নারী ডেস্ক: মানবিকতার অনন্য নজির স্থাপন করেছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আমেরিকান নাগরিক নাদিয়া হোসেন। একদম অপরিচিত এক শিশুকে লিভার দান করে তার প্রাণ বাঁচাতে সাহায্য করেন এই নারী। বর্তমানে শিশুটি সুস্থ হয়ে উঠছে। তার এই মানবিক উদ্যোগ সেখানকার বাংলাদেশি কমিউনিটিতে বেশ প্রশংসা কুড়িয়েছে। নিজের এমন সাহসিক কর্মকান্ডকে নিয়মিত কাজের অংশ হিসেবেই বর্ণনা করেছেন নাদিয়া।
জানা যায়, বরিশালের সন্তান নাদিয়া হোসেন বাস করেন নিউজার্সি অঙ্গরাজ্যে। ডা. জাকির হোসেন ও ফারিয়েল সুলতানা দম্পতির কন্যা নাদিয়া বিবাহিত। ব্যক্তিগত জীবনে তাঁর তিন সন্তান রয়েছে। নাদিয়া একজন পরিবেশকর্মী এবং ডেমোক্র্যাট দলের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছেন। নাদিয়া বলেন, ‘নতুন বছরের শুরুতে অঙ্গদানের পরিকল্পনা করি। একটি ফ্লায়ারে বেবি ইডেনের বাবা-মাকে একজন জীবিত অঙ্গদাতার সন্ধান করতে দেখে আমি এ সিদ্ধান্ত নিই। যে কোনোভাবে ইডেনকে সাহায্য করা দরকার। ফ্লায়ারে দেখলাম আমার ব্লাড গ্রুপের সঙ্গে ইডেনের ব্লাড গ্রুপ মিলে গেছে এবং আমি ফ্লায়ারে তালিকাভুক্ত প্যারামিটারগুলোর সবই পূরণ করেছি দেখে আশান্বিত হই।’
নাদিয়া বলেন, একপর্যায়ে নিজেই শিশুটির বাবা-মায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং ফোনে হাসপাতালকে সব তথ্য জানান। কয়েকদিনের মধ্যেই নিউজার্সি থেকে সেন্ট লুইতে ফ্লাইট করে চিকিৎসার জন্য অন্যান্য পরীক্ষা করতে যান। নাদিয়া বলেন, সুইকে নিজেই ভয় পেলেও নিজেকে এই বলে সান্ত্বনা দিচ্ছিলাম, ইডেন শিশু হয়েও কষ্ট সহ্য করতে পারছে- তাহলে আমার কোনো অজুহাত থাকতে পারে না।’
সম্প্রতি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নাদিয়াকে জানান, ট্রান্সপ্লান্ট সার্জারি অনুমোদিত হয়েছে এবং সবকিছু আনুষ্ঠানিকভাবে ম্যাচ হয়েছে শিশু ইডেনের সঙ্গে। অস্ত্রোপচারের পর নাদিয়া জানিয়েছেন, ‘এখনো হাসপাতালে ইডেন এবং আমি ভর্তি আছি। আমাদের দুজনের সফল অস্ত্রোপচারের জন্য সত্যিই সবার কাছে কৃতজ্ঞ। যদিও আমরা দুজন এখনো যন্ত্রণাদায়ক ব্যথা অনুভব করছি।’ নাদিয়া আরও জানান, ইডেনের জীবন রক্ষাকারী লিভার ট্রান্সপ্লান্ট ছাড়া কখনোই তাকে বাঁচানো সম্ভব হতো না। এই পুরো প্রক্রিয়ায় তাকে উৎসাহ, সমর্থন এবং সহযোগিতা করার জন্য স্বামী রবার্তো ও প্রতিবেশীদের কৃতজ্ঞতা জানান। চার সন্তানের জননী সেই প্রতিবেশী প্রায় প্রতিদিন নাদিয়ার সন্তানদের দেখতে আসেন বলে জানান তিনি।