দেওয়ানবাগ ডেস্ক: করোনা ভাইরাস দুই বছর ধরে ছড়ি ঘুরিয়েছে বিশ্বজুড়ে। লাখ লাখ মানুষের জীবন কেড়ে নিয়েছে আতঙ্ক সৃষ্টিকারী এই মহামারি। বিশ্ব অর্থনীতির জন্যও ডেকে এনেছে বিপর্যয়। দুনিয়াজুড়ে কোটি কোটি মানুষকে ঠেলে দিয়েছে দারিদ্র্যসীমার অতল গহ্বরে। মহামারি মোকাবিলায় বাংলাদেশ প্রাণহানির পরিমাণ নিম্নপর্যায়ে আনার ক্ষেত্রে ঈর্ষণীয় সাফল্য দেখিয়েছে। বিশ্বজুড়ে মহাবিপর্যয়ের দিনগুলোতে বাংলাদেশের অর্থনীতি টিকে ছিল মোটামুটি ভালোভাবে। যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে আশা করা হয়েছিল তা দ্রুতই কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে। কিন্তু রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ বিশ্ব অর্থনীতিতে যে মন্দা ডেকে এনেছে, তা মোকাবিলায় খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর খানা আয়-ব্যয় জরিপ-২০২২ এ বলা হয়েছে উচ্চমূল্যস্ফীতির কারণে দেশের প্রায় ৩৭ শতাংশ মানুষ ঋণ করে সংসার চালাচ্ছে। বর্তমানে জাতীয় পর্যায়ে একটি পরিবারের গড় ঋণ ৭৩ হাজার ৯৮০ টাকা। মাথাপিছু গড় ঋণ ১৭ হাজার ৩৬৬ টাকা। ঋণগ্রস্ত পরিবারের ক্ষেত্রে এই অঙ্ক আরও অনেক বেশি। ঋণগ্রস্ত পরিবারের গড় ঋণ ১ লাখ ৮৭ হাজার ৩০৮ টাকা। এসব পরিবারের মানুষের গড় মাথাপিছু ঋণ বেড়েছে ৪৩ হাজার ৯৬৯ টাকা। প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, গ্রামের তুলনায় শহরের পরিবারগুলোর ঋণ প্রায় ২১০ শতাংশ বেশি। ২০২২ সালে গ্রাম এলাকায় পরিবারপ্রতি ঋণ দাঁড়িয়েছে ৪৪ হাজার ৪১১ টাকা, যেখানে শহরের পরিবারগুলোর ঋণ গড়ে ১ লাখ ৩৭ হাজার ৪৫৬ টাকা, যা গ্রামের তুলনায় প্রায় তিন গুণের বেশি। যদিও শহরের ঋণগ্রস্ত পরিবারের গড় ঋণ ৪ লাখ ১২ হাজার ৬৩৮ টাকা। ছয় বছরের ব্যবধানে শহরে বাস করা পরিবারগুলোর ঋণগ্রস্ত হওয়ার হার বেড়েছে ১৩০.১০ শতাংশ। গ্রামের পরিবারগুলোর ঋণ বেড়েছে ৪১.৭৪ শতাংশ। মানুষ সংসার চালাতে ঋণগ্রস্ত হচ্ছে ভোগ্যপণ্যের দাম অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায়। মধ্যবিত্তরাও বাজার করতে গিয়ে দিশাহারা হয়ে পড়ছে। নিম্নমধ্যবিত্ত ও দরিদ্র মানুষের অবস্থা সত্যিকার অর্থে অসহনীয়। এ অবস্থার অবসানে সরকারকে তৎপর হতে হবে।
