অর্থনীতি রিপোর্ট: জনশক্তি রপ্তানির সঙ্গে দেশে রেমিট্যান্স প্রবাহ তাল মিলিয়ে বাড়েনি। ২০২২-২৩ অর্থবছরে রেকর্ড ১১ লাখ ৩৭ হাজার জনশক্তি বিদেশে গিয়েছে। জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর তথ্য অনুসারে এই সংখ্যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও ৪০ শতাংশ বেশি এবং আগের বছরের তুলনায় ১৫ শতাংশ বেশি। তবে জনশক্তি রপ্তানিতে এই মাইলফলক অর্জন সত্ত্বেও দেশে রেমিট্যান্স প্রবাহ এরসঙ্গে তাল মিলিয়ে বাড়েনি। এই সময়ে রেমিট্যান্সের পরিমাণ মাত্র ২.৭৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ২১.৬১ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রণোদনাসহ ডলারের যে দাম ব্যাংকিং চ্যানেলে পাওয়া যাচ্ছে, হুন্ডিতে তার চেয়ে বেশি দর দিচ্ছে। তাছাড়া জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় আগের চেয়ে কম অর্থ প্রেরণ করছেন প্রবাসীরা। তবে কারণ যেটিই হোক, পরিস্থিতি এখন উদ্বেগজনক। কারণ দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ হ্রাস পাওয়ার পাশাপাশি গত ১৬ মাস ধরে টাকার মানও কমছে। বর্তমানে প্রতি ডলারের জন্য ১০৯.৫ টাকা পর্যন্ত দেওয়ার অনুমতি রয়েছে ব্যাংকগুলোর, যেখানে হুন্ডি অপারেটররা ডলারপ্রতি ১১৫ থেকে ১১৬ টাকা করে প্রদান করছেন। এর ফলে অনানুষ্ঠানিক হুন্ডির মাধ্যমেই টাকা পাঠানোর দিকে বেশি ঝুঁকছেন প্রবাসীরা।
২০২০ সালে কোভিড-১৯ মহামারি শুরু হলে লকডাউন ও বিধিনিষেধের কারণে অভিবাসন থমকে গিয়েছিল একেবারেই। এরপর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে থাকলে ২০২১ সালের আগস্ট থেকে আবারও ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে শ্রম অভিবাসন। এরপর থেকে বাংলাদেশ থেকে বিদেশে কর্মী পাঠানোর প্রবণতা ঊর্ধ্বমুখী অবস্থায় রয়েছে। জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো অনুসারে, কোভিড বিধিনিষেধ কার্যকর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে, বৈদেশিক কর্মসংস্থান ২০২১ অর্থবছরে ২.৮০ লাখে নেমে আসে। এরপর মহামারিজনিত লকডাউনের ধাক্কা কাটিয়ে ২০২২ সালে বাংলাদেশ থেকে ৯.৮৮ লাখ কর্মী বিদেশে যান। দীর্ঘ তিন বছর পর বাংলাদেশি শ্রমিকদের জন্য তাদের শ্রমবাজার খুলে দেওয়ার পর গত বছরের আগস্ট থেকে প্রায় ২.২৮ লাখ শ্রমিক মালয়েশিয়ায় গিয়েছেন।
যদিও মধ্যপ্রাচ্যের সৌদি আরবই বাংলাদেশি অভিবাসী কর্মীদের জন্য সবচেয়ে বড় গন্তব্য দেশ হিসেবে পরিচিত; গত অর্থবছরে ৪.৫২ লাখ বাংলাদেশি কর্মী সৌদি আরব গিয়েছেন। আর এরপরেই রয়েছে মালয়েশিয়া, ওমান, সংযুক্ত আরব আমিরাত, সিঙ্গাপুর এবং কুয়েতের অবস্থান।