি দুনিয়ার জমিনে এসে আপনার-আমার সাথে কথা বলতে পারতেন, না পারতেন না? কেন মোহাম্মদের মুখ থেকে বলিয়েছেন? মোহাম্মদে বন্ধুত্বের মর্যাদা দিয়েছেন বিধায়। নবুতের ধারা শেষ হওয়ার পরে একইভাবে বেলায়েতের ধারা শুরু হয়েছে। বড় পীর আব্দুল কাদের জিলানী (রহ.), খাজা মুঈনুদ্দিন চিশতি (রহ.), শাহ এনায়েতপুরী (রহ.), ইমাম শাহ্ চন্দ্রপুরী (রহ.), আল্লাহর বন্ধু শাহ্ দেওয়ানবাগী (রহ.) প্রত্যেকেই ঐ নুর নিজের মাঝে ধারণ করেছেন বিধায় তারা অলী-আল্লাহ্। ওনারা অলীত্ব পেয়েছেন, আল্লাহর সাথে যোগাযোগ করতে পেরেছেন। আমি আল্লাহর বন্ধু শাহ্ দেওয়ানবাগীর কদমে গোলামি করে তার অর্পিত দায়িত্ব নিয়ে বর্তমানে ঐ নুর নিজের সিনায় ধারণ করছি। আপনি মানেন অথবা না মানেন, আপনি বোঝেন অথবা না বোঝেন! এই সিনার দিকে দেখুন, এই সেই সিনা যেই সিনা আপনাকে আল্লাহ্কে পাওয়াতে পারে। যতদিন বাঁচবো বাকি জীবন এই নুরে মোহাম্মদীকে ধারণ করে যাব এবং আপনাকে আলোর পথ দেখাবো। আপনাকে আলোর পথ দেখাবো; এখন কথা হচ্ছে, আপনি সেই আলোর পথ দেখতে চান কি-না? আপনি কি আলোর পথ দেখতে চান? এই আলোর পথ দেখতে শিখতে হবে। আলেম-ওলামাদের জ্ঞান, সমাজের জ্ঞান দিয়ে পড়াশোনার বিদ্যা অর্জন করা যায় কিন্তু আল্লাহময় হওয়া যায় না। আল্লাহময় হতে হলে যিনি আল্লাহ্কে পেয়েছেন এমন মহামানবের কাছে গিয়ে গোলামী শিখতে হয়। তারপর তাকে অনুসরণ করে আল্লাহ্ ও রাসুলের পথে ধাবিত হতে হয়। আমার মোর্শেদ কেবলাজান নিজেকে আলোকিত করে জগতকে আলোকিত করেছেন। এবার আমি চেষ্টা করছি আপনাদের আলোকিত করতে। দুনিয়ার অন্যায়, অত্যাচার, জুলুম ভুলে গিয়ে নিজেকে সৎ চরিত্রবান বানানো আশেকে রাসুলের কাজ; নিজেকে আলোকিত করা আশেকে রাসুলের কাজ। আমি আপনাকে উপদেশ দিতে পারি কিন্তু আপনাকে চরিত্রবান বানাতে পারি না।
ইমাম প্রফেসর ড. কুদরত এ খোদা (মা. আ.) হুজুর বলেন-আমি শিক্ষকতা করি, আপনারা জানেন। লম্বা সময় শিক্ষতার কারণে ছাত্রকে বলতে পারি, এই এই বিষয়গুলো যদি পড় পরীক্ষায় ভালো করবে। কিন্তু ছাত্র যদি না পড়ে আমি কি ছাত্রকে পরীক্ষায় ভালো করাতে পারি? ঠিক তেমনিভাবে, আপনি যদি আশেকে রাসুল হন, আপনি যদি রাসুলকে ভালোবেসে থাকেন তাহলে আপনাকে আমি বলতে পারি, এই পথে চললে আপনি আল্লাহ্কে পাবেন। উপদেশ দিতে পারি কিন্তু আমি তো আপনাকে আল্লাহ্কে পাওয়াতে পারি না। আল্লাহ্কে পেতে হলে ঐ কর্ম আপনাকে করতে হবে। আমি বলে দিতে পারবো, এই পথে চললে আপনার গুনাহ মাফ করতে পারবেন; আমি বলে দিতে পারবো, এই পথে চললে আপনি নিজেকে চরিত্রবান বানাতে পারবেন; আমি বলে দিতে পারবো, আপনি এই পথে চললে নিজেকে আলোকিত করতে পারবেন। কিন্তু আলোকিত তো আপনাকে হতে হবে। সেটা আপনার কাজ, আমি করতে পারবো না। যার যার কর্ম তাকে কবরে নিতে হবে। আমি পরামর্শ দিতে পারি, আপনার কর্ম আমি করে দিতে পারি না। তাই আজ এই আশেকে রাসুলের মহা মিলন মেলায় আপনাদের কাছে আমি একটি আবদার করতে চাই, আপনারা কি আমার আবদারটি রাখবেন? যারা নামাজ পড়েন না, নামাজ শুরু করুন; যারা রোজা রাখেন না, রোজা শুরু করুন; যারা মোরাকাবা করেন না, মোরাকাবা শুরু করুন; যারা মিথ্যা বলেন, মিথ্যা থেকে নিজেকে দূরীভূত করুন; যারা জুলুম করেন, জুলুম থেকে নিজেকে দূরীভূত করুন; যারা অত্যাচার করেন, অত্যাচার থেকে নিজেকে দূরীভূত করুন। মোহাম্মদী ইসলাম নিজে চলতে পারে না, মোহাম্মদী ইসলামের চাকা নেই। মোহাম্মদী ইসলাম চলবে আপনার আমার সিনায়, সিনা থেকে সিনায়।
ইমাম প্রফেসর ড. কুদরত এ খোদা (মা. আ.) হুজুর বলেন-শাহ্ দেওয়ানবাগী চরিত্রবান হওয়ার শিক্ষা দিয়েছেন এবং চরিত্রবান হতে বলেছেন, আমাদের চরিত্রবান হতে হবে। মনে রাখতে হবে ঐদিন বেশি দূরে নয় যেদিন আপনার আমার ডাক চলে আসবে; মনে রাখতে হবে, ঐদিন বেশি দূর নয় যেদিন একেবারে চোখ বন্ধ করার সময় চলে আসবে। সবাই ডাকবে, আপনি আর ঐ চোখ নিজে খুলবেন না। সন্তান বলবে বাবা, উঠ; স্ত্রী বলবে স্বামী উঠ; আত্মীয়-স্বজন বলবে, তুমি উঠো! আমি তো আর উঠতে পারি না, নিজের চোখ আর নিজে খুলতে পারবো না। ঐদিন কি জবাব দিবেন? ঐদিনের জন্য এখন জবাব তৈরি করা শিখতে হবে। চোখ বন্ধ করার আগে মৃত্যুর আগে মৃত্যু বিদ্যা শিখতে হবে। মৃত্যু বিদ্যা নিজেকে চরিত্রবান বানানোর নাম; মৃত্যু বিদ্যা মরার আগে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের নাম। আপনি যদি আশেকে রাসুল হন এবং আপনি যদি নিজেকে চরিত্রবান বানান, আপনার জন্য অন্ধকার কবর হারাম হয়ে যাবে। আপনার কবর অন্ধকার হতে পারে না। আপনার মৃত্যু জ্বালা-যন্ত্রণার হবে নয়। আপনার মৃত্যু হবে আপনার মালিকের সাথে মিলন; আপনার মৃত্যু হবে আপনার জন্য সুসংবাদ; আপনার মৃত্যু হবে মুক্তির। বড় স্টেজ, বড় ময়দান, ফুলের মালা, বড় জ্ঞান এবং গরিমার কোনো মূল্য নেই। আমার জন্য সাড়ে ৩ হাত মাটি অপেক্ষা করছে, আপনার জন্যও সাড়ে ৩ হাত মাটিই অপেক্ষা করছে। ঐ ছোট্ট একটি কুটিরে আপনাকে আমাকে যেতে হবেই। ঐ কুটিরে যাওয়ার পূর্বে যদি আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা যায়, ঐ কুটির হয়ে যাবে রাজপ্রাসাদ। কিন্তু যদি আল্লাহ্ অসন্তুষ্ট থাকেন ঐ কুটির আরও চেপে চেপে আপনার জন্য কবরের আজাব হয়ে যাবে। একই ব্যক্তি কর্মের কারণে শুদ্ধ আর অকর্মের কারণে শয়তানে পরিণত হতে পারে। তাই আমরা যে সমাবেশে অর্থাৎ আশেকে রাসূলের মিলন মেলায় এসেছি, এই মেলায় এসে নিজেকে পরিবর্তন করি। কারা কারা নিজেকে পরিবর্তিত করার চেষ্টা করতে পারবেন, হাত উঠান? (অগণিত মুক্তিকামী আশেকে রাসুলগণ হাত তুলে সাড়া দেন)। হাত নামান! আপনি চেষ্টা করুন; আমি আমার মালিকের কাছে সাহায্য চাই, আমার মালিক আপনার চেষ্টাকে কবুল করে নিক। আমি বলি, আমি ঐ মালিকের গোলামি করি না, যে মালিক আপনাকে ক্ষমা করতে পারে না; আমি বলি, আমি ঐ মালিকের গোলামি করি, যে মালিক আপনাকে ক্ষমা করার জন্য বসে আছেন।
ইমাম প্রফেসর ড. কুদরত এ খোদা (মা. আ.) হুজুর বলেন-যারা এই বিশ্ব আশেকে রাসুল (সা.) সম্মেলনে এসেছেন; যারা বিগত ৩ মাস নিজের রক্ত পানি করে এই সম্মেলনকে সাফল্য মণ্ডিত করেছেন; আমার আলেম-ওলামাবৃন্দ যারা ৩ মাস মাঠে-ময়দানে খেয়ে না খেয়ে এই সম্মেলনের দাওয়াত পৌঁছেছেন; আমার কর্মী ভাইয়েরা এবং আশেকে রাসুল সমন্বয়ক ভাইয়েরা; থানা সহকারী এবং সেকশন সমন্বয়করা; বিদেশি কান্ট্রি সমন্বয়ক, সেকশন সমন্বয়কসহ আশেকে রাসুলেরা যাদের অক্লান্ত-পরিশ্রমে আজ আমরা বিশ্ব আশেকে রাসূল (সা.) সম্মেলনে আসার সুযোগ পেয়েছি। আমাদের আশেকে রাসুলেরা যারা সারাদিন এবং শীতের রাত্রিতে কষ্ট করেছেন, তাকিয়ে আপনাদের কষ্ট দেখেছি। শীতের মধ্যে বসার জায়গা নেই; ঘুমানোর জায়গা নেই, একটু ঘাপটি মেরে বসে বা কোনো একটি খের গায়ে দিয়ে শুয়ে আছেন। দাওয়াত দিয়েছি কিন্তু আপনাদের জন্য ব্যবস্থা করতে পারিনি। আমি আপনাদের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী, আমাকে আপনারা নিজ গুণে ক্ষমা করে দিবেন। আপনারা মেহমান, আপনাদের জন্য এই আয়োজন করেছি, আমার তো ময়দান ছাড়া আর কোনো জায়গা নেই। বসার জন্য ভালো জায়গা দিতে পারিনি, ভালো খাবার দিতে পারিনি। আমি তার বিনিময়ে আমার মালিকের কাছে আপনাদের জন্য সাহায্য চাই, আমার মালিক যাতে আপনাদের কবুল করে নেন; আমার মালিক যাতে আপনাদের বিপদ-আপদ দূর করে দেন; আমার মালিক যাতে আপনাদের বালা-মুসিবত দূর করে দেন; আমার মালিক যাতে আপনাদের অভাব-অনটন দূর করে দেন; আপনাদের যার মনে যেই বাসনা তিনি যেন দয়া করে পূর্ণ করে দেন। আজ আশেকে রাসূলদের এই মিলন মেলাতে আমি একটি কথা বলতে চাই, আমরা সারা জীবন এই মোহাম্মদী ইসলামকে আঁকড়ে ধরে রাখবো।
ইমাম প্রফেসর ড. কুদরত এ খোদা (মা. আ.) হুজুর বলেন-আমরা আলোচনা দীর্ঘায়িত করতে পারবো না। শীতের দিন, সংক্ষিপ্ত সময়। অনেক কিছু বলার ছিল, অনেক কিছু নিয়ে বসে ছিলাম। আমার মনের ভাষা যদি পড়তে পারেন, আমার মনের ভাষা বুঝে নিন। (অশ্রুসিক্ত চোখে বলেন) আপনাদের প্রতি ভালোবাসার বিন্দুমাত্র কমতি নেই। আমি হয়তো কথা বলার সুযোগ পেলাম না কিন্তু আমি প্রাণ খুলে আমার মালিকের কাছে দোয়া করি, আমার মালিক আপনাদের কবুল করে নিক; আমার মালিক আপনাদের ক্ষমা করে দিক। আজকের অনুষ্ঠানকে সাফল্য মণ্ডিত করার জন্য সরকারি প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ, ডাক্তার, মুক্তিযোদ্ধা, অতিথিবৃন্দ, সাধারণ আশেকে রাসুল, প্রবাসী আশেকে রাসুল, অত্র অঞ্চলের ইউনিয়ন চেয়ারম্যান, মেম্বার সদস্যগণ, রাজনৈতিক নেতাবর্গ, গ্রামবাসী/এলাকাবাসী, থানার আশেকে রাসুলদের, সাধারণ ভাইয়েরা আপনাদের সার্বিক প্রচেষ্টায় এবং সহযোগিতায় আমরা এই আয়োজন করতে পেরেছি। আপনাদের সকলের জন্য আমার মালিকের কাছে সাহায্য চাই। আমার মালিক আপনাদের কবুল করে নিক। আসুন আমরা সবাই তওবা পড়ে মহান রাব্বুল আলামিনের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করি, তিনি যেন দয়া করে আমাদের মাফ করে দেন এবং আমাদের এই আয়োজনকে কবুল করে নেন।
বাদ জুমা সম্মেলনের আহবায়ক মোহাম্মদী ইসলামের নেতৃত্ব প্রদানকারী ইমাম প্রফেসর ড. কুদরত এ খোদা (মা. আ.) হুজুর তাঁর মূল্যবান বাণী প্রদান করে বিশ্ববাসীর শান্তি, সমৃদ্ধি ও কল্যাণ কামনা করে আখেরি মুনাজাত প্রদান করেন।