চামড়াশিল্প স্থানান্তরে ফল উল্টো

চামড়াশিল্প স্থানান্তরে ফল উল্টো

বাণিজ্য ডেস্ক: যে উদ্দেশ্যে ২০১৭ সালে রাজধানীর হাজারীবাগ থেকে সাভারে ট্যানারিশিল্প স্থাপন করা হয়েছিল, সেই উদ্দেশ্য সফল হয়নি। পরিবেশ দূষণ রোধ, কমপ্লায়েন্স কারখানা স্থাপন এবং শ্রমিকের জীবনমান উন্নয়নের জন্যই মূলত স্থানান্তর করা হয় এই শিল্প। তবে ছয় বছর হয়ে গেলেও সেই উদ্দেশ্য তো সফল হয়ইনি, উল্টো হাজারীবাগে থাকাকালে যেসব বিদেশি ক্রেতা বংলাদেশ থেকে চামড়া কিনতেন তাঁরাও এখন আর চামড়া নিচ্ছেন না।
বিশেষ করে কমপ্লায়েন্স কারখানা স্থাপন করতে না পারায় ইউরোপের ক্রেতারা বাংলাদেশের বাজার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। এতে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে ট্যানারিশিল্প। গত মঙ্গলবার রাজধানীর একটি হোটেলে ‘বাংলাদেশের ট্যানারি শিল্পে সুষ্ঠু শিল্প সম্পর্ক নিশ্চিতে অংশীজনের ভূমিকা শীর্ষক’ আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। ট্যানারি ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন ও সলিডারিটি সেন্টার যৌথভাবে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।
চামড়াশিল্পে শিল্প-গণতন্ত্র, পেশাগত নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য এবং শ্রম অধিকার নিশ্চিতকরণে আইনি ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব করেছেন শ্রম বিশেষজ্ঞরা। একই সঙ্গে ট্যানারি শ্রমিকদের অধিকার রক্ষার জন্য বিদ্যমান জাতীয় আইন এবং আন্তর্জাতিক মানদণ্ড বাস্তবায়নের আহবানও জানিয়েছেন তাঁরা।
স্বাগত বক্তব্যে সলিডারিটি সেন্টার বাংলাদেশের ডেপুটি কান্ট্রি প্রগ্রাম ডিরেক্টর মনিকা হার্টসেল বলেন, ‘যদি এই খাতে আন্তর্জাতিক শ্রমমান বাস্তবায়ন করা হয়, তাহলে কেবল শিল্পের বৃদ্ধিই নিশ্চিত হবে না, শ্রমিকদের পরিবার ও সম্প্রদায়ের জন্য একটি টেকসই ভবিষ্যৎও নিশ্চিত হবে। আগস্ট মাসে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় আগামী চার বছরের মধ্যে চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি বাড়ানোর পরিবেশ তৈরি করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আহবান জানায়। এ লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য ট্যানারিগুলোকে অবশ্যই পরিবেশগত ও সামাজিক মানের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ হতে হবে, যার মধ্যে রয়েছে পেশাগত সুরক্ষা ও স্বাস্থ্য এবং অন্যান্য শ্রম অধিকারসংক্রান্ত বিষয়।’
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব হাজেরা খাতুন বলেন, ‘সরকারের সংশ্লিষ্ট সব দপ্তরের উচিত যার যার অবস্থান থেকে শিল্পের উন্নয়নে নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করা। শ্রমিক অধিকার নিশ্চিতে ও পরিবেশগত মান উন্নয়নে ট্যানারি মালিকদেরও উচিত আইনের সব অনুশাসন মেনে চলা। শিল্পের উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে শ্রমিক অধিকার অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে।’
সলিডারিটি সেন্টার বাংলাদেশের কান্ট্রি প্রগ্রাম ডিরেক্টর এ কে এম নাসিম বলেন, ‘ট্যানারি শ্রমিকরা জীবন ধারণের জন্য ন্যূনতম মজুরির দাবিতে আন্দোলন করছেন না। এটিকে যদি আমরা শান্তিপূর্ণ অবস্থা বলে দাবি করি, তাহলে তা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক।
ন্যূনতম মজুরি বোর্ডে ট্যানারি শ্রমিক ইউনিয়নের কোনো প্রতিনিধি নেই। এটি আমাদের এই শিল্পে শ্রমিক এবং নিয়োগকারীদের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ব্যাপারে সন্দিহান করে তোলে।’
বাংলাদেশ লেবার রাইটস জার্নালিস্ট ফোরামের সভাপতি কাজী আবদুল হান্নান বলেন, ‘ভালো কর্মপরিবেশ এবং শ্রমিক অধিকার একে অপরের সঙ্গে জড়িত।

editor

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *