আয়ারল্যান্ডের ইতিহাসে প্রথম বাংলাদেশি মেয়র

আয়ারল্যান্ডের ইতিহাসে প্রথম বাংলাদেশি মেয়র

দেওয়ানবাগ ডেস্ক: আয়ারল্যান্ডের লিমরিক সিটিতে প্রথম কোনো বাংলাদেশি মেয়র নির্বাচিত হয়ে ইতিহাস গড়লেন। ১৯ জুন আয়ারল্যান্ডের লিমরিক সিটি ও কাউন্টি কাউন্সিলে এক অনাড়ম্বর পরিবেশে মেয়র নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এ নির্বাচনে ২০ ভোটের মধ্যে ১৩ জন কাউন্সিলরের প্রত্যক্ষ ভোটে অন্য প্রার্থীকে ৭ ভোটে হারিয়ে বাংলাদেশের আজাদ তালুকদার মেয়র নির্বাচিত হন।
গ্রিন পার্টির সাসা নোভাক পান ৭ ভোট। লিমরিক কাউন্টি কাউন্সিলের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত কোনো বিদেশি বা অভিবাসী নাগরিক মেয়র হওয়ার গৌরব অর্জন করতে পারেননি। আজাদ তালুকদার দেশটির শক্তিশালী ও ঐতিহ্যবাহী এবং কোয়ালিশন সরকারে রয়েছেন। স্থানীয়দের মাঝে তার বেশ জনপ্র্রিয়তা রয়েছে। তিনি ফিনাফল পার্টি থেকে মনোনয়ন পেয়ে ২০১৯ সালে জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে লিমরিক কাউন্টি কাউন্সিলে প্রথম বাংলাদেশি কাউন্সিলর হিসেবে নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে ২০২১ সালে ডেপুটি মেয়র মনোনীত হন। এবার সম্মানজনকভাবে মেয়র নির্বাচিত হয়ে তিনি দেশের মুখ উজ্জ্বল করেছেন। আইরিশ মাটিতে রচনা করলেন এক নতুন ইতিহাস। তার এ সাফল্যে স্থানীয় প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে বইছে খুশির জোয়ার।
গাজীপুর জেলার এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে আজাদ তালুকদারের জন্ম। ২০০১ সালে তিনি জীবিকার তাগিদে ওয়ার্ক পারমিটে দেশটিতে যান। এখন তিনি নগর পিতা হিসেবে গোটা নগরের মানুষের জীবনযাপন ও মানোন্নয়নের গৌরবময় দায়িত্ব কাঁধে নিয়েছেন। এ দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করে বিদেশের মাটিতে দেশের সুনাম আরও বৃদ্ধি করতে সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন।
গাজীপুর সদরে বেড়ে ওঠা আজাদ তালুকদার আয়ারল্যান্ডে যাওয়ার পর ২০০৪ সাল থেকে দেশটির স্থানীয় রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। ফিনাফলের রাজনৈতিক মতাদর্শ ধারণ করে এগিয়ে যান বীরদর্পে। বাংলাদেশি কমিউনিটিতে বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডে নিজেকে সম্পৃক্ত করেন। স্থানীয় কমিউনিটিতে প্রশংসিত হয়েছেন বহুবার। কাজের পুরস্কার হিসেবে আয়ারল্যান্ডের লিমেরিক সিটি কাউন্সিল থেকে ২০১৯ সালে আজাদ তালুকদারকে কাউন্সিলর হিসেবে নির্বাচিত করে ফিনাফল। নির্বাচিত হওয়ার পর ফিনাফল ছাড়া অন্য রাজনৈতিক দল থেকেও কাজের প্রশংসা কুড়িয়েছেন তিনি।
সহধর্মিণী শাহানা আক্তার, বড় মেয়ে তাসফিয়া তালুকদার এবং ছোট মেয়ে আমিরা তালুকদারকে নিয়ে লিমরিকে বাস করছেন আজাদ তালুকদার। তার এই অর্জনে দারুণ উচ্ছাসিত স্থানীয় বাংলাদেশিরা। তারা মনে করেন, আজাদ তালুকদার দেশটির নেতাদের কাছে বাংলাদেশিসহ স্থানীয় কমিউনিটির সুবিধা-অসুবিধার কথা তুলে ধরবেন।
আজাদ তালুকদার বিভিন্ন গণমাধ্যমকে জানান, তিনি কমিউনিটির সেবায় এমন কিছু করতে চান যা আগামীর জন্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। বাংলাদেশ ও প্রবাসীদের মুখ তিনি উজ্জ্বল করতে চান। কমিউনিটির স্বার্থে বাংলাদেশির ঐক্যবদ্ধ থাকারও আহ্বান জানান এই রাজনীতিবিদ। আজাদ তালুকদারের এই সাফল্যের হাত ধরে আগামী প্রজন্মের বাংলাদেশি তরুণরা আয়ারল্যান্ডের রাজনীতিতে যুক্ত হওয়ার অনুপ্রেরণা পাবেন বলে মনে করেন অনেকেই।

editor

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *