ফের বর্বর যুগে আফগানিস্তান

ফের বর্বর যুগে আফগানিস্তান

ফের বর্বর যুগে আফগানিস্তান

দেওয়ানবাগ ডেস্ক: আফগানিস্তানে তালেবান ক্ষমতা দখলের পর সেখানকার মানুষজনের জীবনে এসেছে আমূল পরিবর্তন। বিশেষ করে নারীদের মধ্যে-ভয় আর আতঙ্কে বিবর্ণ হয়ে গেছে স্বাধীনতার স্বপ্ন। ক্ষমতা দখলের প্রথম বছরেই নিত্য নতুন ফতোয়া জারি করে তালেবানরা। কর্মস্থলে সীমিত করা হয় নারীদের সুযোগ। বন্ধ করে দেওয়া হয় স্কুল। দুদিন আগেই ঘোষণা করে আরেক আইন- ব্যায়মঘর-পার্কে যাওয়াও নিষিদ্ধ। এত কিছুর পরও থামছে না তালেবান। এবার চাপাচ্ছে শরিয়াহ আইন। সেই আগেরবারের মতো। ১৯৯৬-২০০১ সালের প্রথম শাসনামলে এই আইনেই বর্বর হয়ে উঠেছিল তালেবান। তখন থেকেই তালেবানে বিতৃষ্ণা ছড়িয়ে পড়ে পুরো আফগান ভূখণ্ডে।

দ্বিতীয় মেয়াদের শুরুতে ‘সেই ভুল আর হবে না’ ঘোষণা দিলেও শেষমেশ রক্তে-মাংসে মিশে থাকা পূর্বসূরিদের পুরান পথেই হাঁটছে তালেবানের নতুন কাণ্ডারিরা। মুখে রূঢ় হবে না বললেও বাস্তবে সেই গোঁড়া শাসনই চালাচ্ছে। রোববার নয়া ঘোষণায় দেশে পূর্ণ শরিয়াহ আইন চালুর ঘোষণা দিয়েছেন তালেবানের সর্বোচ্চ নেতা হেবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা।

তালেবানের প্রধান মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ বলেছেন, সর্বোচ্চ নেতা বিচারকদের ইসলামিক শরিয়াহ আইন সম্পূর্ণরূপে বাস্তবায়নের নির্দেশ দিয়েছেন। যার মধ্যে রয়েছে প্রকাশ্য মৃত্যুদণ্ড, পাথর মারা, বেত্রাঘাত এবং চুরির জন্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কেটে ফেলা। গভীর রাতের টুইট বার্তায় তিনি বলেন, বিচারকদের একটি দলের সঙ্গে সর্বোচ্চ নেতা হেবাতুল্লাহ আখুন্দজাদার গোপন বৈঠকের ‘পরই বাধ্যতামূলক’ আদেশটি এসেছে। আখুন্দজাদা বিচারকেদের বলেছেন, ‘চোর, অপহরণকারী এবং রাষ্ট্রদ্রোহীদের ফাইল সাবধানে পরীক্ষা করুন। হুদুদ ও কিসাসের সব শরিয়াহ (ইসলামি আইন) শর্ত বাস্তবায়ন করুন। এটি শরিয়তের বিধান এবং আমার আদেশ, যা ফরজ।’ শরিয়াহ আইনে অপরাধগুলোকে সাধারণত দুটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। একটি হলো ‘হুদুদ’ অপরাধ-যেগুলোর জন্য রয়েছে নির্দিষ্ট শাস্তি। হুদুদের মধ্যে রয়েছে-চুরি, যার শাস্তি হিসাবে হাত কেটে ফেলার বিধান আছে। ব্যভিচার, যার জন্য কঠোর শাস্তি আরোপ করা যেতে পারে। চুরি ঠেকাতে চোরের হাত কেটে দেওয়া। অন্যটি হলো ‘কিসাস’-অনুরূপ করা বা সমান করা। হত্যা বা জখমের ক্ষেত্রে অনুরূপতা নীতিভিত্তিক ন্যায়বিচারকে কিসাস বলে। চোখের বদলে চোখ, নাকের বদলে নাক এবং হত্যার বদলা হত্যা এটাই হলো কিসাস। দেশটির ইসলামিক পণ্ডিতরা বলেছেন, অপরাধের জন্য হুদুদ শাস্তি দেওয়ার ক্ষেত্রে অত্যন্ত উচ্চমাত্রার প্রমাণের প্রয়োজন হয়। যার মধ্যে ব্যভিচারের ক্ষেত্রে স্বীকারোক্তি বা চারজন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ মুসলমানের সাক্ষী প্রয়োজন।

editor

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *