দেওয়ানবাগ ডেস্ক: ইলেক্ট্রন গতিবিদ্যায় বিশেষ অবদানের জন্য এ বছর পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল জয় করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পিয়েরে অ্যাগোস্তিনি, হাঙ্গেরির ফেরেঙ্ক ক্রাউজ এবং ফ্রান্সের অ্যান ল’হুইলিয়ের। মঙ্গলবার স্টকহোমে পদার্থবিদ্যায় নোবেল বিজয়ী হিসেবে তাদের নাম ঘোষণা করে রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অব সায়েন্সেস।
নোবেল কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে বলেছে, অ্যাগোস্তিনি, ক্রাউস এবং ল’হুইলিয়ার আলোর অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত স্পন্দন তৈরির একটি উপায় আবিষ্কার করেছেন, ইলেক্ট্রনগুলোর চলাচল বা শক্তি পরিবর্তনের প্রক্রিয়াগুলো দ্রুত পরিমাপ করতে ব্যবহার করা যেতে পারে। তিন বিজ্ঞানীর এই আবিষ্কার অণু-পরমাণুর ভেতরে ইলেক্ট্রনের জগৎ অন্বেষণের জন্য মানুষের হাতে নতুন সরঞ্জাম তুলে দিয়েছেন।
এই বছরের নোবেলজয়ীরা অনেক অল্প সময়ের আলোক স্পন্দন তৈরির উপায় বের করেছেন। এত অল্প সময়ের স্পন্দন যে এর মাধ্যমে ইলেক্ট্রনের অতিদ্রুত নড়াচড়ার ছবিও তোলা যায়। গ্যাসের মধ্যকার পরমাণুর সঙ্গে লেজার লাইটের মিথস্ক্রিয়ার ফলে সৃষ্ট নতুন এক ধরনের প্রভাব আবিষ্কার করেন ফরাসি পদার্থবিজ্ঞানী অ্যান লিয়ার। পিয়ারে আগোস্তিনি ও ফেরেন্স ক্রাউজ দেখিয়েছেন, আগে যত স্বল্প সময়ের আলোক স্পন্দন বা পালস তৈরি করা সম্ভব বলে মনে হয়েছিল, তার চেয়েও ছোট স্পন্দন তৈরি করা সম্ভব।
নোবেলজয়ী এই বিজ্ঞানীরা পাবেন একটি মেডেল, একটি সনদপত্র এবং মোট ১১ মিলিয়ন বা ১ কোটি ১০ লাখ সুইডিশ ক্রোনা। চলতি বছর নোবেল পুরস্কারের অর্থমূল্য ১০ মিলিয়ন ক্রোনা থেকে বাড়িয়ে ১১ মিলিয়ন করা হয়েছে। সে হিসাবে বর্তমান বাজারমূল্যে নোবেলজয়ীরা বাড়তি ৮৯ হাজার মার্কিন ডলার পাবেন। যেসব বিভাগে একাধিক নোবেলজয়ী থাকবেন, তাদের মধ্যে এই ১ কোটি ১০ লাখ সুইডিশ ক্রোনা ভাগ হয়ে যাবে।
এর আগে গত বছর পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন তিন বিজ্ঞানী। তারা হলেন ফরাসি বিজ্ঞানী অ্যালেইন অ্যাস্পেক্ট, মার্কিন বিজ্ঞানী জন এফ. ক্লজার এবং অস্ট্রিয়ান বিজ্ঞানী অ্যান্টন জেলিঙ্গার। ‘বিজড়িত ফোটন নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা, বেল অসমতার লঙ্ঘন প্রতিষ্ঠা এবং কোয়ান্টাম তথ্য বিজ্ঞানে অগ্রণী ভূমিকা পালনের জন্য’ তারা এই পুরস্কার পেয়েছিলেন।
ডিনামাইট আবিষ্কারক সুইডেনের বিজ্ঞানী আলফ্রেড নোবেলের ১৮৯৫ সালে করে যাওয়া উইল অনুযায়ী নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়। প্রথম পুরস্কার দেওয়া হয় ১৯০১ সালে। তখন সারা পৃথিবীর বিভিন্ন ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানকে সফল, অনন্যসাধারণ গবেষণা, উদ্ভাবন ও মানবকল্যাণমূলক কার্যক্রমের জন্য পাঁচটি বিষয়ে পুরস্কার দেওয়া হতো। বিষয়গুলো হলো পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, চিকিৎসাশাস্ত্র, সাহিত্য ও শান্তি। এরপর ১৯৬৯ সাল থেকে অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার দেওয়া শুরু হয়।