স্বল্পমেয়াদি, কিন্তু তীব্র শীতের আভাস
দেওয়ানবাগ ডেস্ক: চলতি মাসের শেষ সপ্তাহের দিকে দেশের চার বিভাগে পুরোপুরি শীত শুরু হবে। রাজশাহী, রংপুর, সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগে শীত আগে আসবে। এবার বর্ষা মৌসুমে কম বৃষ্টিপাতের কারণে মাটি বেশ শুকনাভাব রয়েছে। কম বৃষ্টিপাতের কারণেই এবার স্বল্পমেয়াদি ও তীব্র শীতের আশঙ্কা রয়েছে। এশিয়াজুড়ে শীতের তীব্রতা থাকতে পারে।
আবহাওয়াবিদরা বলছেন, বর্ষা মৌসুমের পর মাটি ভেজা থাকলে সূর্যের আলোতে এক ধরনের তাপমাত্রা তৈরি হয়, যা উপরিভাগকে গরম রাখার মাধ্যমে তাপ ধরে রাখে। কিন্তু মাটিতে আর্দ্রতা কম থাকলে সেটি আর হবে না। শীতের আগে মাটি শুকনাভাব থাকলে শীতের তীব্রতা বাড়াতে সহায়তা করে। বাতাসে জলীয় বাষ্প কম হওয়ার সঙ্গেও শীতের সম্পর্ক রয়েছে। বাতাসে জলীয় বাষ্প কমে গেলে আবহাওয়া শুষ্ক এবং বাতাস ভারী হয়ে পড়ে। এর ফলে শীতের তীব্রতা বাড়ে।
চলতি বছরের কয়েক মাস বেশ শুকনা ছিল। গত ৪২ বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম বৃষ্টিপাত হয়েছে এবারের বর্ষা মৌসুমে। ফলে মাটিতে আর্দ্রতা কমে গেছে এবং মাটি অনেক শুকনা হয়ে গেছে। এরই মধ্যে উত্তরের হিমেল হাওয়া বইতে শুরু করেছে। ফলে শীতের আমেজ শুরু হয়ে গেছে দেশের উত্তরাঞ্চলে।
চলতি বছরে সারা বর্ষা মৌসুমে রাজধানী ঢাকায় বৃষ্টিপাত ছিল ৩৫০ মিলিমিটারের কাছাকাছি। সেই তুলনায় শুধু অক্টোবর মাসে ২৫৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। কারণ গত মাসে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের কারণে টানা কয়েক দিন বৃষ্টিপাত হয়েছে। সাধারণত দেশে নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে তাপমাত্রা কমতে থাকে। এখন যে তাপমাত্রা আমরা অনুভব করছি সেটি সাধারণত ওই সময় হওয়ার কথা। কয়েক দিন আগে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের কারণে সারা দেশে অসময়ে বৃষ্টিপাত হওয়ায় তাপমাত্রা কমে গেছে। তাই এবার আগাম শীতের অনুভূতি হচ্ছে। এই তাপমাত্রা এখন ওইভাবে আর বাড়বে না। এ কারণেই এই আবহাওয়া আগাম শীতের আমেজ দিচ্ছে।
তবে এটি শীত নয় বলে জানিয়েছেন আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ এ কে এম নাজমুল হক। তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, এখন যে শীতের আমেজ এসেছে, এটি কিন্তু শীত নয়। শীতের কারণে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা যেটি থাকতে হয়, সেটি এখনো আসেনি। এখনো স্বাভাবিক শীতের চেয়ে তাপমাত্রা ২-৩ ডিগ্রি বেশি রয়েছে। এটি চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে গিয়ে কমে আসতে পারে। শীত এলে সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন—উভয় তাপমাত্রা কমতে হবে।
সাগরের লঘুচাপের ওপর শীতের তীব্রতা নির্ভর করছে জানিয়ে এই আবহাওয়াবিদ বলেন, এখনো পর্যন্ত যতগুলো বড় ঘূর্ণিঝড় হয়েছে তার বেশির ভাগই নভেম্বরের শেষের দিকে হয়েছে। তাই চলতি মাসের শেষ দিকে সাগরে লঘুচাপ কেমন থাকে তার ওপর শীতের তীব্রতা নির্ভর করছে। তবে বৃষ্টিপাত কম হওয়ার কারণে শীতের তীব্রতা থাকতে পারে।