বিশেষ সংবাদদাতা: আমার মোর্শেদ কেবলা বলতেন, একদিন এমন কোনো জায়গা থাকবে না যেখানে রাসূলের আশেক খুঁজে পাওয়া যাবে না। দেখুন তো আজকে কি শাহ্ দেওয়ানবাগীর এই কথার সত্যতা পাওয়া যায় কি না? ছোট্ট শিশুরা, আমার বোনেরা, আমার ভাইয়েরা, পিতা-মাতা সবাই যেভাবে ঈদে মিলাদুন্নবি (সা.)-এর আয়োজন করেছে, এতে আসলেই বোঝা যায় মোহাম্মদী ইসলামের জাগরণ আসছে। ছোট্ট একটি শিশু চকলেট বিতরণ করেছে। আমার বোনেরা পিঠা বিতরণ করেছেন, বাড়ি বাড়ি খাবার পৌঁছে দিয়েছেন। আমার আশেকে রাসূল ভাইদের দেখুন, কি এমন আয়োজন তারা করেনি? আমি ধন্যবাদ-কৃতজ্ঞতা জানাই তাদের সবাইকে, যাদের এই অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে এবারের ঈদে মিলাদুন্নবি (সা.) অনুষ্ঠানে আমরা এতো আনন্দ এবং এতো ভালোবাসা সাথে আয়োজন করতে পেরেছি।
গত ১৪ অক্টোবর, শুক্রবার সাপ্তাহিক আশেকে রাসুল (সা.) মাহফিলে অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে মোহাম্মদী ইসলামের নেতৃত্বপ্রদানকারী মহামানব ইমাম প্রফেসর ড. কুদরত এ খোদা (মা. আ.) হুজুর বক্তব্য প্রদানকালে এ কথা বলেন।
ইমাম প্রফেসর ড. কুদরত এ খোদা (মা. আ.) হুজুর বলেন, ধন্যবাদ জানাই আমার এলাকাবাসী (যেখানে আমার জন্ম) আরামবাগের ভাই-বোনদের। এবার আরামবাগে স্কুলে খুব সুন্দর আয়োজন করেছেন, আমার খুব ভালো লেগেছে। আমার কথা আপনারা রেখেছেন, এতো সুন্দর আয়োজন করেছেন এবং এতো পরিশ্রম করেছেন আমি কৃতজ্ঞতা জানাই। যেহেতু আমার এলাকা আমি না বলে পারছি না। আবার একটু বলতে হবে আমার লন্ডনের আশেকে রাসুল ভাই ও বোনদের, যারা আমার ডাকে সারা দিয়ে বিশ্বাস করুন তাদের খাওয়া-দাওয়া, ঘুম বন্ধ। ২ রাত ফল কিনেছে প্রায় ১৬শ/১৭শ মানুষের জন্যে। আমরা এখানে খাবার এরেঞ্জমেন্ট করেছি। গাড়ি নিয়ে সারারাত ফলের বস্তা মাথায় করে এনেছেন। জাকের ভাই ও বোনেরা যারা কষ্ট করে এই আয়োজন করেছেন, আশা করি আপনারা আমাদের আয়োজন দেখেছেন। আমরা আমাদের সামর্থ অনুযায়ী করেছি যতটুকু পেরেছি। আপনাকে বললাম, রাস্তায় নেমে যান, আর আমি কি এসিতে বসে থাকবো? তাতো হতে পারে না। তাই আমি আমার ভাই-বোনদের নিয়ে নেমে গিয়েছি।
ইমাম প্রফেসর ড. কুদরত এ খোদা (মা. আ.) হুজুর বলেন, আমার হাতে অস্ত্র আছে, আপনারাই তো আমার অস্ত্র এবং আপনারাই আমার ভালোবাসা। লন্ডনের ভাই ও বোনদের আহŸান করছি, চলুন না আমরা সবাই একসাথে রাস্তায় নামি! আসলে আপনাদের প্রত্যেকটি দরবার শরীফ, খানকাহ্ শরীফ এবং বাড়ি বাড়ি যেই আয়োজন করেছেন আল্লাহর কসম, ১৪শ বছর পরেও এইবারের এই জন্মদিন আল্লাহর রাসূলের জন্যে শ্রেষ্ঠ জন্মদিন। তার নামে, তার বরকতে আশেকে রাসূলেরা বাড়ি-বাড়ি, রাস্তায়-রাস্তায়, খানকায়-খানকায়, মজলিসে-মজলিসে যেভাবে আয়োজন করেছে; ইহা কি প্রমাণ করে না আমরা যে আশেকে রাসূল? প্রমাণ করে, না করে না? ইহাই প্রমাণ করে আমরা আশেকে রাসূল। বলুন, আপনি রাসূলের নামে নিজের পকেটের পয়সা খরচ করে এতো আয়োজন করেছেন, ঐ রাসূল কি আপনার জন্য সুপারিশ করবে না-কি আপনার মৃত্যুর পরে বলবে, তোমাকে আমি চিনি না? কেন করবে না? এজন্যেই আমি বলেছি, পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবি (সা.) হচ্ছে আশেকে রাসুলের জন্যে মুক্তির একটি অসিলা। এদিনে আমরা যদি মনেপ্রাণে রাসুল (সা.)-কে ভালোবেসে তাঁর জন্মদিনের এই আয়োজন করি এতে আমার রাসুল খুশি হবেন, রাসুল খুশি হলে মালিক খুশি হবেন এবং এই যে মালিকের সন্তুষ্টির জন্যে জগতে এসেছি তার সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারবো। আমার ডাকে সারা দিয়ে, ছোট শিশু থেকে শুরু করে একজন আশেকে রাসূলকে দেখেছি মুড়ি ভর্তা বিতরণ করছেন; আমি দেখেছি, চটপটি বিতরণ করতে। তিনি চটপটির দোকানদার তিনি কি করবেন? তিনি মানুষকে ফ্রী চটপটি খাইয়েছেন। আমার ভাইদের দেখেছি, কে কি আয়োজন করেননি বলুন? বাড়ি-বাড়ি খাবার পৌঁছেছেন; স্কুলের মধ্যে দেখলাম আয়োজন করেছে; খেলার প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে। এই-যে রাসূলের জন্মদিনের যেকোনো আনন্দ আমাদের মুক্তির একটি অসিলা হতে পারে। দেশ-বিদেশ থেকে যারা আয়োজন করেছেন সবার ছবি ভিডিও আমরা দেখাতে পারিনি।
ইমাম প্রফেসর ড. কুদরত এ খোদা (মা. আ.) হুজুর বলেন, যে আয়োজন হয়েছে আমরা তার মধ্যে সর্বোচ্চ ৪০ ভাগ দেখাতে পেরেছি, ৬০ ভাগ আয়োজন আমরা দেখাতে পারিনি কারণ হচ্ছে তারা ঐভাবে প্রস্তুত ছিল না এবং আমরাও ম্যাসেজ দিতে পারিনি। আবার এই শর্ট টাইমের মধ্যে তাদের কাছে ছবি চেয়েছি অনেক ছবি ফুটেজে আমরা দেখাতে পারিনি, এরকমও আছে। তাই যাদের দেখিয়েছি বা যাদের দেখাতে পারিনি, আমার আল্লাহ দেখেন; আমার রাসূল দেখেন; আমি কুদরত এ খোদা দেখি এটাই আপনার জন্যে যথেষ্ট। আমি দোয়া করি, আমার মালিক আপনাদের এই আয়োজন কবুল করে নিক; আমি দোয়া করি, আপনারা যেই অর্থ দান করেছেন, আপনারা যে সাহায্য করেছেন, আপনারা যে পরিশ্রম করেছেন আমার মালিক যেন এর বিনিময় আপনাদের মুক্তির ব্যবস্থা করে দেন। আমি আল্লাহর কাছে সাহায্য চাই; আমি শাহ্ দেওয়ানবাগীর অসিলা ধরে আমার রাসুলের কাছে সাহায্য চাই, এই দেখ তোমার আশেকে রাসুলেরা তোমাকে ভালোবেসে রাস্তায় নেমেছে এবং বাড়ি-বাড়ি দাঁড়িয়েছে তোমার মহব্বতের আশায়; তোমার প্রেমের আশায়। তুমি বলেছো, পিতা-মাতা, স্ত্রী-সন্তান এবং সকল মানুষের চেয়ে আমি মোহাম্মাদকে বেশি ভালোবাসতে হবে। তোমাকে ভালোবেসে সবাই উজাড় করে এবার যে, আয়োজন করেছে আমি সকলের জন্যে তোমার দরবারে ফরিয়াদ জানাই তুমি দয়া করে তাদের কবুল করে নাও; তাদের এই আয়োজন কবুল করে নাও।
ইমাম প্রফেসর ড. কুদরত এ খোদা (মা. আ.) হুজুর বলেন, আজ আমার এই আলোচনার অংশটুকুই ছিল আপনাদের এই আনন্দ আয়োজন দেখানোর জন্য। আপনাদের এই ভালোবাসার জন্য আমি আমার পক্ষ থেকে ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করি। আমি যতদিন বাঁচবো, যতদিন এই দেহে প্রাণ আছে, ততদিন আপনাদের জন্যে আমার মালিকের কাছে সাহায্য চাই; ততদিন আপনাদের জন্যে আমার মালিকের কাছে দয়া চাই, তিনি যেন আপনাদের বিপদ-আপদ, বালা-মসিবত এবং অভাব-অনটন দূর করে দেন। যারা যেই আয়োজন করেছেন (ছোট্ট শিশু থেকে বৃদ্ধ-বনিতা পর্যন্ত) আমি সকলের জন্যে আমার মালিকের কাছে দয়া চাই, তিনি যেন দয়া করে আমাদের এই ক্ষুদ্র প্রয়াস কবুল করে নেন। দেশে-বিদেশে এবং সৌদি আরবের মতো দেশে (আল্লাহর রাসুলের দেশ) ঐ দেশে রাসূলের কথা বলা অনেক কঠিন আমার ভাইয়েরা জীবন হাতে রেখে খাবার নিয়ে বের হয়ে গিয়েছে, আল্লাহু আকবার! আমি আল্লাহর কাছে সাহায্য চাই আল্লাহ্ আপনাদের পানাহ্ দেন। যে সকল বিদেশি আশেকে রাসুলেরা এই আয়োজন করেছে এবং আপনারা দেখেছেন মালয়েশিয়াতে তারা একটি রেস্টুরেন্টের মতো বানিয়েছে এবং মানুষকে টেবিলে খাইয়েছেন। ওখানে একজনও বাঙালি না সব মালয়েশিয়ান৷ দেখুন শাহ্ দেওয়ানবাগী কি জোয়ার বইয়ে দিয়েছেন? আফ্রিকার মতো দেশে ৪/৫শ আফ্রিকান আশেকে রাসুল আয়োজন করেছে। জোয়ার এসেছে। শাহ্ দেওয়ানবাগী বলেছিল, মোহাম্মদী ইসলামকে সারা দুনিয়ায় জাগ্রত করবেন। এই যে দেখুন এই দেওয়ানবাগীর গোলাম এখনো জীবিত আছে এবং আমরা সবাই মিলে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে জাগ্রত করে যাচ্ছি। ইনশাল্লাহ্ আগামীতেও আমরা যাবো।
ইমাম প্রফেসর ড. কুদরত এ খোদা (মা. আ.) হুজুর বলেন, আমি আমার বোনদের কাছে স্পেশালি কৃতজ্ঞতা জানাই। কে বলে আমার বোনেরা পিছিয়ে আছে? কে বলে তোমরা শিকল দিয়ে আটকে রাখবে? দেখে যাও শাহ্ দেওয়ানবাগীর গোলাম ঘরে ঘরে আছে। বোনেরা যেভাবে এগিয়ে এসেছেন ইহা আসলেই মোহাম্মদী ইসলামকে এক নতুন অগ্রগামী যাত্রায় এগিয়ে নিয়ে যাবেন। আল্লাহ্ আপনাদের সবাইকে হেফাজত করুক। আমি ছোট্ট শিশু আশেকে রাসুলদের ধন্যবাদ জানাই, চকলেট নিয়ে নেমেছেন। আপনারা তো এমনিই পবিত্র, এখন এই পবিত্র মহামানবের পবিত্র কাজে নেমেছেন। আল্লাহ্ আপনাদের সবাইকে কবুল করে নিক। আর্গুর সদস্য; আশেকে রাসুল আইনজীবী সদস্য যে যেখানে যে আয়োজন করেছেন এবং যে সকল ভাইয়েরা খানকাহ্ এবং দরবারে আয়োজন করেছেন আমি সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা এবং ধন্যবাদ জানাই এবং ঈদের আয়োজন যাদের এখনো করা সুযোগ হয়নি পুরো মাস করতে পারবেন।
পরিশেষে মোহাম্মদী ইসলামের নেতৃত্বপ্রদানকারী মহামানব, ইমাম প্রফেসর ড. কুদরত এ খোদা (মা. আ.) হুজুর তাঁর বাণী মোবারক প্রদান শেষে আখেরি মোনাজাত প্রদান করেন।