কারও প্রতিবেশী যদি পেটে ক্ষুধা নিয়ে রাত যাপন করে, কেউ যদি কোনো পথশিশুকে ক্ষুধার তাড়নায় কাতরাতে দেখে আর সে যদি ক্ষুধার্ত প্রতিবেশী কিংবা ক্ষুধার্ত পথশিশুর পাশে এসে না দাঁড়ায়, তাহলে বুঝতে হবে তার মাঝে মানবতার লেশমাত্রও নেই। যার মাঝে মানবতাবোধ আছে সে অবশ্যই অসহায় দুস্থ মানুষের পাশে এসে দাঁড়াবে। তার সামর্থ্য অনুযায়ী এগিয়ে আসবে সহযোগিতা করবে। আর এটাই তো মানবতার সেবা।
অপরের সেবা করা প্রতিটি মানুষের কর্তব্য কিন্তু সেবা মানে কেবলমাত্র হাত দিয়ে সেবা তা নয়, সেবার মধ্যে আন্তরিকতা থাকতে হবে। সেবার মধ্যে হৃদয়ের স্পর্শ না থাকলে সেই সেবা হয়ে যায় নিরর্থক। মন যদি না চায়, কেবলমাত্র বিশেষ কারণে কেউ যদি কারও সেবা করে তাহলে সেই সেবা সুন্দর হয় না।
দানে যদি শ্রদ্ধা না থাকে তবে রাজভোগ দিলেও সে দানের মহত্ত্ব থাকে না। অনিচ্ছায় কোনো কাজ ঠিকমতো হয় না, জোর করে কিছু করালেও সেই কাজে খুঁত থাকে। শ্রদ্ধাসহ কোনো কাজ না করলে সেই কাজেও সৌন্দর্য রক্ষিত হয় না।
দানের মধ্যে অশ্রদ্ধার ভাব থাকলে দাতা ও গ্রহীতার মধ্যে পার্থক্যের অবসান ঘটে না। এই পার্থক্যের অবসান না ঘটলে এদের পারস্পরিক কোনো কাজই মধুরভাবে সমাপ্ত হয় না। তেমনি সেবক এবং সেবিতের মধ্যে যদি মনের টান না থাকে তাহলে সেবাদান এবং সেবা গ্রহণ কাজও মধুর হয় না। আসলে আন্তরিকতাহীন কোনো কাজই সুষ্ঠু হয় না।
শ্রদ্ধা এবং আন্তরিকতার সঙ্গে গ্রহীতাকে যা কিছুই দেওয়া হোক না কেন সেই দানের সার্থকতা প্রকাশ পায়। কিন্তু অশ্রদ্ধায় কেউ কাউকে রাজভোগ দিলেও তা বিষবৎ মনে হয়। কাউকে শ্রদ্ধার সঙ্গে দান করলে দানের মর্যাদা রক্ষিত হয়। কিন্তু কাউকে অশ্রদ্ধার সঙ্গে কিছু দান করলে সেই দানের কোনো মর্যাদা থাকে না।
তাই শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার সঙ্গে মানুষের সেবা করা উচিত। এটাই হলো প্রকৃত সেবা। আন্তরিকতা, শ্রদ্ধা, ভালোবাসা দাতা এবং দান গ্রহণকারীর মধ্যে প্রভেদ মুছে দেয়। তাই প্রতিটি মানুষের উচিত শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার সঙ্গে অপরের সেবা করা। দুস্থ মানবতার সেবায় মানুষের রয়েছে অনেক করণীয়।
মানবসেবায় যারা জড়িত তাদের সবার মাঝে এ কাজের প্রতি উদ্বুদ্ধকারী হিসেবে যে শক্তি কাজ করে, সেটা হচ্ছে মানুষের মানবতাবোধ। যার মাঝে মানবতাবোধ আছে সেই মানবসেবার এ কাজে এগিয়ে আসে। বর্তমান যুগে এ মানবতাবোধের প্রয়োজন সবচেয়ে বেশি।