এখন যোগাযোগের সবচেয়ে জনপ্রিয় মাধ্যম ইন্টারনেট, মোবাইল ফোন। কিন্তু এর সূচনা হয়েছে তারবিহীন যোগাযোগ ব্যবস্থার ধারণার মাধ্যমে। ওয়্যারলেস বা তারহীন যোগাযোগ বলতে বোঝায় কোনো তার, ক্যাবল বা অন্য কোনো ইলেকট্রিক কনডাকটর ছাড়াই নির্দিষ্ট দূরত্বে তথ্যের আদান-প্রদান। আর এসবের শুরুটা হয়েছিল রেডিও ওয়েভের মাধ্যমে। রেডিও ওয়েভ হলো আলোকরশ্মি, ইলেকট্রোম্যাগনেটিক রশ্মি, অতিবেগুনি রশ্মি, ইনফ্রারেড রশ্মি এবং এক্স-রে রশ্মিরই আরেকটি রূপ। ১৮৮৮ সালে জার্মান পদার্থবিজ্ঞানী হেনরিক হার্টজ প্রথম রেডিও ওয়েভ আবিষ্কার করেন এবং প্রমাণ করেন, এই ওয়েভ আলোর গতিতে চলে। পরবর্তীতে ইতালিয়ান ইঞ্জিনিয়ার মার্কোনি হার্টজের গবেষণাকে তারহীন যোগাযোগব্যবস্থায় রূপান্তরিত করেন। ১৮৯৪ সালে হার্টজের গবেষণা সম্পর্কে পূর্ণ ধারণা লাভ করে মার্কোনি এই প্রযুক্তির কার্যকারিতা ও সম্ভাবনা উপলব্ধি করেন। ১৮৯৫ সালের শেষ দিকে মার্কোনি একটি ট্রান্সমিটার ও রিসিভার আবিষ্কার করেন, যা ২.৫ কিলোমিটার বা ১.৫ মাইল পর্যন্ত রেডিও সিগন্যাল পাঠাতে সক্ষম। এরপর ১৯০১ সালে তিনি এর একটি উন্নত সংস্করণ তৈরি করেন। এই রেডিও সিগন্যালের তত্ত্বের ওপর ভিত্তি করেই ১৯২৮ সালে টেলিভিশন রিসিভার আবিষ্কার করা হয়।
‘আগদাদ ব্যাটারি’ পৃথিবীর প্রাচীন ব্যাটারি!
১৮৬৬ সালে জর্জেস লেকল্যান্স একটি ব্যাটারি আবিষ্কার করেন। কিন্তু এর অনেক আগেই নাকি ব্যাটারি আবিস্কৃত হয়েছিল। সময়টা তখন ১৯৩৮ সাল; প্রতœতাত্ত্বিক বিশেষজ্ঞরা বাগদাদের খুজুত রাবু নামক স্থানে এক বিস্ময়কর পাত্রের সন্ধান পান। যা ছিল ৫ সেন্টিমিটার। পাত্রটি ছিল সিরামিক নির্মিত। ভেতরে মেলে একটি ধাতব নল এবং ভিন্ন ধাতুর তৈরি লৌহদণ্ডের অস্তিত্ব। বিশ্লেষকরা একে প্রাচীন ব্যাটারি আখ্যায়িত করেন। ইতিহাসে এটি ‘বাগদাদ ব্যাটারি’ নামে জায়গা করে নেয়। লোহার দণ্ডটি ছিল তামা দিয়ে আবৃত। ধারণানুযায়ী, তামার নলের ভিতর অম্লীয় দ্রবণ ব্যবহার করে ব্যাটারিটি সচল করা হতো। খ্রিষ্টপূর্ব ২৫০ অব্দের দিকে প্রাচীন পারস্যে এমন ব্যাটারি তৈরি করা হতো। যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞানী উইলার্ড গ্রেও ঝটপট বাগদাদ ব্যাটারির রেপি¬কা তৈরি করে ফেলেন। এতে ভিনেগার ঢেলে সফলতা পান। তখন ব্যাটারিটি সচল হয়ে প্রায় ১.৫ থেকে ২.০ ভোল্ট বিদ্যুৎ উৎপন্ন করতে সক্ষম হয়। ১৯৩০ সালে উইলহেম কনিগ একটি পেপারে উল্লেখ করেন, প্রাচীন পারস্যে বাগদাদ ব্যাটারিকে হয়তো গ্যালভানিক কোষ হিসেবে ব্যবহার করে ইলেকট্রোপে¬টিং করা হতো। কিন্তু এই হাইপোথিসিসকে নাকচ করে দেন বিজ্ঞানীরা। ফলে বাগদাদ ব্যাটারির মূল রহস্য থেকে যায় ধোঁয়াশার আড়ালে।