দেওয়ানবাগ ডেস্ক: দেশজুড়ে বজ্রপাত নিয়ে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। দীর্ঘ খরা শেষে একটু বৃষ্টিপাত শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বজ্রপাতের এমন তা বে মানুষজন আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। গত দুই দিনে দেশের বিভিন্ন স্থানে বজ্রপাতে অন্তত ১৯ জন নিহত হয়েছেন। গতকাল ১০ জন নিহত ও সাতজন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে কুষ্টিয়ায় দুজন, শেরপুরের নকলায় দুজন ও পাবনায় দুজন, ঝিনাইদহ ও হবিগঞ্জে একজন করে দুজন নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া সিংড়ায় বজ্রপাতে গৃহবধূ ও ধোবাউড়ায় শিক্ষার্থীর করুণ মৃত্যু হয়েছে। এদিকে, বজ্রপাতে গাজীপুরের শ্রীপুরে একটি বিদ্যালয়ের ৩০টি ফ্যান, ল্যাপটপ ও সিসি ক্যামেরা অকেজো হয়ে গেছে।
কুষ্টিয়া: সকাল ৯টার দিকে বজ্রপাতে মিরপুর ও ভেড়ামারা উপজেলায় দুজন নিহত ও অন্তত সাতজন আহত হয়েছেন। নিহতরা হলেন মিরপুর উপজেলার ছাতিয়ান ইউনিয়নের আটিগ্রামের জাহাঙ্গীর আলম (৪৫) ও ভেড়ামারার বাহিরচর ইউনিয়নের মসলেমপুর গ্রামের আশরাফুল (৪০)। মিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মোস্তফা জানান, সকালে জাহাঙ্গীর আলম বাড়ির পাশে জমিতে কাজ করছিলেন। এ সময় হঠাৎ বজ্রপাতে তিনি গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে মিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেছে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। বজ্রপাতের আরেক ঘটনায় মিরপুর উপজেলার ছাতিয়ান ইউনিয়নের আটিগ্রামের আক্তার হোসেনের মেয়ে জাস্টিস আবু জাফর সিদ্দিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণির ছাত্রী জুলিয়া স্কুলে যাওয়ার পথে গুরুতর আহত হয়েছে। জুলিয়াকে প্রথমে মিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে, পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। একই সময় ভেড়ামারা উপজেলার বাহিরচর ইউনিয়নের মসলেমপুরে গ্রামের আশরাফুল ইসলাম (৪০) জিকে সেচ পাম্প এলাকায় মাছ ধরতে গিয়ে বজ্রপাতে নিহত হন।
শেরপুর: জেলার নকলায় বজ্রপাতে দুজনের মৃত্যুর খরব পাওয়া গেছে। তারা হলেন- উরফা ইউনিয়নের রেহেনার চর এলাকার মনসের আলীর ছেলে রফিকুল ইসলাম অপি (৩০) ও একই এলাকার সিদ্দিক সরকারের ছেলে নাজমুল হক (৪৫)।
পাবনা: জেলার ঈশ্বরদী ও আটঘরিয়ায় বজ্রপাতে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতরা হলেন- ঈশ্বরদী পৌরসভার ফতে মোহাম্মদপুর এলাকার অবসরপ্রাপ্ত রেল কর্মচারী আইন উদ্দিন (৭০) ও আটঘরিয়া উপজেলার মাজপাড়া ইউনিয়নের কাকমারি গ্রামের সাদেক হোসেন মোল্লা (৩৮)।
নাটোর: জেলার সিংড়ার সুকাশ ইউনিয়নের তালঘড়িয়া গ্রামের আ. মান্নানের স্ত্রী ফাতেমা বেগম (২৮) বজ্রপাতে নিহত হয়েছেন।
সিলেট: বজ্রপাতে হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার কালিয়ারভাঙা গ্রামের জামিরুল ইসলমের ছেলে সাদিকুর রহমান (২৭) নামে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। জানা গেছে, সকালে জমিতে কাজ করতে কালিয়ারভাঙা হাওরে যান সাদিকুর। তখন বৃষ্টি শুরু হলে বজ্রপাতে তিনি গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যা আধুনিক সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
ময়মনসিংহ: বজ্রপাতে জেলার ধোবাউড়া উপজেলার গোয়াতলা ইউনিয়নের পূর্ব টাংগাটি গ্রামের আরমান আলী (১৫) নিহত হয়েছে। সে পাটরা দামপাড়া উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র।
ঝিনাইদহ: জেলা হরিণাকুণ্ডুতে বজ্রপাতে বাবুল মণ্ডল (৩৮) নামে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। দুপুরের দিকে উপজেলার নারায়ণকান্দি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
শ্রীপুর (গাজীপুর): গাজীপুরের শ্রীপুরে বজ্রপাতে একটি বিদ্যালয়ের ৩০টি বৈদ্যুতিক পাখা, টেলিভিশন, বাতি, ল্যাপটপ, ইন্টারনেট রাউডার ও সিসি ক্যামেরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।