আলেকজান্ডার ফ্লেমিং ছিলেন একজন স্কটিশ জীববিজ্ঞানী ও ফার্মাকোলজিস্ট। স্কটল্যান্ডে জন্মেছিলেন তিনি। এরপর এক সময় ইংল্যান্ডের লন্ডনে চলে যান। বড় ভাই চিকিৎসক ছিলেন। তাঁর পরামর্শেই তিনিও এমবিবিএস পড়তে ভর্তি হয়েছিলেন। ১৯০৬ সালে এমবিবিএস শেষ করেন। এরপর ১৯০৮ সালে ব্যাকটেরিয়াবিদ্যায় স্বর্ণপদকসহ অনার্স শেষ করেন। তাঁর সবচেয়ে বড় আবিষ্কার ছিল অ্যান্টিবায়োটিক পেনিসিলিন। সেটাও অনেকটা দুর্ঘটনাবশত। ফ্লেমিং বলেছিলেন, ‘১৯২৮ সালের সেপ্টেম্বরের ২৮ তারিখে ভোরবেলা ঘুম থেকে ওঠার পর আমার প্ল্যান কোনোভাবেই এমন ছিল না যে, আমি পৃথিবীর প্রথম ব্যাকটেরিয়া-হত্যাকারী বা প্রথম অ্যান্টিবায়োটিক আবিষ্কার করে চিকিৎসার জগতে বিপ্লব নিয়ে আসব। কিন্তু হয়তো ঠিক সেটাই আমি করে ফেলেছি।’ স্ট্যাফাইলোকক্কাস নামে একটি ব্যাকটিরিয়া নিয়ে কাজ করছিলেন ফ্লেমিং। কাজ শেষ করে ছুটি কাটাতে চলে গেলেন ফ্লেমিং। কিন্তু গবেষণাগারের পেট্রিডিশটি ধোয়ার কথা ভুলে গিয়েছিলেন বেমালুম। গবেষণাগারে এক ধরনের গোলাকার পাত্র ব্যবহার করা হয়, তাকেই বলে পেট্রিডিশ। গ্রীষ্মের ছুটি কাটিয়ে এসে তিনি পেট্রিডিশটি ভালো করে খেয়াল করেন। সংক্রমিত সেই পেট্রিডিশকে অণুবীক্ষণ যন্ত্রের নিচে রাখতেই খেয়াল করলেন পেনিসিলিয়াম নোটাটাম ছত্রাকটি স্ট্যাফাইলোকক্কির স্বাভাবিক বৃদ্ধিতে বাধা তৈরি করছে। আলেকজান্ডার ফ্লেমিং আরও কয়েক সপ্তাহ সময় নিয়ে বেশ কিছু পেনিসিলিয়াম ছত্রাক জোগাড় করে পরীক্ষা করেন। পেনিসিলিয়ামের এমন কিছু বৈশিষ্ট্য আছে, যেগুলো শুধু ব্যাকটেরিয়ার স্বাভাবিক বৃদ্ধিকেই বাধা দেয় না, সংক্রামক অনেক রোগ প্রতিরোধেও ভূমিকা রাখতে পারে। পেনিসিলিয়াম ছত্রাক থেকে পেনিসিলিন আবিষ্কারের পেছনে অবশ্য বিজ্ঞানী ফ্লেমিংয়ের চেয়ে জার্মান বংশোদ্ভুত ইংরেজ প্রাণরসায়নবিদ আর্নেস্ট চেইনের কৃতিত্ব কোনো অংশে কম নয়। মানুষের শরীরে ব্যবহারযোগ্য অ্যান্টিবায়োটিক আবিষ্কারে তাঁর অবদান ভুলে গেলে চলবে না।
- November 26, 2023
0
31
Less than a minute
You can share this post!
editor