দেওয়ানবাগ ডেস্ক: ১৯৯৫ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ঢাকা কেন্দ্রীয় নগর অঞ্চলের সবুজ ও ফাঁকা জায়গা ৫২.৪৮ বর্গকিলোমিটার থেকে কমে ২৯.৮৫ বর্গকিলোমিটারে নেমে এসেছে। অর্থাৎ ২৯ বছরে ঢাকার সবুজ ও ফাঁকা জায়গা কমেছে প্রায় ৪৩ শতাংশ। এতে একদিকে প্রকৃতিতে পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর কার্বন শোষণ যেমন কমছে, অন্যদিকে বাড়ছে কার্বন নিঃসরণ। এ ছাড়া আবহাওয়া ও জলবায়ু বিষয়ক পরিবর্তন, তাপমাত্রা বাড়া ও বায়ুদূষণের মতো পরিবেশগত বিরূপ প্রভাবের ঝুঁকিতে নগরের মানুষ।
জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ চিত্র উঠে আসে। ‘বৃক্ষনিধন ও তার পরিবেশগত প্রভাব : আমাদের করণীয়’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে বাপার যুগ্ম সম্পাদক স্থপতি ইকবাল হাবিব এসব তথ্য তুলে ধরেন।
মূল প্রবন্ধে গ্লোবাল ফরেস্ট ওয়াচের বরাত দিয়ে ইকবাল হাবিব বলেন, ২০০১ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ২১ বছরে দেশ থেকে হারিয়ে গেছে দুই লাখ ১৪ হাজার হেক্টর গাছের আচ্ছাদন, যা ১০৮ মেট্রিক টন কার্বন ডাই-অক্সাইড নির্গমনের সমান।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের গবেষণা অনুযায়ী, ঢাকা মহানগরে ২০ শতাংশ সবুজ এলাকা থাকার প্রয়োজন হলেও বর্তমানে আছে সাড়ে ৮ শতাংশের কম। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিস), অস্ট্রেলিয়ার কার্টিন বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া বিভাগের যৌথ গবেষণার সূত্র উল্লেখ করে ইকবাল হাবিব বলেন, বৃক্ষনিধনের ফলে তাপমাত্রা বাড়ছে।
প্রবন্ধে বৃক্ষনিধনের ফলে বায়ুদূষণের চিত্র তুলে ধরে ইকবাল হাবিব জানান, গ্লোবাল এয়ার রিপোর্ট অনুযায়ী, বায়ুদূষণে গত বছর বাংলাদেশের অবস্থান ছিল পঞ্চম। বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশে বায়ুদূষণজনিত মৃত্যুও অনেক বেশি।
সংবাদ সম্মেলনে বেলার প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান প্রকৃতি সংরক্ষণবিষয়ক সংস্থাগুলোর আন্তর্জাতিক জোট আইইউসিএনের গবেষণা থেকে দেশের বিভিন্ন গাছের প্রজাতির বর্তমান বাস্তবতা তুলে ধরেন।
সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনাহীনভাবে সড়কদ্বীপে গাছ কাটা বন্ধ করা, কেটে ফেলা গাছ প্রতিস্থাপন করা, রোপণ করা গাছের সংরক্ষণ নিশ্চিত করা, বিদ্যমান আইনে বৃক্ষনিধন বন্ধে আরো কঠোর শাস্তির বিধান আরোপ করাসহ ১২ দাবি তুলে ধরে বাপা।