ডলারের দাম কমছে
দেওয়ানবাগ ডেস্ক: বিশ্ব অর্থনীতির জন্য ডলারের দাম বৃদ্ধি ডেকে এনেছিল মহাসংকট। যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভের সুদহার বাড়ানোর পরিণতিতে ছুটতে থাকে মূল্যবৃদ্ধির পাগলা ঘোড়া। গত বছর দুনিয়ার প্রায় সব দেশেই বাড়তে থাকে ডলারের দাম। করোনাকালে একবার টাকার বিপরীতে ডলারের দাম হ্রাস পাওয়ার নজির স্থাপিত হলেও বিগত বছরে নাস্তানাবুদ অবস্থার শিকারে পরিণত হয় বাংলাদেশের মুদ্রা টাকা। এর প্রভাবে নিত্যপণ্যের দামও বাড়তে থাকে হু হু করে। ডলারের বিপরীতে টাকার দাম কমায় সাধারণ মানুষের প্রকৃত আয়েও ধস নামে। আশার কথা, ডলারের মূল্য বৃদ্ধির প্রবণতা থেমে গেছে। মার্কেট ইনসাইডারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২২ সালের প্রথম ৯ মাসে বিশ্ববাজারে ডলারের দাম ১৭ শতাংশের বেশি বাড়লেও অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর শেষ তিন মাসে দাম পড়েছে প্রায় ৮ শতাংশ। এই দরপতন এ বছরও অব্যাহত থাকবে। আশা করা হচ্ছে, ডলার ফিরে যাবে আগের অবস্থানে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ২০২৩ সালে ডলারের আরও পতন দেখা যাবে। কারণ ফেডারেল রিজার্ভ মুদ্রানীতি আর কঠোর করবে না, বরং কিছুটা শিথিল করার আলামতই লক্ষ্য করা যাচ্ছে। মুদ্রাবাজারে ইউরোর বিপরীতে সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছেছে ডলারের মূল্য। কারণ যুক্তরাষ্ট্রের মূল্যস্ফীতি হ্রাস পাওয়ায় ফেডারেল রিজার্ভ সুদের হার কমাতে পারে। কঠোর মুদ্রানীতি গ্রহণ থেকে সরে আসতে চাচ্ছে তারা। আর এর ফলেই ডলারের দরপতন ঘটছে। বাংলাদেশে আন্তব্যাংক মুদ্রাবাজারে জানুয়ারিতে সর্বনিম্ন ১০৩ থেকে ১০৭ টাকায় ডলার বিক্রি হচ্ছে। খোলাবাজারেও ডলারের দাম কিছুটা কমেছে। মতিঝিল ও পল্টনের মানি এক্সচেঞ্জে সোমবার খোলাবাজারে প্রতি ডলার ১১০ টাকায় বিক্রি হয়েছে, যা সপ্তাহ দুয়েক আগেও ছিল ১১৪ টাকা ৫০ পয়সা। ডলারের দাম হ্রাস পাওয়ায় হুন্ডির প্রবণতা সামাল দেওয়া সম্ভব হবে বলে আশা করা হচ্ছে। গম, চিনি, ভোজ্য তেলের মতো আমদানিনির্ভর পণ্যের দামও কমবে। কয়েক মাস ধরে দেশে যে সর্বনাশা ডলার সংকট চলছে তার সমাপ্তিও ঘটবে। গুজব ছড়িয়ে যারা দেশের অর্থনীতিতে ধস নামানোর ষড়যন্ত্রে হাত পাকাচ্ছিল তাদের স্বপ্ন ভেস্তে যাবে। দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্যও তা ইতিবাচক প্রভাব রাখবে বলে আশা করা যায়।