বিশেষ সংবাদদাতা: মোহাম্মদী ইসলাম হচ্ছে মোহাম্মদের ইসলাম। হযরত মোহাম্মদ (সা.) যে শান্তির বাণী আমাদের কাছে দিয়ে গিয়েছেন। তিনি ১৪শ বছর আগে বর্বর আরবজাতির এক বংশে জন্মগ্রহণ করেন। তার রাস্তা সহজ ছিল না, অনেক কঠিন ছিল। জন্মগ্রহণ করার পর থেকে ৬৩ বছর বয়স পর্যন্ত তিনি সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছেন। ঐসময় মানুষকে আল্লাহর আদর্শ কায়েম করার জন্যে, রাসুলের আদর্শ কায়েম করার জন্যে সত্যের পথে আহ্বান করেছেন, সঠিক পথ দেখিয়েছেন, শান্তির শিক্ষা দিয়েছেন এবং ঐ ৬৩ বছরে তিনি চেষ্টা করেছেন সেই আরবজাতি যারা বর্বরতার শীর্ষে ছিলেন তাদের মুমিনে পরিণত করার জন্যে এবং তাকে একে একে ২৭টি যুদ্ধ করতে হয়েছে; দান্দান মোবারক শহিদ করতে হয়েছে; নিজের ভিটা-মাটি ছাড়তে হয়েছে; নিজের আত্মীয়-স্বজন বিরোধিতা করেছেন তবুও তিনি তাঁর আদর্শ থেকে সরে যাননি। তিনি তাঁর সিদ্ধান্তে তাঁর আদর্শে অটল থেকেছেন এবং আমৃত্যু সেই মোহাম্মদী ইসলামকে কায়েম করে গিয়েছেন। এই রাহমাতুল্লিল আলামিন দয়াল রাসুল (সা.)-এর জন্ম ১২ই রবিউল আউয়াল এবং তার ওফাত ১লা রবিউল আউয়াল।
গত ২৩ সেপ্টেম্বর, শুক্রবার সাপ্তাহিক আশেকে রাসুল (সা.) মাহফিলে অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে মোহাম্মদী ইসলামের নেতৃত্বপ্রদানকারী মহামানব ইমাম প্রফেসর ড. কুদরত এ খোদা (মা. আ.) হুজুর বক্তব্য প্রদানকালে এ কথা বলেন।
ইমাম প্রফেসর ড. কুদরত এ খোদা (মা. আ.) হুজুর বলেন, আমাদের মহান মোর্শেদ অলীদের বাদশা শাহ্ দেওয়ানবাগী (রহ.) আমাদের এতো বড় নাজ-নিয়ামত দিয়েও ২টি বড় বড় নিয়ামত দান করেছেন। প্রথমত আমরা সেই রাসুলের আশেক হিসেবে নিজেদের পরিচয় দিতে পারি। শাহ্ দেওয়ানবাগীর পূর্বে কোনো ব্যক্তি প্রকাশ্যে আশেকে রাসুল বলার সাহস পাননি। আজকে আমাদের আশেকে রাসুলেরা গর্ব করে বলেন, আমি একজন আশেকে রাসুল এবং আমি দেওয়ানবাগীর মুরিদ। আজকে শাহ্ দেওয়ানবাগীর কথা শুনে বহু সুন্নী দরবার শরীফ নিজেদের পরিচয় দেয় আমরা আশেকে রাসুল কিন্তু তারা এই অনুকরণ আল্লাহর বন্ধু শাহ্ দেওয়ানবাগীর কাছ থেকেই করেছেন। এই যে রাসূলের আশেক বলতে পারা, রাসুলের আশেকদের জন্য বড় নিয়ামত। আল্লাহর বন্ধু শাহ্ দেওয়ানবাগীর কাছ থেকে এই একটি বড় নিয়ামত আমরা পেয়েছি যে, নিজেদের আশেকে রাসুল পরিচয় দিতে পেরেছি। দ্বিতীয়ত বড় নিয়ামত পেয়েছি আমরা একটি বিভ্রান্ত থেকে সরে দাঁড়াতে পেরেছি যে, ১২ই রবিউল আউয়াল রাসুল (সা.) ওফাত লাভ করেছিলেন এবং ১২ই রবিউল আউয়ালই তিনি জন্মগ্রহণ করেছিলেন। এই যে সমাজে একটি বিভ্রান্ত যেই কারণে মিলাদুন্নবি আমাদের কাছ থেকে চলে গিয়ে সিরাতুন্নবিতে রূপান্তরিত হয় এবং আনন্দ করা যাবে না, খুশি হওয়া যাবে না, হাসি দেওয়া যাবে না; আবার কান্নাও করা যাবে না। এই যে আমাকে কিংকর্তব্যবিমুঢ় হওয়ার মতো একটি মুখ বানানোর সমাজে যেই খেলা শুরু হয়েছিল তিনি এর অবসান ঘটিয়ে সমাজে সংস্কার করলেন বিদায় হজের ৮১তম দিনে রাসুল (সা.) ওফাত লাভ করেন এবং ১২ই রবিউল আউয়াল তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তবে এর ইমপ্যাক্ট হয়েছে যে, আজকে আমরা রাসুল (সা.)-এর জন্মদিনে আনন্দ করতে পারি। আমরা সর্বশ্রেষ্ঠ দিন হিসেবে তাঁর জন্মদিনে বুক ভরে আনন্দ করতে পারি এবং কিংকর্তব্যবিমুঢ় হতে হয় না। এখন আমরা মনে খুলে আনন্দ করে উজাড় করে তাঁকে ডাকতে পারি আর বলতে পারি ‘ইয়া রাসুলাল্লাহ্’ তোমাকে ভালোবেসেছি (রাসুলাল্লাহ্ মানে আল্লাহর রাসূল/আল্লাহর বন্ধু); ইয়া রাসুলাল্লাহ্ তোমাকে ভালোবাসতে পেরেছি; তোমার জন্মদিনে আনন্দ করার সুযোগ পেয়েছি। ইহা কি আমাদের জন্যে সৌভাগ্যের বিষয় নয়? এটা আমাদের জন্য অত্যন্ত নিয়ামত এবং সৌভাগ্যের বিষয়।
ইমাম প্রফেসর ড. কুদরত এ খোদা (মা. আ.) হুজুর বলেন, ঈদে মিলাদুন্নবি হচ্ছে মুসলিম উম্মাহর জন্যে সর্বশ্রেষ্ঠ আনন্দের দিন। আল্লাহর বন্ধু শাহ্ দেওয়ানবাগীর কাছ থেকে আমরা শিক্ষা গ্রহণ করেছি, যারা সামর্থ্যবান এইদিনে ছেলে-মেয়েদের নতুন জামা-কাপড় দিবেন (যার সামর্থ্য আছে)। ঈদে যেভাবে আমরা নতুন জামা-কাপড় কিনি, আমরা চেষ্টা করবো এইদিনে নিজের বাচ্চাদের অথবা যার সামর্থ্য আছে অন্য কাউকেও নতুন জামা-কাপড় দিলে ভালো। সামর্থ্যবান ব্যক্তিরা এইদিন পরিবারের জন্যে অবশ্যই ভালো খাবার রান্না করবেন; যারা মিলাদ পড়বেন এইদিনে সকলে জন্মদিনের মিলাদ আদায় করবেন। ঈদে মিলাদুন্নবি মানে নবির জন্মের খুশি। ঈদ মানে খুশি, মিলাদ মানে জন্ম, মিলাদুন্নবি মানে নবির জন্মের খুশি। নবির জন্মের খুশিতে আমরা নতুন জামাকাপড় নিতে পারি; আমরা চাইলে পরিবারের সাথে ভালো খাবারের আয়োজন করতে পারি। এই দুইটি হলো পারিবারিক বিষয়।
ইমাম প্রফেসর ড. কুদরত এ খোদা (মা. আ.) হুজুর বলেন, যারা চাকুরিজীবী আছেন আপনারা চাইলে এইদিনে আপনার সামর্থ্য অনুযায়ী আপনার অফিসে বা আপনার স্টাফদের মাঝে আপনি একটা বোনাস দিতে পারেন। দেশে-বিদেশে যেখানে যার সামর্থ্য আছে, আমার যে ভাই এবং আমার যে বোনের কানে আমার এই শব্দ পৌঁছাচ্ছে আপনাদের কাছে আহ্বান করি, এইদিন আল্লাহর বন্ধু শাহ্ দেওয়ানবাগীর রক্ত পানি করা দিন; এইদিনকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্যে তিনি নিজের জীবনকে পানি করে ফেলেছিলেন; এইদিনকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্যে সারা দুনিয়া তার বিরোধিতা করেছিল, শাহ্ দেওয়ানবাগী পিছাননি। তিনি ঠায় দাঁড়িয়ে বলেছিলেন, আমি আছি; আমি আশেকে রাসূল বলেছি এবং আমি আমার কথা থেকে ফিরে যাবো না। এইদিন সারা বিশ্বের আশেকে রাসুলদের জন্যে সর্বোৎকৃষ্ট আনন্দের দিন হিসেবে আমরা একে উদযাপন করতে চাই। যার সামর্থ্য বাসায়; যার সামর্থ্য বাসার বাইরে; যার সামর্থ্য প্রতিবেশীর সাথে; যার সামর্থ্য সমাজের মানুষের সাথে, আপনি আপনার সামর্থ্য অনুযায়ী করুন। ইমাম প্রফেসর ড. কুদরত এ খোদা (মা. আ.) হুজুর বলেন, আমরা এই মোহাম্মদী ইসলামকে সামনে অগ্রসর করবো এবং এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করবো। আমি আপনাদের সকলের কাছে সাহায্য চাই আমি তো ভিক্ষুক মানুষ, আমি তো অভাবী মানুষ; আমি সাহায্য চাই একটু সাহায্য করুন। (অশ্রু“সিক্ত চোখে বলেন) শাহ্ দেওয়ানবাগী অনেক স্বপ্ন নিয়ে আমার হাতে এই মোহাম্মদী ইসলাম তুলে দিয়েছেন। অনেক স্বপ্ন নিয়ে তুলে দিয়েছেন। আশেকে রাসূলদের আমি আল্লাহ্ ও রাসূলকে পাওয়াবো যদি আমি তা করতে না পারি আমার তো মুখ দেখানোর জায়গা থাকবে না। আল্লাহর কসম,আমার মুখ দেখানোর জায়গা থাকবে না। দুনিয়ার এই রাজনীতিতে কি হবে? নিজেকে আল্লাহ্ ও রাসূলের পথে ধাবিত করে নিজেকে চরিত্রবান বানান। শাহ্ দেওয়ানবাগী আপনাকে এতো বেশি ভালোবেসেছেন, তিনি বলতে পারেননি তার সন্তান কোন ক্লাসে পড়ে কিন্তু তিনি বলতে পেরেছেন কোন মুরিদ বিপদে আছে, কখন বিপদে আছে এবং কার সাহায্য দরকার। তিনি বলতে পারেননি নিজের সন্তানের পেটে ক্ষুধা আছে কি-না কিন্তু তিনি জানতেন কোন মুরিদের মনে ব্যথা আছে তাকে তার সাহায্য করতে হবে। আজ সেই শাহ্ দেওয়ানবাগীর মোহাম্মদী ইসলামে রাজনীতি করে আমরা ধ্বংস করে ফেলছি। চলুন, আমরা আবার প্রেমের বাগান বানাই; চলুন, আমরা আবার ঐ প্রেমের ডাকে নিজেকে আলোকিত করি; চলুন, আমরা আবার সেই জোয়ারে নিজেকে উদ্ভাসিত করি তাহলে এই মোহাম্মদী ইসলাম এগিয়ে যাবে।
পরিশেষে মোহাম্মদী ইসলামের নেতৃত্বপ্রদানকারী মহামানব, ইমাম প্রফেসর ড. কুদরত এ খোদা (মা. আ.) হুজুর তাঁর বাণী মোবারক প্রদান শেষে আখেরি মোনাজাত প্রদান করেন।