বিচারকার্যে হযরত সুলায়মান (আ.)-এর বিচক্ষণতা

বিচারকার্যে হযরত সুলায়মান (আ.)-এর বিচক্ষণতা

আহমাদ রাইদ: আল্লাহর নবি হযরত সুলায়মান (আ.) হযরত দাউদ (আ.)-এর পুত্র ছিলেন। পিতার মতো তিনিও নবি ছিলেন। আল্লাহ তায়ালা তাঁকে নবুয়ত, জ্ঞান, প্রজ্ঞা ও তাঁর পিতার রাজত্বের স্থলাভিষিক্ত করেছেন। আল্লাহ তায়ালা তাঁকে বাল্যকালেই গভীর প্রজ্ঞা ও দূরদৃষ্টি দান করেছিলেন।

বকরিপালের মালিক ও শস্যক্ষেতের মালিকের মধ্যে পিতা হযরত দাউদ (আ.) বিরোধ মীমাংসা করেছিলেন, বালক সুলায়মান (আ.) তাঁর চেয়ে উত্তম ফয়সালা করেছিলেন। ফলে হযরত দাউদ (আ.) নিজের আগের রায় বাতিল করে পুত্রের দেওয়া প্রস্তাব গ্রহণ করেছিলেন। (দেখুন, সূরা আম্বিয়া ২১: আয়াত ৭৮-৭৯)

এছাড়া হাদিসে এসেছে, দুজন নারীর দুটি সন্তান ছিল। একদিন নেকড়ে বাঘ এসে একটি বাচ্চাকে নিয়ে যায়। তখন প্রত্যেকে বলল, তোমার বাচ্চা নিয়ে গেছে, যেটি আছে ওটি আমার বাচ্চা। বিষয়টি ফয়সালার জন্য ওই দুই নারী হযরত দাউদ (আ.)-এর কাছে এলো। তিনি বয়োজ্যেষ্ঠ নারীর পক্ষে রায় দেন। তখন তারা বেরিয়ে হযরত সুলায়মান (আ.)-এর কাছে আসে এবং সব কথা খুলে বলে।


হযরত সুলায়মান (আ.) তখন একটি ছুরি আনতে বলেন এবং বাচ্চাটাকে দুই টুকরা করে দুই নারীকে দিতে চাইলেন। তখন কনিষ্ঠ নারী বলল, আল্লাহ আপনাকে অনুগ্রহ করুন, বাচ্চাটি ওই নারীর। তখন হযরত সুলায়মান (আ.) কনিষ্ঠ নারীর পক্ষে রায় দেন। (বুখারি, হাদিস: ৬৭৬৯ ও ৩৪২৭)

এভাবে কৌশলে তিনি সত্য উদঘাটন করেছিলেন।
শিক্ষা
১. হিকমত ও বিজ্ঞতার জন্য বয়স শর্ত নয়। কখনো বয়সে ছোট ব্যক্তিও বেশি প্রজ্ঞাবান হতে পারে।
২. আলোচ্য ঘটনা থেকে হযরত সুলায়মান (আ.)-এর বিচক্ষণতা প্রমাণিত হয়।
৩. প্রজ্ঞা ও দূরদর্শিতা ন্যায়বিচারের পূর্বশর্ত।
৪. সন্তানের প্রতি মায়ের ভালোবাসা অপরিসীম।
৫. বিচারকের জন্য পুঁথিগত জ্ঞানের পাশাপাশি বাস্তবধর্মী ও কৌশলী জ্ঞান থাকা প্রয়োজন।

editor

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *