দেওয়ানবাগ ডেস্ক: ২০২৩-২৪ অর্থবছর থেকে সর্বজনীন পেনশন চালু হচ্ছে। গত বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপনের সময় অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এই তথ্য জানান। অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘এর মধ্যে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা আইন পাস হয়েছে। আশা করছি, ২০২৩-২৪ অর্থবছর থেকে দেশে সর্বজনীন পেনশন স্কিম চালু করা সম্ভব হবে।
’
প্রস্তাবিত স্কিমে অন্তর্ভুক্ত হলে ১৮ থেকে ৫০ বছর বয়সী সুবিধাভোগী ৬০ বছর বয়স পর্যন্ত এবং ৫০ বছরের বেশি বয়স্ক সুবিধাভোগী ন্যূনতম ১০ বছর পর্যন্ত চাঁদা দেওয়ার মাধ্যমে আজীবন পেনশন সুবিধা ভোগ করতে পারবে। প্রবাসে কর্মরত বাংলাদেশি নাগরিকরাও এই সুবিধা পাবেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, পেনশনে থাকাকালে ৭৫ বছর বয়স পূর্ণ হওয়ার আগে মারা গেলে নমিনি পেনশনারের ৭৫ বছর পূর্ণ হওয়ার অবশিষ্ট সময় পর্যন্ত পেনশন প্রাপ্য হবে। চাঁদাদাতা কমপক্ষে ১০ বছরের চাঁদা দেওয়ার আগে মারা গেলে জমা থাকা অর্থ মুনাফাসহ নমিনিকে ফেরত দেওয়া হবে।
চাঁদাদাতার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জমাকৃত অর্থের সর্ব্বোচ্চ ৫০ শতাংশ পর্যন্ত ঋণ হিসেবে তোলা যাবে বলে জানান তিনি। পেনশনের জন্য নির্ধারিত চাঁদা বিনিয়োগ হিসেবে গণ্য হবে এবং এর বিপরীতে কর রেয়াত সুবিধা পাওয়া যাবে। মাসিক পেনশন বাবদ প্রাপ্ত অর্থ আয়করমুক্ত থাকবে। এ ছাড়া শিগগিরই একটি পেনশন কর্তৃপক্ষ গঠন করা হবে এবং প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগের মাধ্যমে এ কর্তৃপক্ষকে কার্যকর করা হবে বলে জানান অর্থমন্ত্রী।
অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, আগামী জুলাইয়ে আগ্রহী পেনশনারদের নিয়ে পরীক্ষামূলক কার্যক্রম শুরুর পরিকল্পনা রয়েছে। এ জন্য ছয় ধরনের প্রডাক্ট স্কিম নিয়ে সর্বজনীন পেনশন আইনের বিধিমালার খসড়া প্রণয়ন করেছে অর্থ বিভাগ। দেশের ১৮ থেকে ৫০ বছর বয়সী প্রায় ১০ কোটি নাগরিককে ছয়টি শ্রেণি অনুযায়ী ভাগ করে এই স্কিম নির্ধারণ করা হয়েছে। এগুলো হলো বেসরকারি প্রাতিষ্ঠানিক চাকরিজীবী পেনশনার, প্রবাসী/অনিবাসী পেনশনার, শ্রমিক শ্রেণি, অপ্রাতিষ্ঠানিক জনগোষ্ঠী, সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচিভুক্ত জনগোষ্ঠী ও শিক্ষার্থী। প্রতিটি স্কিম হবে স্বতন্ত্র।
সব স্কিমে একটি ন্যূনতম চাঁদার হার নির্ধারিত থাকবে। শুরুতে মডেল জেলা হিসেবে রাখা হতে পারে ঢাকা এবং দেশের অন্য যেকোনো একটি জেলাকে। পরীক্ষামূলক কার্যক্রমের মেয়াদ এক থেকে দুই বছর হতে পারে। এর সাফল্যের ওপর ভিত্তি করে পরে তা সারা দেশে বিস্তৃত করা হবে। তবে শুরুর প্রক্রিয়াটি হবে সীমিত পরিসরে। ‘সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা’ সারা দেশে চালু হওয়ার পর অন্তত পাঁচ বছর তা ঐচ্ছিক রাখা হবে। পরে ২০৩০ সালের মধ্যে এটি সবার জন্য বাধ্যতামূলক করা হতে পারে।