অলী-আল্লাহগণ মানুষকে আলোকিত করতে আসেন – ইমাম প্রফেসর ড. কুদরত এ খোদা

অলী-আল্লাহগণ মানুষকে আলোকিত করতে আসেন – ইমাম প্রফেসর ড. কুদরত এ খোদা

বিশেষ সংবাদদাতা: আমাদের মোর্শেদ শাহ্ দেওয়ানবাগী (রহ.) আমাদের কাছে মোহাম্মদী ইসলাম দিয়েছেন। আমি আমার মোর্শেদ কেবলাজানকে অত্যন্ত কাছ থেকে দেখেছি এবং আমার বিশ্বাস আমার ভাই-বোনেরাও অর্থাৎ মোর্শেদের অন্যান্য সন্তানেরাও এটি স্বীকার করবেন যে, আমি মোর্শেদকে সবচেয়ে কাছ থেকে দেখেছি এবং এটিও স্বীকার করবেন যে, মোর্শেদের একেবারে চিরবিদায় পর্যন্ত শেষ ব্যক্তি আমি কথা বলেছি। ওনার সহবতে থেকে ওনাকে কাছ থেকে দেখা এবং ওনার কদমে গোলামী করার সুযোগ পেয়েছি। তিনি গতানুগতিক মহামানবদের মতো ছিলেন না। তিনি অনেক আধুনিক এবং অনেক উচ্চ মর্যাদার অলী-আল্লাহ্ ছিলেন। যদিও ওনার উপরে অনেক বড় বড় যুদ্ধ গিয়েছে কিন্তু উনি অনেক মর্ডান চিন্তা করেছেন। তরিকতপন্থীদের ইতিহাস পর্যালোচনা করে দেখবেন, এখনও অনেক পুরাতন তরিকতপন্থী আমাদের বাংলাদেশে আছেন এবং অলী-আল্লাহ্গণ আছেন যাদের অনুসারী রয়েছে। আমরা যদি একটু পর্যালোচনা করি দেখা যাবে, আল্লাহ্র বন্ধু শাহ্ দেওয়ানবাগী (রহ.)-এর তরিকতের প্রচার তাদের তুলনায় কিন্তু অনেক নতুন।


মোহাম্মদী ইসলামের নেতৃত্ব প্রদানকারী মহামানব ইমাম প্রফেসর ড. কুদরত এ খোদা (মা. আ.) হুজুর গত ১০ নভেম্বর বাবে রহমত দেওয়ানবাগ শরীফে সাপ্তাহিক আশেকে রাসুল (সা.) মাহ্ফিলে আশেকে রাসুলদের উদ্দেশে এ কথা বলেন।


ইমাম প্রফেসর ড. কুদরত এ খোদা (মা. আ.) হুজুর বলেন, এ সকল অলী-আল্লাহ্গণ কেউ ৬০ বছর, ৭০ বছর, কেউ ১০০ বছর, কেউ ১৫০ বছর, কেউ ২০০ বছর, কেউ ৩০০ বছর আগে এসেছেন। আল্লাহ্র বন্ধু শাহ্ দেওয়ানবাগী (রহ.)-এর জীবনী মোবারক যদি আমরা পর্যালোচনা করি, দেখা যাবে যে, (আমরা বলি যদিও উনি তরিকতের কার্যক্রম শুরু করেছেন ১৯৭৩ সাল থেকে)। উনার তরিকা প্রচার, প্রসারের কার্যক্রমে ওনার হাতে খড়ি শুরু হয় মূলত ১৯৮৫ সন থেকে। এর আগে উনি চন্দ্রপাড়া দরবারে ছিলেন এবং চন্দ্রপুরী (রহ.)-এর জন্য তরিকার কাজ করেছেন। কিন্তু এই মোহাম্মদী ইসলামের আদর্শ প্রচার করা শুরু করেন ১৯৮৫ সন থেকে অর্থাৎ ৩৮ বছর। ওনার তরিকতের বয়স আমার জন্ম ১৯৮৫ সনে। আমার জন্মের বছর থেকেই মোর্শেদ কেবলাজান এককভাবে তরিকতের কার্যক্রম শুরু করেন। আমার ৩৮ বছর শেষ, ৩৯ বছর চলছে। মোর্শেদ কেবলাজানেরও তরিকতের বয়স এখন ৩৮ থেকে ৩৯ বছর। এখন দেখুন, ওনার জীবনীর এই ৩৮ বছরে ওনার তরিকার প্রচার, প্রসারকে যদি আপনি পর্যালোচনা করেন, আমরা গত বছর গ্লোবাল আশেকে রাসূল কনফারেন্স করলাম। ইংল্যান্ডকে বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী দেশ মনে করা হয়। অর্থাৎ ৩৮তম বছরে ইংল্যান্ডে বসে মোহাম্মদী ইসলাম প্রচার করছি এবং পুরো ইন্টারন্যাশনালি কনফারেন্স করছি। আজকে যদি আমরা তার আগের বছর পর্যালোচনা করি, ৩৭ বছরে আমরা বাবে বরকত দরবার শরীফে বিশ্ব আশেকে রাসূল সম্মেলন করলাম। দেখুন কত লক্ষ-লক্ষ লোকের সমাগম হয়েছে। তাহলে দেখুন মাত্র ৩৭/৩৮ বছরে ওনার এই আদর্শের ব্যাপকতা কতটুকু।


ইমাম প্রফেসর ড. কুদরত এ খোদা (মা. আ.) হুজুর বলেন, আজ আপনারা আমার বোনদের দেখুন! আমি দেখতে পাচ্ছি যে, বাড়ি-বাড়ি বলুন এবং দরবার শরীফগুলো বলুন, দেখুন সব বুকড। কোথাও বসার জায়গা নেই। বহু বোনেরা বাড়ির মধ্যে বসে আছেন। ঘরের মধ্যে কোথাও জায়গা হচ্ছে না। তরিকতের জোয়ারে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যাচ্ছে। বাড়ির উঠানে জাকেরেরা বসে আছেন। একেবারে কানায় কানায় পূর্ণতা পাচ্ছে। আশেকে রাসূল ভাই ও বোনদের এই যে জোয়ার আমাদের মাঝে সৃষ্টি হয়েছে এটি কিন্তু আল্লাহর বন্ধু শাহ্ দেওয়ানবাগীর দয়ায় এবং প্রচেষ্টায়। আমাদের কোনো যোগ্যতা নেই। ওনার প্রচেষ্টায় আমরা এই পর্যন্ত আসতে পেরেছি। লক্ষ লক্ষ লোক এই তরিকায় সামিল হয়েছে। শুধু কি তাই? আজ দেখুন দেশে যেমন এই জোয়ার বইছে, ঠিক তেমনিভাবে বহির্বিশ্বেও এই জোয়ার চলমান। আপনি যদি বিশ্বের মানচিত্র নেন এবং বিশ্বের মানচিত্রের ওপরে যদি আপনার আঙুল রাখেন বিশ্বে এমন দেশ খুঁজে পেতে কষ্ট হবে যেখানে আশেকে রাসূল নেই। মানচিত্রের ওপরে আপনি আঙুল ঘোরান, ঘুরিয়ে আঙুল রাখুন। আমি বলতে পারবো ঐ দেশে কতজন আশেকে রাসূল আছে। মাত্র ৩৮ বছরে আল্লাহর বন্ধু শাহ্ দেওয়ানবাগীর আদর্শের ব্যাপকতা কতটুকু? আমি কোনো অলী-আল্লাহ্কে ছোট করছি না। কোনো অলী-আল্লাহ্কে অসম্মান করে বলছি না। সকল অলী-আল্লাহ আমাদের মাথার তাজ। আমরা ওনাদের সম্মান জানাই এবং ওনাদের ভালোবাসি। এই যে দেখুন, দরবার শরীফ কানায় কানায় আমাদের আশেকে রাসূলে পূর্ণ। বলা যায়, এটি তো সব জায়গায় মোহাম্মদী ইসলামের জোয়ার চলছে৷ কোথাও এই জোয়ার বাকি নেই। ৩৮ বছরের এই সময়ে মানুষ আল্লাহ্ ও রাসূলের পথে ধাবিত হয়েছেন, এমন এমন লোক আমাদের মাঝে এসে পৌঁছেছে। এতো বেশি লোকের জোয়ার আমাদের মাঝে বইছে, এটি অন্য অনেক অলী-আল্লাহর পক্ষেই করা অনেক কঠিন কাজ, যা আল্লাহর বন্ধু শাহ্ দেওয়ানবাগী (রহ.) করে দেখিয়েছেন। এই যে জোয়ার আমাদের মাঝে এসেছে এবং আল্লাহর বন্ধু শাহ্ দেওয়ানবাগী (রহ.) এই যে জোয়ার আমাদের মাঝে এনে দিয়েছেন, এই জোয়ারের ফলে আমাদের সুবিধা হয়েছে। খুব শর্ট টাইমে এর ব্যাপক প্রচার এবং প্রসার হয়েছে। আসলেই ওনার মতো উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন মহামানব পাওয়া বড় কঠিন।


তিনি বলেন, একদিন একজন জাকের ভাই ওনাকে (দয়াল বাবাজান) প্রশ্ন করেছিলেন যে, অলী-আল্লাহরা কি নিজে বলবে যে, তিনি অলী-আল্লাহ্? আল্লাহর বন্ধু শাহ্ দেওয়ানবাগী জবাব দিয়েছিলেন, এই মিয়া! অলী-আল্লাহ্ এতো বছর সাধনা করে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করে আল্লাহর বন্ধুত্বের মর্যাদা পেলে বলতে লজ্জা কোথায়? আর আমি যদি না বলি, আমি অলী-আল্লাহ্, তবে মানুষ আমার কাছে এসে নিজেকে চরিত্রবান বানাবে কীভাবে? বললো, আমি শুধু বলবো না, আমি টেলিভিশনে বিজ্ঞাপন দিয়ে প্রচার করবো- “এসো আমার কাছে, আমি তোমাকে আল্লাহ্কে পাওয়াতে চাই। দেখুন উনি কত মর্ডান, কত উচ্চ মর্যাদাশীল অলী-আল্লাহ্ ছিলেন। দুনিয়ার জমিনে কে এভাবে শক্ত কথা বলতে সাহস করেছেন? দেখুন, উনি পারতেন সকলের সাথে মিল দিয়ে, তাল দিয়ে এবং সকলের সাথে মহব্বত ঠিক রেখে তরিকার কাজ করতে। তাহলে হয়তো আরও ব্যাপকতা লাভ করতো। উনি তা করেননি। এটি ওনার স্টাইল ছিল না। ওনার স্টাইল ছিল সত্য, সত্য; সঠিক, সঠিক। আমি সরল পথে হাঁটবো। কেউ আসুক অথবা না আসুক, কেউ পক্ষে থাকুক অথবা না থাকুক আমি হাঁটবো। তিনি এসে জোর দিয়ে বললেন-“আল্লাহর আকার আছে, তিনি নিরাকার নন।” এই কথা শোনার পরে মনে হয় একটি এটম বোম ব্লাস্ট হলো। তারপরে তিনি বললেন, আমি আল্লাহ্কে দেখেছি। বলুন, এই জগতে মাইকে এই কথা বলার সাহস কে রাখে? আল্লাহর বন্ধু শাহ্ দেওয়ানবাগী (রহ.) শুধু সাহস রাখলেন না। জানেন, ৯৯ সনে প্রথমে যখন মাইকে বললেন আল্লাহ আকার এবং আল্লাহ্কে তিনি দেখেছেন, এই কথা বলার কারণে এলাকার মানুষ এবং আরও কিছু লোকজন এসে ওনার দেওয়ানবাগের বাবে জান্নাত দরবার ভেঙ্গে দিলো। সাধারণত ওনার জায়গায় আমরা থাকলে কি করতাম? থাক ভাই ভুল হয়ে গিয়েছে, আর করবো না। ভাই মারামারির দরকার নেই। না-কি? উনি সাংবাদিক সম্মেলন করলেন। সাংবাদিক সম্মেলন করে বললেন, আমি আল্লাহ্কে দেখেছি। পুত্র যেমন তার পিতাকে চিনে, আমি আমার আল্লাহ্কে একইভাবে চিনি। এই কথা শুনে সাংবাদিকদের চিৎকার, চেঁচামেচি শুরু হয়ে গেল। সাংবাদিক একের পরে এক প্রশ্ন করতে করতে আমার মোর্শেদ কেবলাজানকে জর্জরিত করে ফেললেন যে, আপনি আল্লাহ্কে দেখেছেন! কিভাবে দেখেছেন? কি রকম দেখেছেন? কি রকম দেখতে সেই অনেক কথা। তখন তিনি জবাব দিলেন, “আপনাদের যদি আমার কথা বিশ্বাস না হয়, আপনারা আমার কাছে আসুন। আমি আপনাদের আল্লাহ্কে দেখিয়ে দিবো। আমার কাছে গোলামী করুন। আমি আপনাদের আল্লাহ্কে দেখিয়ে দিবো এবং যদি দেখাতে না পারি দেশ ছেড়ে চলে যাবো।” বোঝেন, কি রকম সাহসের কথা? সাংবাদিককে বলেছেন যে, আপনি আমার কাছে এসে গোলামী করুন আমি যদি আপনাকে আল্লাহ্কে দেখাতে না পারি, দেশ ছেড়ে চলে যাবো। আমি ঐ সাংবাদিক সম্মেলনে মোর্শেদ কেবলাজানের সাথে ছিলাম। দেখেছি ওনার বলিষ্ঠ নেতৃত্ব, বলিষ্ঠ কন্ঠ এবং জাঁদরেল ভাষণ! আমাদের অনেক আশেকে রাসূল ঐ সাংবাদিক সম্মেলনে ছিলেন। ওনার চেহারা মোবারক পুরো টকটকে লাল হয়ে গিয়েছিল। রাগত স্বরে তিনি বললেন, আসুন আমার কাছে! আমার কাছে গোলামী করুন। আমি যদি আল্লাহ্কে দেখাতে না পারি আমি কথা দিচ্ছি, আমি দেশ ছেড়ে চলে যাবো। সে সময়ের মানবজমিন পত্রিকার লীড নিউজ ছিল-“দেওয়ানবাগীর চ্যালেঞ্জ, আল্লাহ্কে দেখাতে না পারলে দেশ ছেড়ে চলে যাবে।” চিন্তা করুন, এইরকম অলী-আল্লাহ্ কোথায় পাওয়া যায়? এইরকম মহামানব কোথায় দেখা যায়?


ইমাম প্রফেসর ড. কুদরত এ খোদা (মা. আ.) হুজুর বলেন, ইমাম শাহ্ চন্দ্রপুরী (রহ.) আল্লাহর আকার সম্পর্কে বলতেন-“আল্লাহর আকার আছে এটিও ঠিক, আল্লাহ নিরাকার এটিও ঠিক।” দুটিই ঠিক (আকারও ঠিক, নিরাকারও ঠিক)! এটি কি হলো? উনি পুঁটি মাছের উদাহরণ দিতেন। পুঁটি মাছ যখন পুকুর/নদীতে থাকে, সে পুকুর, নদীর আকার খুঁজে পায়। সে নদী সাঁতরাতে পারে। কিন্তু পুঁটি মাছকে যখন সমুদ্রে ছেড়ে দেওয়া হয়, তখন সমুদ্রের আকার আছে সহীহ্ কিন্তু পুঁটি মাছ শক্তি দিয়ে আর সমুদ্রের আকার খুঁজে বের করতে পারে না। সেজন্য এই উদাহরণ দিয়ে বলতেন, “যিনি দেখেছেন তার কাছে আকার, যিনি দেখেননি তার কাছে নিরাকার। বহু অলী-আল্লাহ্ বলেছেন, “আল্লাহর আকার নেই, তিনি নিরাকার।” আবার তারাই বলেছেন, আমি আল্লাহ্কে ১০০ বার দেখেছি, আমি ৯৯ বার দেখেছি, আমি ১০ বার দেখেছি, আমি ২০ বার দেখেছি….কিন্তু আল্লাহর আকার নেই। ওনারা কেন সেটি বলতে বাধ্য হয়েছেন? তৎকালীন সময়ের রাজা-বাদশাহদের চাপের কারণে, তৎকালীন সময়ের সামাজিক অবস্থার কারণে যে, এই কথা যদি বলি, তাহলে দেখা যাবে সমাজের মানুষ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে। আর শাহ্ দেওয়ানবাগীকে দেখলাম, সমাজে কি বিশৃঙ্খলা হবে? তার উপরে কি আঘাত আসবে? তিনি বাঁচবেন, না-কি তিনি মরবেন? তার কোনো খবর নেই। জিজ্ঞেস করলে বলতেন, মরতে তো একদিন হবেই। ৯৯ এর গন্ডগোলে একদিন, (আমি কোনো ব্যক্তি বিশেষের নাম উল্লেখ করবো না, আমি সমালোচনা করতে চাই না, যে কারণে নাম উল্লেখ করবো না) নির্দিষ্ট একটি দল এসে বললেন, আমাদের বাবে রহমত দরবার শরীফের ইট খুলে নিয়ে যাবে, দরবারে হামলা করবে। মোর্শেদ কেবলাজান বললেন, ঠিক আছে এসো, ইট খুলে নিয়ে যাও। আমি আরও মনে করলাম যে, মোর্শেদ কেবলাজান মনে হয় একটু শান্ত হলেন। পরদিন দেখি আরও জাঁদরেল বক্তব্য শুরু করলেন। কঠিন ধোলাই। আমি বললাম, ওরে বাবারে বাবা! মানে ওনার মতো এরকম জাঁদরেল মহামানব এই আমার জীবনে আমি দেখিনি। থাকতে পারেন হয়তো কিন্তু আমার দৃষ্টিতে আমি দেখিনি (আল্লাহ্ মাফ করুক)। স্রোতের বিপরীতে হেঁটেছেন। কখনো ভাবেননি মৃত্যু আসবে, গন্ডগোল হবে! সত্য, সত্য সেদিকেই হেঁটেছেন। এতো কিছু বলার পিছনে মৌলিক কারণ হচ্ছে আল্লাহর বন্ধু শাহ্ দেওয়ানবাগী (রহ.) এতো বড় একজন নেয়ামতপূর্ণ মহামানব ছিলেন, যিনি আমাদেরকে মোহাম্মদী ইসলাম দিয়েছেন। এই মোহাম্মদী ইসলাম উনি দিতে গিয়ে ওনার কিন্তু অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এই আদর্শ আমাদের দিতে গিয়ে ৯০ সনে ওনার বাবে জান্নাত দরবার শরীফ ভেঙ্গে দেওয়া হয়, ৯৯ সনে ওনার দরবার শরীফ ভেঙ্গে দেওয়া হয়। ৯০ এর আগে উনি যখন তরিকা প্রচারের উদ্দেশ্যে ঢাকায় না থেকে নারায়ণগঞ্জে বাবে জান্নাত দরবারে থাকতে গেলেন, ঐখানে ওনার ওপরে হামলা করা হয়। ডাকাত এসে হামলা করে। দা দিয়ে ওনার মাথা মোবারকে কোপ দেয় এবং দায়ের কোপে মাথা মোবারক ফেটে রক্তাক্ত হয়ে যায় ওনার পুরো দেহ মোবারক, এই মোহাম্মদী ইসলামের জন্য। এই মোহাম্মদী ইসলাম প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে উনি সকলের সাথে আপস করে অনেক বড় দল করতে পারতেন৷ বহু তরিকতপন্থী আলেম-ওলামা বাবাজানের কাছে এসেছেন। এসে বলেছেন, আমরা এক জোট হই। আমরা একসাথে চলি। বাবাজান বলেছেন, তোমার সাথে আদর্শের মিল নেই। তোমার সাথে যদি চলি আমার মুরিদ নষ্ট হয়ে যাবে। উনি চলেননি শুধু আমাদের কথা চিন্তা করে। অন্য একটি ফোরাম-এর সাথে যদি আমরা মিশি, আমরা মিশ্রিত আশেকে রাসূল হয়ে যাব। সেজন্য উনি করেননি। এই তরিকা প্রচার করতে গিয়ে ওনাকে ভন্ড অপবাদ নিতে হয়েছে। এই তরিকা প্রচার করতে গিয়ে ওনার দরবার ভেঙেছে। ওনাকে বেইজ্জতি করা হয়েছে৷ এলাকায় এলাকায় রাস্তায় রাস্তায় ওনার ভিডিও নিয়ে ওনাকে অপপ্রচার করা হয়েছে। তবুও উনি থামেননি। উনি জীবিত থাকা অবস্থায় ওনার মৃত ঘোষণা করা হয়েছে। কিছু মুনাফিক, কিছু দুষ্ট লোক, কিছু বিপথগামী লোক মিষ্টি বিতরণ করেছে ওনার মৃত্যুর খবরে। তবুও উনি থামেননি। তিনি আবার সুস্থ হয়ে আমাদের কাছে এসেছিলেন এবং আবার সেই তরিকার হাল ধরেছেন। সর্বমূলে তিনি চেষ্টা করেছেন এই মোহাম্মদী ইসলাম এবং এই আশেকে রাসূলদের টিকিয়ে রাখার জন্য। তিনি চেয়েছেন আপনাকে-আমাকে টিকিয়ে রাখার জন্য। আপনার আমার আদর্শকে টিকিয়ে রাখার জন্যে।


ইমাম প্রফেসর ড. কুদরত এ খোদা (মা. আ.) হুজুর বলেন, মোর্শেদের ওফাত পরবর্তীতে আমি মোর্শেদের কাছ থেকে সেই দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়ে আমিও সর্বমূলে চেষ্টা করছি আপনাদের আদর্শ টিকিয়ে রাখার জন্য, মোহাম্মদী ইসলামের আদর্শ টিকিয়ে রাখার জন্য। যে কারণে আমার ওপরও নানা অপবাদ, লাঞ্চনা-বঞ্চনা আসে। কিন্তু আমি যখন আমার মোর্শেদের কষ্টের দিকে তাকাই, তখন নিজের কষ্ট ভুলে যাই যে, আল্লাহর বন্ধু শাহ্ দেওয়ানবাগী (রহ.) কতই না অপবাদ, কতই না লাঞ্ছনা, কতই না অপমান সহ্য করেছেন। আমি তো গোলাম, আমি কেন পারবো না? সেজন্য আমিও মোর্শেদের ঐ কষ্টের কথা ভেবে, সবকিছু ছেড়ে আপস করে চেষ্টা করি তরিকাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য। এই মোহাম্মদী ইসলামের ধারা চলবে। আজ এই ধারার কথা আমি বলছি, কালকে এই ধারার কথা আমার পরে অন্যজন বলবে। কেয়ামত পর্যন্ত এই অলী-আল্লাহদের ধারা চলবে। এই ধারাকে পরিচালনা করতে হলে মনে রাখবেন, অলী-আল্লাহগণ আসবেন এবং চলে যাবেন। আপনার-আমার দায়িত্ব হচ্ছে, অলী-আল্লাহর কাছ থেকে নিজের সীনায় সেই আলোকে নেওয়া। যদি আমরা নিজের সীনায় সে আলোকে নিতে পারি, যদি নিজের সীনায় সে আলোকে জাগ্রত করতে পারি, তাহলেই আমাদের সার্থকতা। অলী-আল্লাহগণ আপনাকে-আমাকে আলোকিত করতে আসেন। আপনি আমি যদি নিজেকে আলোকিত করতে পারি তাহলেই আমাদের সার্থক জীবন।


পরিশেষে মোহাম্মদী ইসলামের নেতৃত্বপ্রদানকারী মহামানব ইমাম প্রফেসর ড. কুদরত এ খোদা (মা. আ.) হুজুর তাঁর বাণী মোবারক প্রদান শেষে আখেরি মোনাজাত প্রদান করেন।

editor

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *