বাণিজ্য ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি কমে অর্ধেকে নেমেছে। চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে পোশাক রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ছিল ৬.৩১ শতাংশ, সেখানে আগস্টে সেটি কমে হয়েছে ২.৯৫ শতাংশ। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) পরিসংখ্যান ও বিজিএমইএর তথ্যে এ চিত্র উঠে আসে।
ইপিবির তথ্য অনুসারে, জুলাই মাসে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রপ্তানি গন্তব্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানি ৬.৩১ শতাংশ বেড়ে ৭২ কোটি ৯০ লাখ ডলার হয়েছিল, যা ২০২২-২৩ সালের জুলাই মাসে ছিল ৬৮ কোটি ৫৭ লাখ ডলার।
অন্যদিকে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুলাই-আগস্ট সময়ের জন্য প্রকাশিত পরিসংখ্যান অনুসারে, চলতি অর্থবছরের জুলাই-আগস্ট মাসে পূর্ববর্তী অর্থবছরের (২০২২-২৩) একই সময়ের তুলনায় বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রপ্তানি গন্তব্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২.৯৫ শতাংশ। এ সময় দেশটিতে পোশাক রপ্তানি হয়েছে ১৪৬ কোটি ডলারের।
এদিকে একই সময় ইউরোপের বাজারে পোশাক রপ্তানি গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১১.৮১ শতাংশ বেড়ে ৩৪৪ কোটি ডলার থেকে ৩৮৫ কোটি ডলার হয়েছে। বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম রপ্তানি গন্তব্য জার্মানিতে রপ্তানি ৬.২৯ শতাংশ কমে ৯৯ কোটি ডলারে পৌঁছেছে।
স্পেন, ফ্রান্স, ইতালি, নেদারল্যান্ডস ও পোল্যান্ডের মতো ইউরোপীয় ইউনিয়নের বড় বাজারগুলোতে রপ্তানি যথাক্রমে ২৬.৯৪ শতাংশ, ৮.৪৫ শতাংশ, ২৮.৭৩ শতাংশ, ১৮.৯৫ শতাংশ এবং ২৬.৩৭ শতাংশ বেড়েছে।
২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুলাই-আগস্ট সময়ের মধ্যে যুক্তরাজ্য ও কানাডায় রপ্তানি যথাক্রমে ৯৭ কোটি ৬৭ লাখ এবং ২৪ কোটি ৩৪ লাখ ডলারে পৌঁছেছে। উভয় বাজারে ১৯.১৪ শতাংশ এবং ৭.২২ শতাংশ হারে রপ্তানি বেড়েছে। একই সময় অপ্রচলিত বাজারে আমাদের পোশাক রপ্তানিও ২১.৯৪ শতাংশ বেড়ে ১৪৭ কোটি ডলারে পৌঁছেছে।
প্রধান অপ্রচলিত বাজারগুলোর মধ্যে জাপান, অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ কোরিয়ায় রপ্তানি যথাক্রমে ৩৩.৯৭ শতাংশ, ৪৯.৫২ শতাংশ এবং ১৯.৫১ শতাংশ বেড়েছে। তবে ভারতে পোশাক রপ্তানি কমেছে ৩.১৪ শতাংশ।
এ বিষয়ে বিজিএমইএর পরিচালক ও ডেনিম এক্সপার্ট লিমিটেড অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, পোশাক পণ্য রপ্তানির প্রায় ১৯ শতাংশ যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে যাচ্ছে। এরপর ইউরোপের বাজারে যাচ্ছে ৪৮ শতাংশ। যুক্তরাজ্যের বাজারে ১২ শতাংশ এবং কানাডায় ১৮ শতাংশের পোশাক পণ্য রপ্তানি হচ্ছে।
অপ্রচলিত বা নতুন বাজারে ভালো করছি। এটা আমাদের জন্য পজিটিভ বিষয়। বিজিএমইএ সব সময় রপ্তানি বাড়াতে সজাগ থাকছে। এর ফলে রপ্তানি বাড়ছে উল্লেখ করে মহিউদ্দিন বলেন, ইউরোপে বড় বাজার সব সময় ছিল, এখনো আছে। যুক্তরাষ্ট্রে কখনো কম, কখনো বেশি হচ্ছে। তবে কানাডা ও যুক্তরাজ্যে নিয়মিতভাবে বাড়ছে। খুব বেশি পরিবর্তন হচ্ছে না।
তিনি বলেন, ‘বিশ্ব অর্থনীতির পরিস্থিতি ভালো হলে রপ্তানি আরো বাড়বে। আশা করা যাচ্ছে, বাজার আরো ঘুরে দাঁড়াবে। কারণ বাংলাদেশে ভালো করার মতো অবকাঠামো আছে, দক্ষ জনবল রয়েছে। কিন্তু মার্কেটে পণ্যের ডিমান্ড থাকতে হবে। ডিমান্ড এখন আসলেই কম। যুদ্ধ ও সুদের অবস্থা উন্নতি হলে মার্কেট আরো ভালো হবে বলে প্রত্যাশা করছি।’