লোকমান হাকিমের ছয় উপদেশ

লোকমান হাকিমের ছয় উপদেশ

মুহাম্মাদ নুরুল ইসলাম: লোকমান হাকিম। একটি পরিচিত নাম। ওয়াজের ময়দানে কিংবা জুমার খুতবায় নামটি শুনা যায়। আল্লাহ তায়ালা অনেক মানুষকে অনেক কিছু দিয়েছেন।


কাউকে দিয়েছেন তীক্ষ্ণ মেধা, কাউকে দিয়েছেন বোঝার ক্ষমতা, কাউকে দিয়েছেন ধৈর্য ধরার ক্ষমতা। আল্লাহ তায়ালা লোকমান হাকিমকে দিয়েছেন হিকমত।
লোকমান হাকিমের নসিহত বিভিন্ন কিতাবের পরতে পরতে পাওয়া যায়। লোকমান হাকিম তার ছেলেকে নসিহত করেন, ‘হে আমার ছেলে! কখনো আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরিক করিও না। কেননা এটা বড় জুলুম!’ আল্লাহ তায়ালার এই নসিহত পছন্দ হয় এবং কালামুল্লাহ শরিফে তা তুলে ধরেন।


প্রথম উপদেশ: নামাজে দাঁড়ালে অন্তরের হেফাজত কর। আমরা যখন নামাজে দাঁড়াই তখন মনকে স্থির রাখা কষ্ট হয়ে পড়ে। আপনি একটা জিনিস হারিয়ে ফেললেন। অনেক খুঁজেও পেলেন না। দেখা যায়, নামাজে দাঁড়াতেই মনে পড়ে, ‘ও আমি তো জিনিসটা অমুক জায়গায় রেখেছিলাম।’ শয়তান আপনার মনকে স্থির থাকতে দেয় না। মূলত সব শয়তানের ছলচাতুরী। এজন্য লোকমান হাকিম বলেন, নামাজের সময় অন্তরের হেফাজত কর।


দ্বিতীয় উপদেশ: খাওয়ার সময় হলকের হেফাজত কর। হলক বলা হয় খাদ্যনালিকে। অনেক সময় এমন হয়, তাড়াহুড়া করে খেতে গিয়ে গলায় আটকে যায় অথবা ওপরে খানা উঠে নাক জ্বালাপোড়া করে। অনেক সময় মাথায় উঠে যায়। হলকের হেফাজত মানে আস্তে ধীরে খাওয়া। তাড়াহুড়া না করা।


তৃতীয় উপদেশ: অন্যের ঘরে চোখের হেফাজত কর। আমাদের একটা বদ অভ্যাস হলো, কারও ঘরে গেলে চোরের মতো এদিক-ওদিক তাকানো, যে কারোর বেডরুমে চলে যাওয়া, যে কারোর ঘরে অনুমতি ছাড়া রান্নাঘর পর্যন্ত চলে যাওয়া। এ অভ্যাসটা আমাদের থেকে দূর করা উচিত।


চতুর্থ উপদেশ: লোকালয়ে জবানের হেফাজত কর। লোকালয়ে কথা বলার সময়, ভাষণ দেওয়ার সময় জবানকে সংযত রাখার চেষ্টা করবেন। আপনার অসতর্কতায় মুখ দিয়ে বের হওয়া একটা শব্দ কিন্তু আপনার ক্যারিয়ারে প্রভাব ফেলতে পারে। পদ থেকে বহিষ্কৃত হতে পারেন, চাকরিচ্যুত হতে পারেন।


পঞ্চম উপদেশ: মৃত্যুকে এক মুহূর্তের জন্য ভুলিও না। মানুষ দুনিয়ার পিছে ছুটা তখন বন্ধ করবে, যখন মৃত্যুর কথা স্মরণ থাকবে। কারণ সে জানে মৃত্যুই সমাপ্তি নয়, বরং মৃত্যুই হলো প্রবেশের মূল ফটক। এ জীবন তো ক্ষণিকের।


ষষ্ঠ উপদেশ: আল্লাহকে স্মরণ কর। আল্লাহ বলেন, তোমরা আমাকে স্মরণ কর, আমিও তোমাদের স্মরণ করব। (সূরা বাকারা ২: আয়াত ১৫২) যার অন্তরে সর্বদা আল্লাহর জিকির থাকবে, যার জিহবা সর্বদা আল্লাহর জিকিরে ব্যস্ত থাকবে, আল্লাহ তায়ালা তাকে প্রিয় বান্দাদের কাতারে শামিল করে নেবেন। তার জন্য দুনিয়া-আখিরাত সহজ করে দেবেন।

editor

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *