খাদ্য মূল্যস্ফীতি কমেছে, প্রভাব নেই বাজারে

খাদ্য মূল্যস্ফীতি কমেছে, প্রভাব নেই বাজারে

দেওয়ানবাগ ডেস্ক: ২০২৩ সালের সর্বশেষ মাস ডিসেম্বরে এসে দেশে কিছুটা কমেছে খাদ্য মূল্যস্ফীতি। অক্টোবরের রেকর্ড মূল্যস্ফীতির চেয়ে প্রায় ৩ শতাংশ কমেছে বলা হলেও বাজারে দেখা যায়নি সেই চিত্র। ডিসেম্বরে বাজারে নতুন আলু উঠলেও ক্রেতাকে ৭০ থেকে ৮০ টাকায় আলু কিনে খেতে হয়েছে। নতুন ধান উঠলেও বেড়েছে চালের দাম।
বেশির ভাগ শাক-সবজির দামই ক্রেতার নাগালের বাইরে। তবু কিভাবে খাদ্য মূল্যস্ফীতি কমে, তা নিয়েও রয়েছে প্রশ্ন।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হালনাগাদ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে সার্বিক খাদ্য মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৯.৫৮ শতাংশ। নভেম্বরে এই মূল্যস্ফীতি ছিল ১০.৭৬ শতাংশ।


গত অক্টোবরে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল ১২.৫৬ শতাংশ, যা গত প্রায় ১২ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। অর্থাৎ এই দুই মাসে কোনো খাদ্যপণ্যের দাম না কমলেও কমেছে খাদ্য মূল্যস্ফীতি।
এদিকে বিবিএসের সচিবসচিব শাহনাজ আরেফিন বলেন, ক্রমান্বয়ে মূল্যস্ফীতি আরো কমে আসবে। জানুয়ারি মাসেও আরো কমবে, কারণ এ মাসে আমন তোলা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন।


বিবিএসের তথ্যে দেখা যায়, ডিসেম্বরে সার্বিক মূল্যস্ফীতি কমে হয়েছে ৯.৪১ শতাংশ, যা গত আট মাসের মধ্যে সর্বনি¤œ। একসঙ্গে ডিসেম্বরে গ্রাম-শহর-নির্বিশেষে খাদ্য মূল্যস্ফীতি কমে ১০ শতাংশের নিচে নেমেছে, তবে খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি কিছুটা বেড়েছে।
বিবিএসের হিসাবে সর্বশেষ ডিসেম্বরে শহর-গ্রাম-নির্বিশেষে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশের নিচে নেমেছে। গত মাসে গ্রামে খাদ্য মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৯.৬৬ শতাংশ। তার বিপরীতে শহরে খাদ্য মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৯.৪৬ শতাংশ। অর্থাৎ শহরের তুলনায় গ্রামে খাদ্য মূল্যস্ফীতি বেশি।
অন্যদিকে গত মাসে দেশে সার্বিক খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি কিছুটা বেড়েছে। ডিসেম্বরে শহর-গ্রাম-নির্বিশেষে খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৮.৫২ শতাংশ, যা নভেম্বরে ছিল ৮.১৬ শতাংশ।


বিবিএসের তথ্যানুযায়ী, ডিসেম্বরে শহর ও গ্রামে খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি প্রায় সমান ছিল। গত মাসে খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি গ্রামে ৮.৪১ শতাংশ ও শহরে ৮.৩৯ শতাংশ হয়েছে।
মূল্যস্ফীতি হলো এক ধরনের করের মতো, যা ধনী-গরিব-নির্বিশেষে সবার ওপর চাপ বাড়ায়। খাদ্য মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমে যাওয়ার অর্থ গরিব ও মধ্যবিত্তের সংসার চালাতে ভোগান্তি সামান্য কমেছে। তবে বাজারে শীতের শাক-সবজিসহ চাল, আটা, চিনি, ডাল, পেঁয়াজ, সয়াবিন তেল, আলুসহ বেশ কিছু নিত্যপণ্যের দাম এখনো বাড়তি।
পুরো বিষয়টি একটি উদাহরণ দিয়ে বোঝানো যেতে পারে। যেমন—আপনি ২০২২ সালের ডিসেম্বরে ১০০ টাকায় যত জিনিসপত্র কিনেছেন, ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে ওই টাকা দিয়ে সেই জিনিসপত্র পাবেন না। জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাওয়ায় আপনাকে ১০৯ টাকা ৪১ পয়সা খরচ করতে হবে। এই ৯ টাকা ৪১ পয়সা হলো মূল্যস্ফীতি। গত ডিসেম্বরে মূল্যস্ফীতির হার ছিল এটাই।

editor

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *