ফিলিস্তিনকে বলা হতো শান্তির জনপদ। পৃথিবীর প্রধান তিনটি ধর্ম ইমলাম, খ্রিস্টান ও ইহুদিদের কাছে পবিত্র ও সংবেদনশীল এই ভূখন্ডে গত সাড়ে সাত দশকেরও বেশি সময় ধরে অশান্তি চেপে বসেছে। ফিলিস্তিন ভূখন্ডে পশ্চিমা দুনিয়া এবং তাদের তল্পিবাহক জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে ইসরায়েলি দখলদারিত্ব প্রতিষ্ঠার পর থেকেই সংঘাত প্রতিদিনের ঘটনায় পরিণত হয়েছে। নিজ দেশেই পরবাসী তারা। ফিলিস্তিনের বড় অংশ সরাসরি ইসরায়েলের দখলে। গাজা ও পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনিদের স্বশাসিত এলাকা থাকলেও তার এক বড় অংশ অবরুদ্ধ হয়ে আছে বছরের পর বছর ধরে। অবরুদ্ধ গাজা থেকে ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ যোদ্ধা হামাসের সদস্যরা শনিবার ভোরে ইসরায়েলের ওপর নজিরবিহীন ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালে বেঁধে যায় সর্বাত্মক যুদ্ধ। হামলা-পাল্টা হামলায় ইতোমধ্যে উভয় পক্ষের শত শত মানুষ নিহত হয়েছেন। স্মর্তব্য, ফিলিস্তিনের গাজায় ২৩ লাখ মানুষের বসবাস। ২০০৭ সালে হামাস গাজায় ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে ইসরায়েল উপত্যকাটিকে অবরুদ্ধ করে রেখেছে। তখন থেকে হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে বেশ কয়েকবার ভয়াবহ লড়াই হয়েছে। গত সেপ্টেম্বরে ইসরায়েল সীমান্তে ফিলিস্তিনি বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে গাজার কর্মীদের জন্য দুই সপ্তাহ সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছিল ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনায় আবারও দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বেড়ে যায়। ফিলিস্তিনি কর্মীদের জন্য ইসরায়েলি সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়ার ঘটনা নিয়ে আন্তর্জাতিকভাবে সমালোচনা হয়েছিল। কারণ, গাজায় কর্মসংস্থানের অভাব থাকায় এসব কর্মী ইসরায়েলে গিয়ে ভালো উপার্জনের সুযোগ পান। গত ২৮ সেপ্টেম্বর আবারও সীমান্তটি খুলে দেওয়া হয়। তখন আশা করা হচ্ছিল, গাজায় পরিস্থিতি শান্ত হয়ে আসবে। ইসরায়েল এবং ফিলিস্তিনি কর্মকর্তাদের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরে এ পর্যন্ত ইসরায়েল-ফিলিস্তিনের পাল্টাপাল্টি হামলায় কমপক্ষে ২৪৭ জন ফিলিস্তিনি, ৩২ জন ইসরায়েলি এবং দুজন বিদেশি নিহত হয়েছেন। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে বেসামরিক নাগরিকও আছেন। ফিলিস্তিন ভূখন্ডে শান্তি স্থাপনের একমাত্র পথ ফিলিস্তিনিদের অধিকার স্বীকার করে নেওয়া। তা না হলে সংঘাত চলতেই থাকবে। ফিলিস্তিন ও ইসরায়েল কারোর জন্য তা কাম্য হওয়া উচিত নয়।
- October 14, 2023
0
40
Less than a minute
You can share this post!
editor