দেওয়ানবাগ ডেস্ক: বিল গেটস একাধারে ১৩ বছর ধরে পৃথিবীর সর্বোচ্চ ধনী ব্যক্তি। যুক্তরাষ্ট্রের ফোর্বস ম্যাগাজিনে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তির তালিকায় গত ২২ বছরে ১৭ বছর যার নাম শীর্ষে ছিল, তিনি বিল গেটস। টেকজায়ান্ট প্রতিষ্ঠান মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিতীয় মহান ব্যক্তি যিনি বিভিন্ন দাতব্য প্রতিষ্ঠানে মোট ২৮ বিলিয়ন ডলার দান করেন। এই বিল গেটস কিন্তু সোনার চামচ মুখে দিয়ে জন্মাননি। উত্তরাধিকারসূত্রেও বিলিয়নিয়ার নন। কঠোর পরিশ্রম আর শক্ত মনের জোরে ভর করে আজ সারা বিশ্বের ঘরে ঘরে ঢুকে গেছেন এই মানুষটি। কারণ কম্পিউটার ব্যবহার করেন না, বা কম্পিউটারের সাহায্য নেন না এমন মানুষ এখন খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। আসুন বিশ্বের এই শীর্ষ ধনি কীভাবে নিজেকে এমন অবস্থানে নিয়ে গেলেন জেনে নিই-
১. শক্ত মনের জোর থাকতে হবে: মাইক্রোসফট শুরুর সময় যেসব বন্ধুকে নিয়োগ দিয়েছিলেন, তাঁদের মাসিক বেতন কোথা থেকে আসবে তা নিয়েই বিচলিত থাকতে হতো তাঁকে। তবে মাইক্রোসফটের ভবিষ্যৎ নিয়ে তিনি খুবই উত্তেজিত ছিলেন। এমনকি তিনি যে বড় একটি ঝুঁকি নিয়েছেন তা-ও তাঁর মাথায় ছিল না। কিন্তু নিজের দক্ষতার ওপর পরিপূর্ণ আত্মবিশ্বাস নিয়েই কাজ শুরু করেন।
২. বাজে পরিস্থিতির শিকার হওয়া: পৃথিবীর অন্যতম সেরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হলেও প্রচলিত পড়াশোনায় বিল গেটসের আগ্রহ ছিল না। কম্পিউটার নিয়েই বেশির ভাগ সময় পড়ে থাকতেন। ফলে অকালে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ঝরে পড়লেন তিনি। বাবা-মায়ের সঙ্গে কথা বললেন। জানালেন, নিজেই কিছু করতে চান। উচ্চমধ্যবিত্ত পরিবার তাঁর আবদার মেনেও নিল। অর্থাৎ বিল গেটস মনে করেন, জীবনে বড় ধাক্কা খাওয়া বা বাজে পরিস্থিতির শিকার হওয়াও সাফল্যের অন্যতম মূলমন্ত্র।
৩. কঠোর পরিশ্রম: সাপ্তাহিক ছুটির দিনও কঠোর পরিশ্রম করেছেন। বছরে মাত্র দুই সপ্তাহ বিশ্রাম নিতেন তিনি। আর সেই দুই সপ্তাহ ব্যয় করতেন বই পড়া ও ব্যবসার ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তার কাজে।
৪. ভবিষ্যৎ তৈরি করুন: ভবিষ্যতের চাহিদার কথা মাথায় রাখুন। প্রতিষ্ঠানকে নিয়মিত আপডেট করুন। নতুন নতুন আইডিয়া সামনে নিয়ে আসুন। মাইক্রোসফট অপারেটিং সিস্টেম দিয়ে বিল গেটস তখনকার বড় বড় প্রতিষ্ঠানের প্রযুক্তিগত চাহিদা মিটিয়ে ছিলেন। মাইক্রোসফট ওয়ার্ড, মাইক্রোসফট এক্সেলের মতো শক্তিশালী অফিস অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যার ছিল বাজারে অপ্রতিদন্দ্বী।
৫. নিজের কাজ উপভোগ করুন: আপনি যে কাজটি করছেন তা আপনাকে উপভোগ করতে হবে। বিল গেটসের মতে, স্মার্ট মানুষের সঙ্গে কাজ করা, সাফল্য নিয়ে চিন্তা করা, নতুন সমস্যা নিয়ে কাজ করা খুবই উপভোগ্য ব্যাপার। কাজ ভালোবাসতে না পারলে সফল হওয়া অসম্ভব।
৬. কার্ড খেলুন: বিল গেটসের প্রিয় খেলা কার্ড। তাঁর মতে, ব্রিজ খেলার বেশকিছু ভালো দিক রয়েছে। যে ব্যক্তি ব্রিজে ভালো সে অন্য অনেক কিছুতেও ভালো।
৭. অন্যের কাছে পরামর্শ চান: বিল গেটস এক সাক্ষাৎকারে বলেন, হতে পারে আপনার কাছে কিছু আইডিয়া আছে যা আরেকজনের কাছে নেই। আবার আরেকজনের কাছে যে আইডিয়াটা আছে তা হয়তো আপনার কাছে নেই। তাই কাছের লোকদের সঙ্গে আলাপ করা ও পরামর্শ চাওয়া বুদ্ধিমান ব্যক্তিত্বের পরিচায়ক।
৮. ভালো মানুষ নিয়োগ দিন: এমন ব্যক্তিদেরই আপনার ব্যবসায় সংযুক্ত কর“ন, যাদের পরিপূর্ণভাবে বিশ্বাস করতে পারেন। পল অ্যালেনের সঙ্গে বিল গেটসের পার্টনারশিপে যাওয়া বা বন্ধুদের নিয়োগ দেওয়ার পেছনে তাঁদের ওপর বিল গেটসের আ¯’াই সবচেয়ে বেশি কাজ করেছে।
৯. গড়িমসি করবেন না: বিল গেটস বলেন, ‘আমি যখন কলেজে ছিলাম, পরীক্ষার প্রস্তুতি বা ক্লাস ধরার ক্ষেত্রে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত অপেক্ষা করতাম। কিš‘ যখন ব্যবসায় নামলাম, সম্পূর্ণ পাল্টে গেলাম।’ তাই কোনো কাজেই আজ না কাল, কাল না পরশু এমন করা যাবে না।