উচ্চ রক্তচাপ এখন ঘাতক ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে। অনুমিত হিসেবে দেশের ৩ কোটিরও বেশি মানুষ এ রোগে ভুগছেন। সোজা কথায় প্রতি পাঁচজনের একজন উচ্চ রক্তচাপের শিকার। যেহেতু এ বিষয়ে কোনো সঠিক পরিসংখ্যান নেই, সেহেতু বাস্তবে যদি রোগীর সংখ্যা অনুমিত হিসাবের অর্ধেকও হয় তারপরও সেটি উদ্বিগ্ন হওয়ার মতো। বিপুলসংখ্যক মানুষ উচ্চ রক্তচাপে ভুগলেও আক্রান্তদের ৫৯ শতাংশই জানেন না যে তারা এ ঘাতক রোগের শিকার। যারা জানেন তাদেরও অনেকেই চিকিৎসা নেন না। চিকিৎসা নিচ্ছেন এমন মানুষের ৭৫ শতাংশ নিয়মিত ওষুধ সেবন করেন না। বাংলাদেশ জনমিতি ও স্বাস্থ্য জরিপ অনুযায়ী দেশে ১৮ বছরের বেশি বয়সী ২৭ দশমিক ৩ শতাংশ মানুষ উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন। উচ্চ রক্তচাপ পুরুষের চেয়ে নারীর বেশি। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসাবে, দেশে ১৮ বছরের বেশি জনসংখ্যা ১১ কোটি ১৮ লাখ ৯৬ হাজার। সেই হিসাবে ৩ কোটির বেশি মানুষ এই দীর্ঘস্থায়ী রোগে আক্রান্ত।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী অনেকে রোগ আছে জেনেও চিকিৎসা নেন না। আবার চিকিৎসা নিয়েও অনেকে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেন না। ওষুধের দাম, ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া, ওষুধ না পাওয়ার কারণে হয়তো কেউ কেউ মাঝপথে চিকিৎসা বন্ধ করেন। আবার এমনও হতে পারে যে অনেকে জানেন না ওষুধ দীর্ঘকাল খেয়ে যেতে হবে। দেশে কিডনি রোগ বেড়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ অনিয়ন্ত্রিত উচ্চ রক্তচাপের প্রকোপ বৃদ্ধি বলে মনে করা হয়। সোজা কথায় উচ্চ রক্তচাপ এমন এক রোগ যা আরও অনেক রোগের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। বিশেষ করে কিডনি বিকল হয়ে গেলে চিকিৎসা চালানো বিত্তবানদের জন্যও কঠিন হয়ে দেখা দেয়। স্বল্প আয়ের লোকেরা কী অসহায় অবস্থায় পড়ে সহজেই অনুমেয়। উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি দেশের জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ হুমকি মোকাবিলায় স্বাস্থ্য সচেতনতার কোনো বিকল্প নেই। খাদ্য তালিকায় চর্বিযুক্ত মাংসের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। হাঁটাচলা এবং শারীরিক পরিশ্রম বাড়াতে হবে।