ইমাম প্রফেসর ড. আরসাম কুদরত এ খোদা
মহান রাব্বুল আলামিনের সর্বপ্রথম ও সর্বশ্রেষ্ঠ সৃষ্টি হলেন দোজাহানের বাদশাহ্ রাহমাতুল্লিল আলামিন হযরত রাসুল (সা.)। তাঁকে সৃষ্টির মধ্য দিয়ে আল্লাহ্ তায়ালা সৃষ্টির লীলা শুরু করেছেন। এ প্রসঙ্গে হযরত রাসুল (সা.) ফরমান, ‘‘মহিমান্বিত আল্লাহ্ সর্বপ্রথম আমার নুর সৃষ্টি করেন।’’ (তাফসীরে রুহুল বয়ান ২য় খণ্ড, পৃষ্ঠা ৩৭০) আমার মহান মোর্শেদ মহান সংস্কারক মোহাম্মদী ইসলামের পুনর্জীবনদানকারী সূফী সম্রাট হযরত সৈয়দ মাহবুব-এ-খোদা দেওয়ানবাগী (রহ.) হুজুর কেবলাজান নুরে মোহাম্মদী তথা হযরত রাসুল (সা.)-এর সৃষ্টি প্রসঙ্গে বলেন-
অতি গোপনে নুরে জাত ছিল ধনাগারে
নুরে মোহাম্মদী পৃথক করিয়া নিজেকে প্রকাশ করে
নুরে মোহাম্মদী হইতে সমস্ত নুর করিয়া জুদা
সৃষ্টির লীলা শুরু করেছেন দয়াময় খোদা।
মূলত মহাবিশ্বের সৃষ্টির লীলা শুরু হওয়ার পূর্বেও হযরত রাসুল (সা.) আপন সত্তায় বিরাজমান ছিলেন। এ সম্পর্কে হাদিস শরীফে আল্লাহর রাসুল (সা.) নিজেই ফরমান, ‘‘আদম (আ.) যখন পানি ও কাদার মধ্যে ছিলেন, আমি তখনও নবি।’’ বর্ণিত আছে- ‘‘একবার হযরত রাসুল (সা.) জিব্রাইল (আ.)-কে জিজ্ঞেস করেছিলেন, ভাই! আপনার বয়স কতো? তিনি জবাব দিলেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ্! আমি এটা বলতে পারবো না, তবে এতুটুকু জানি আকাশে ৭০ হাজার বৎসর পরপর একটা তারকা উদিত হতো, ঐ তারকাটিকে আমি মোট ৭০ হাজার বার দেখেছি। হযরত রাসুল (সা.) বললেন, ভাই জিব্রাইল! ঐ তারকাটা আমি নিজেই ছিলাম।’’ হযরত রাসুল (সা.) এরশাদ করেন, ‘‘আমি আদম (আ.)-এর সৃষ্টির চৌদ্দ হাজার বছর পূর্ব হতে আমার প্রতিপালক আল্লাহর সম্মুখে নুর হিসেবে অবস্থান করছিলাম। তখন সে নুর আল্লাহর তাসবিহ পাঠ করত, আর ফেরশতাগণও তাঁর সাথে তাসবিহ পাঠ করত। অতঃপর যখন আল্লাহ্ আদম (আ.)-কে সৃষ্টি করেন, তখন তিনি আদম (আ.)-এর পৃষ্ঠদেশে আমার সেই নুর প্রবিষ্ট করেন।’’ (তাফসীরে রূহুল বয়ান ২য় খণ্ড, পৃষ্ঠা ৩৭০)
উল্লিখিত হাদিসসমূহ থেকে বিষয়টি সুষ্পষ্ট যে, হযরত রাসুল (সা.)-ই মহান আল্লাহর সর্বপ্রথম সৃষ্টি এবং তিনি আল্লাহর সর্বশ্রেষ্ঠ বন্ধু। তাঁর সাথে মহান আল্লাহর নিবিড় সম্পর্ক বিদ্যমান। স্রষ্টা হলেন ‘রাব্বুল আলামিন’ অর্থাৎ জগৎসমূহের প্রভু, আর হযরত রাসুল (সা.) হলেন ‘রাহমাতুল্লিল আলামিন’ অর্থাৎ জগৎসমূহের রহমত। হযরত রাসুল (সা.) মহান আল্লাহর সর্বপ্রথম সৃষ্টি হলেও তাঁকে সকল নবি-রাসুলের ইমাম করে অর্থাৎ ইমামুল মুরসালিন করে সর্বশেষ রাসুল হিসেবে আল্লাহ্ তায়ালা জগতে প্রেরণ করেন। তবে এটি সুস্পষ্ট যে, সকল নবি-রাসুল হযরত রাসুল (সা.)-এর নুরে মোহাম্মদীকে ধারণ করেই নবি ও রাসুল হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছেন। তাফসীরে দুররে মানছুর-এর ১৯তম খণ্ডের ৩৩২ পৃষ্ঠায় বর্ণিত হয়েছে- বিশিষ্ট সাহাবি হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, হযরত রাসুল (সা.) ফরমান, ‘‘হযরত রাসুল (সা.) নবিগণের পৃষ্ঠদেশ হয়ে বারবার জগতের বুকে তাশরিফ গ্রহণ করেছেন। পরিশেষে তাঁর মাতা হযরত আমিনা (আ.) তাঁকে প্রসব করেন।’’ হযরত আবু হুরায়রাহ (রা.) হতে বর্ণিত হয়েছে- আল্লাহর রাসুল (সা.) এরশাদ করেন, ‘‘আমি আদম সন্তানদের প্রত্যেক যুগের উত্তম শ্রেণিতে যুগের পর যুগ প্রেরিত হয়েছি। অতঃপর ঐ যুগে প্রেরিত হয়েছি, যে যুগে আমি বর্তমানে আছি।’’ (বোখারী শরীফ ১ম খণ্ড, পৃষ্ঠা ৫০২ ও ৫০৩, হাদিস নং ৩৪৩২; তাফসীরে মাজহারী ১ম খণ্ড, পৃষ্ঠা ১৩৫ ও ১৩৬; মেশকাত শরীফ, পৃষ্ঠা ৫১১; মুসনাদে আহমদ ৯ম খণ্ড, পৃষ্ঠা ২৫, হাদিস নং ৮৮৪৩; মুসনাদে আহমদ ৯ম খণ্ড, পৃষ্ঠা ১৯৬, হাদিস নং ৯৩৬০)
মহান আল্লাহর সর্বপ্রথম সৃষ্টি হযরত রাসুল (সা.)-কে এই ধুলির ধরায় তথা মানবকোলে প্রেরণ করা হয় হিজরি পূর্ব ৫৩ সালের ১২ রবিউল আওয়াল, সোমবার সুবহে সাদেকের সময়। তাঁর শুভজন্ম হয় আরবের সম্ভ্রান্ত কুরাইশ বংশের হাশেমি গোত্রে। তাঁর পিতার নাম হযরত আবদুল্লাহ্ (আ.) ও মাতার নাম হযরত আমিনা (আ.)। তিনি মাতৃগর্ভে থাকাকালীন তাঁর সম্মানিত পিতা হযরত আবদুল্লাহ্ (আ.) ওফাত লাভ করেন, যিনি ছিলেন আন্তর্জাতিক ব্যবসায়ী। শিশু হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর বয়স যখন মাত্র ৬ বছর, তখন তাঁর মহীয়সী মাতা হযরত আমিনা (আ.) ওফাত লাভ করেন। তাঁর বয়স যখন ৮ বছর, তখন তাঁর দাদা হযরত আবদুল মুত্তালিব (আ.) ইন্তেকাল করেন। দাদার ওফাতের পর স্বীয় চাচা হযরত আবু তালেব (রা.) তাঁর লালনপালনের দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
প্রিয় পাঠক! হযরত রাসুল (সা.)-এর শুভজন্ম ১২ রবিউল আওয়াল, সোমবার এটি সর্বজন স্বীকৃত, এতে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু যখন তাঁর ওফাতের তারিখের বিষয়টি আসে, তখন ভিন্ন ভিন্ন মত পরিলক্ষিত হয়। আর এই ভিন্ন মতের কারণ হলো যে, উমাইয়া শাসনামলে এজিদপন্থীরা হযরত রাসুল (সা.)-এর শুভ জন্মদিনের আনন্দকে ম্লান করার জন্য চক্রান্তমূলকভাবে তাঁর শুভ জন্ম ও ওফাত একই তারিখে হয়েছে বলে অপপ্রচার করেছে। কিন্তু আমাদের জন্য আনন্দের বিষয় এই যে, আমার মহান মোর্শেদ সূফী সম্রাট হুজুর কেবলাজান পবিত্র কুরআন, হাদিস ও ইতিহাসের অকাট্য দলিল দ্বারা প্রমাণ করেছেন হযরত রাসুল (সা.) ১ রবিউল আওয়াল ওফাত লাভ করেছেন। সমাজে প্রচলিত ১২ রবিউল আউয়াল ওফাতের তারিখ সঠিক নয়। তিনি পবিত্র কুরআনের বর্ণিত সূরা আল মায়িদাহ-এর ৩নং আয়াতকে হযরত রাসুল (সা.)-এর ওফাতের সঠিক তারিখ বের করার ভিত্তি হিসেবে গ্রহণ করেন। পবিত্র কুরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘‘আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের ধর্মকে পরিপূর্ণ করে দিলাম, তোমাদের প্রতি আমার নিয়ামত পূর্ণ করে দিলাম এবং ইসলামকে তোমাদের জন্য ধর্ম হিসেবে মনোনীত করলাম।’’ (সূরা আল মায়িদাহ ৫: আয়াত ৩) এ প্রসিদ্ধ আয়াতটি হিজরি দশম বর্ষের ৯ জিলহজ তারিখ, শুক্রবার আরাফাত ময়দানে অবর্তীণ হয়। বিশিষ্ট সাহাবি হযরত আবদুল্লাহ্ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, ‘‘এ আয়াত দশম হিজরির ৯ জিলহজ তারিখে নাজিল হয়। এরপর রাসুলুল্লাহ (সা.) মাত্র ৮১ দিন পৃথিবীতে জীবিত ছিলেন।’’ (তাফসীরে মা’রেফুল কুরআন, পৃষ্ঠা ৩০৯) বিদায় হজের সময় আয়াতটি অবতীর্ণ হওয়া থেকে ৮১তম দিবসে হযরত রাসুল (সা.) ওফাত লাভ করেন বলে সর্বসম্মত অভিমত। নিম্নে বিভিন্ন তাফসীর গ্রন্থে বর্ণিত অভিমত উপস্থাপন করা হলো-
– তাফসীরে দোররে মানসুর, ৩য় খণ্ড, পৃষ্ঠা ২০-এ বলা হয়েছে- ‘‘ইবনে জারীর কর্তৃক ইবনে জুরাইজ হতে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেন- এ আয়াতটি অবতীর্ণ হওয়ার পর রাসুলুল্লাহ্ (সা.) ৮১ রাত দুনিয়াতে অবস্থান করেন।’’
– তাফসীরে তাবারী, ৬ষ্ঠ খণ্ড, ৮০ পৃষ্ঠায় বলা হয়েছে- ‘‘হাজ্জাজ কর্তৃক ইবনে জুরাইজ হতে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেন- এ আয়াতটি অবতীর্ণ হওয়ার পর ৮১ রাত রাসুলুল্লাহ্ (সা.) জীবিত ছিলেন।’’
– তাফসীরে মাযহারী, ৩য় খণ্ড, ৫৪ পৃষ্ঠায় বর্ণিত হয়েছে- ‘‘ইমাম বাগবী বলেন, হারুন ইবনে আনতারা তার পিতা হতে বর্ণনা করেন, এ আয়াতটি অবতীর্ণ হওয়ার পর রাসুলুল্লাহ্ (সা.) ৮১ দিন জীবিত ছিলেন।’’
– তাফসীরে ইবনে কাসীর, ২য় খণ্ড, ২১ পৃষ্ঠায় বর্ণিত হয়েছে- ‘‘ইবনে জারীর ও অন্যরা বলেন- আরাফাত দিবসের পর হযরত রাসুল (সা.) ৮১ দিন জীবিত ছিলেন।’’
বিখ্যাত তাফসীরকারকদের বর্ণনা থেকে বিষয়টি সুস্পষ্ট যে, হযরত রাসুল (সা.) বিদায় হজের ৮১তম দিবসে ওফাৎ লাভ করেন। সুতরাং বিদায় হজের দিন থেকে ৮১তম দিবস কতো তারিখ ও কী বার হয়, তা গণনা করলে তাঁর ওফাতের তারিখের বিষয়টি সুনিশ্চিত হওয়া যায়।
হযরত রাসুল (সা.)-এর হাদিস অনুযায়ী চান্দ্র বর্ষের একমাস ৩০ দিনে এবং পরবর্তী মাস হয় ২৯ দিনে। এ হিসাবে জিলহজ মাস ২৯ দিন, মহররম মাস ৩০ দিন ও সফর মাস ২৯ দিনে হয়। সুতরাং দশম হিজরির ৯ জিলহজ হতে হিসাব করলে দেখা যায় যে, জিলহজ মাসের ২১ দিন, মহররম মাসের ৩০ দিন, সফর মাসের ২৯ এবং রবিউল মাসের ১ তারিখ তথা ১ দিন মিলে সর্বমোট ৮১ দিন হয়। এ হিসাব মোতাবেক হযরত রাসুল (সা.) একাদশ হিজরির ১ রবিউল আউয়াল, সোমবার ওফাত লাভ করেন, এ ব্যপারে সবাই একমত।
এছাড়া হযরত রাসুল (সা.)-এর গৌরবময় জীবনী মোবারক নিয়ে বিখ্যাত লেখকদের রচিত সিরাত গ্রন্থে বর্ণিত আছে যে, জীবনের শেষ ভাগে তিনি বেশ কিছুদিন অসুস্থ ছিলেন। তবে ওফাতের ৫ দিন পূর্বে তিনি হঠাৎ সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠেন। যেদিন তিনি সুস্থ হন, সেদিন ছিল সফর মাসের শেষ বুধবার, যা মুসলিম জাহানে ‘আখেরি চাহার সোম্বা’ নামে পরিচিত। উল্লিখিত হিসাব অনুযায়ী একাদশ হিজরির ২৫ সফর ছিল বুধবার। আর এ দিন ও তারিখ হতে ৫ দিন গণনা করলে একাদশ হিজরির ১ রবিউল আউয়াল, সোমবার হয়। যেহেতু ‘আখেরি চাহার সোম্বা’ হযরত রাসুল (সা.)-এর জীবনের শেষ বুধবার, সেহেতু পরবর্তী সোমবার-ই তিনি মহান আল্লাহর সাথে মহামিলনে চলে গেছেন অর্থাৎ ১ রবিউল আউয়াল, সোমবার তিনি ওফাত লাভ করেন, তা অকাট্যভাবে প্রমাণিত।
১২ রবিউল আউয়াল শুভ জন্মের তারিখ কেন হযরত রাসুল (সা.)-এর ওফাতের তারিখ বলে অপপ্রচার করা হয়েছে, সেই চক্রান্ত সূফী সম্রাট হযরত দেওয়ানবাগী (রহ.) হুজুর কেবলাজান উদ্ঘাটন করেন। তিনি বলেন, ‘‘উমাইয়া শাসনামলে এজিদপন্থীরা হযরত রাসুল (সা.)-এর জন্মদিনের আনন্দকে ম্লান করে দিয়ে মুসলমানদের এ দিনের রহমত ও বরকত হতে বঞ্চিত করার জন্য চক্রান্তমূলকভাবে তাঁর জন্ম ও ওফাত একই তারিখে হয়েছে বলে প্রচার করেছে। কারণ হযরত রাসুল (সা.) ১ রবিউল আউয়াল সূর্যাস্তের কয়েক মিনিট পূর্বে ওফাত লাভ করেছেন। তাঁর ওফাতের সংবাদ সবার কাছে ছড়িয়ে পড়তে পড়তে সূর্য অস্তমিত হয়ে যায়। চান্দ্র মাসের তারিখ সূর্যাস্তের পর থেকে গণনা করা হয় বিধায় কেউ কেউ বলেছেন তিনি ২ রবিউল আওয়াল ওফাত লাভ করেছেন। ফলে হযরত রাসুল (সা.)-এর ওফাতের তারিখটি ১ অথবা ২ রবিউল আউয়াল হিসেবে প্রচারিত হয়। এ সুযোগে উমাইয়া শাসকরা হযরত রাসুল (সা.)-এর ওফাতের তারিখ ১ ও ২ কে একত্রিত করে ১২ রবিউল আউয়াল হিসেবে প্রচার করেছে। এ চক্রান্তের শিকার হয়ে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা ১২ রবিউল আউয়ালকে হযরত রাসুল (সা.)-এর জন্ম ও ওফাতের তারিখ মনে করে এ দিনের উৎসব প্রতিপালনের ক্ষেত্রে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে, হযরত রাসুল (সা.)-এর ওফাতের দিন হলো একাদশ হিজরির ১ রবিউল আউয়াল সোমবার। সুতরাং তাঁর শুভ জন্মদিন ১২ রবিউল আউয়াল তথা পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবি (সা.) উদযাপন করা আমাদের জন্য অপরিহার্য কর্তব্য।’’ [বিশ্বনবীর স্বরূপ উদ্ঘাটনে সূফী সম্রাট: রাসূল (সঃ) সত্যিই কি গরীব ছিলেন? পঞ্চম সংস্করণ, পৃষ্ঠা ২৫-২৬]
উল্লেখ্য যে, ১২ রবিউল আউয়াল বিশ্বনবি হযরত রাসুল (সা.)-এর শুভ জন্মদিন এবং ১ রবিউল আউয়াল তাঁর ওফাত দিবস হওয়া সত্ত্বেও, ইতঃপূর্বে বাংলাদেশে ১২ রবিউল আউয়াল দিনটি ফাতেহায়ে দোয়াজদহম ও সিরাতুন্নবি (সা.) হিসেবে সরকারিভাবে পালিত হতো। আমার মহান মোর্শেদ সূফী সম্রাট হুজুর কেবলাজান হযরত রাসুল (সা.)-এর শুভ জন্মদিন পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবি (সা.)-এর গুরুত্ব ও তাৎপর্য তুলে ধরে এ দিনটিকে ‘সৃষ্টিকুলের শ্রেষ্ঠ ঈদ’ ঘোষণা করেন। পরবর্তীতে তাঁর প্রস্তাবে বাংলাদেশ সরকার ১২ রবিউল আউয়াল ফাতেহায়ে দোয়াজদহম ও সিরাতুন্নবি (সা.)-এর পরিবর্তে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবি (সা.) উপলক্ষ্যে দিনটি সরকারী ছুটি ঘোষণা করে। এ দিনটি যথাযথ মর্যাদায় উদ্যাপনের জন্য বাংলাদেশ সরকার রাষ্ট্রীয়ভাবে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করে থাকে। এ দিবসকে গুরুত্ব ও যথাযোগ্য মর্যাদার সাথে উদ্যাপনের জন্য বাংলাদেশ সরকার সকল সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ঘোষণা করেছেন। বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সরকারিভাবে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবি (সা.) মহাধুমধামের সাথে উদ্যাপিত হয়। প্রতিবছর ঈদে মিলাদুন্নবি (সা.) উপলক্ষ্যে দেওয়ানবাগ শরীফে আশেকে রাসুল (সা.) সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে লক্ষ লক্ষ আশেকে রাসুলগণ এ সম্মেলনে যোগদান করে অবারিত ফায়েজ, রহমত ও বরকত লাভ করে থাকেন।
পরিশেষে আমার মহান মোর্শেদ সূফী সম্রাট হযরত দেওয়ানবাগী হুজুর কেবলাজানের পরশময় নুরানি কদম মোবারকে জানাই লাখো শোকরিয়া, তিনি হযরত রাসুল (সা.)-এর ওফাতের তারিখ সঠিক নিরূপণ করে গোটা মুসলিম জাতির বিভ্রান্তি থেকে রক্ষা করেছেন। আমিন।