দেওয়ানবাগ ডেস্ক: বায়ুদূষণের কারণে প্রতিবছর দেশে লক্ষাধিক মানুষ মারা যাচ্ছে। প্রতি ঘনমিটার বাতাসে অতিক্ষুদ্র বালু কণার আদর্শ মান ২.৫ (পিএম ২.৫)। অথচ বাংলাদেশে প্রতি ঘনমিটারে ১৫ মাইক্রোগ্রাম থেকে বাড়িয়ে ৩৫ মাইক্রোগ্রামে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। যেখানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এটি ১০ মাইক্রোগ্রাম থেকে কমিয়ে ৫ মাইক্রোগ্রাম করেছে। নাগরিকদের প্রতি উদাসীনতা বর্তমান রাষ্ট্রের একটা চরিত্র।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মঙ্গলবার পরিবেশ রক্ষা ও উন্নয়ন সোসাইটির উদ্যোগে আয়োজিত নাগরিক সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। এ সময় তারা ইটভাটা, অটো রাইস মিলস, রোলিং স্টিল মিলসহ সব ধরনের কারখানার বিষাক্ত কালো ধোঁয়া নির্মূলকরণে সিপিটি (কার্বন পিউরিফিকেশন টেকনোলজি) স্থাপন করে বায়ু দূষণের মাত্রা কমানোর দাবি জানিয়েছে।
পরিবেশ রক্ষা ও উন্নয়ন সোসাইটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোসাইনের সভাপতিত্বে নাগরিক সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতা করেন পরিবেশ রক্ষা ও উন্নয়ন সোসাইটির উপদেষ্টা ও জাতীয় সাংবাদিক সংস্থার চেয়ারম্যান লায়ন নূর ইসলাম। সভায় উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ রক্ষা ও উন্নয়ন সোসাইটির মহাসচিব মীযানুর রহমান, সিনিয়র সহসভাপতি মো. জহিরুল ইসলাম খোকন, মো. ফজলুল হক ভূইয়া, মোহাম্মদ আলী (আনিস), এশিয়ান নারী ও শিশু অধিকার ফাউন্ডেশন নারায়ণগঞ্জের সভাপতি এমএ মহিন সরকার।
বক্তারা বলেন, আমাদের দেশে বায়ু ও পরিবেশ নিয়ে প্রায় ২০০টির মতো আইন আছে। কিন্তু এগুলোর প্রয়োগ নেই। দূষণ কমানোর জন্য আদালত স্থাপন করা হয়েছে। গত ২০ বছরে বায়ু দূষণ নিয়ে যত মামলা হয়েছে, সেখানে মাত্র একজনের সাজা হয়েছে। মামলা যেগুলো হয়েছে সেগুলো বছরের পর বছর চলছে, বিচারক নেই। এ মামলাতে লোকজন ভয় পাচ্ছে না। সরকার তার দায় এড়াচ্ছে। নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে আমরা অনেক পেছনে আছি। তারা বলেন, বাংলাদেশের সংবিধানে বলা হয়েছে-রাষ্ট্র বর্তমান এবং আগামী দিনের জন্য পরিবেশ সংরক্ষণ করবে। আমরা তা নিজেদের জন্য তো করতে পারছিই না বরং আগামী দিনের নাগরিকদের জন্যও পরিবেশ নষ্ট করে ফেলছি। অনেক শিশু বায়ু দূষণের কারণে শ্বাসকষ্টে ভুগছে।
স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের নির্বাচনি ইশতেহার ২০২৪ এ জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা ও পরিবেশ সুরক্ষাকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। নির্বাচনি ইশতেহার বাস্তবায়ন এবং এ মন্ত্রণালয়ের বর্ণিত চ্যালেঞ্জ ও সমস্যা সমাধানে অগ্রাধিকার নির্ধারণ এবং যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণের জন্য ১০০ কর্মদিবসের কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণ ও কৃষিজমি রক্ষার্থে সরকারি নির্মাণে শতভাগ ব্যবহারে সংশোধিত রোডম্যাপ অনুমোদন করা হবে। বায়ু দূষণের প্রতিটি উৎস থেকে সৃষ্ট দূষণ মোকাবিলায় ন্যূনতম একটি করে কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে। বায়ু দূষণ রোধে দেশব্যাপী ন্যূনতম ৫০০ অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হবে। শব্দ দূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা, ২০০৬ হালনাগাদকরণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। আমরা আশা করব মন্ত্রী পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার্থে যে উদ্যোগগুলো নিয়েছেন এগুলোকে বাস্তবায়ন করলে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে এগিয়ে যাবে।